ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শিল্পীর চিত্রপটে শোকগাথা | জাহিদ মুস্তাফা

শ্রদ্ধাঞ্জলি / জাতীয় শোক দিবস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৫
শিল্পীর চিত্রপটে শোকগাথা | জাহিদ মুস্তাফা ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বঙ্গবন্ধুকে আমরা হারিয়েছি চল্লিশ বছর আগে। বাঙালির দুর্ভাগ্য—এই মহানায়কের নির্মম ও শোকাবহ অকাল প্রয়াণ ঘটেছে কতিপয় কুলাঙ্গারের হাতে! তবে বঙ্গবন্ধু তাঁর বুক নিংড়ানো রক্তনদী থেকে মাথা উঁচু করে উঠে দাঁড়িয়েছেন।

বাঙালির ধ্যানে-চৈতন্যে মিশে গেছেন। তাঁকে কে ভোলাতে পারে? কারো সাধ্য নেই আর।

জাতির পিতার ৪০তম শাহাদাৎ বার্ষিকীতে চারুশিল্পীদের নিয়ে বিশেষ একটি আয়োজন করেছিল আওয়ামী লীগ। রংতুলিতে শোকগাথা শিরোনামে দেশের প্রবীণ-নবীন শিল্পীদের ছবি আঁকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন তাঁরা। অভূতপূর্ব এ আয়োজনে গত ১২ আগস্ট ২০১৫ বুধবার দিনব্যাপি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভবনে ছবি এঁকেছেন শিল্পীরা। যে বাড়িটি ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বাঙালি, যাঁকে ঘিরে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা পল্লবিত হয়েছে, সেই মানুষটির স্মৃতিধন্য এ বাড়িতে তাঁকে নিয়ে ছবি এঁকে শ্রদ্ধা নিবেদনের এই শিল্পিত আয়োজনে এসেছিলেন শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, স্পেন প্রবাসী বরেণ্যশিল্পী মনিরুল ইসলাম, শিল্পী আবুল বারাক আলভী, শিল্পী শাকুর শাহ, প্যারিস-প্রবাসী  খ্যাতনামা শিল্পী শাহাবুদ্দীন আহমেদসহ গুণী শিল্পীরা।



দিনব্যাপি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ভবনে ছবি এঁকেছেন শিল্পীরা। যে বাড়িটি ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল বাঙালি, যাঁকে ঘিরে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষা পল্লবিত হয়েছে, সেই মানুষটির স্মৃতিধন্য এ বাড়িতে তাঁকে নিয়ে ছবি এঁকে শ্রদ্ধা নিবেদনের এই শিল্পিত আয়োজনে এসেছিলেন শিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার, শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী, স্পেন প্রবাসী বরেণ্যশিল্পী মনিরুল ইসলাম, শিল্পী আবুল বারাক আলভী, শিল্পী শাকুর শাহ, প্যারিস-প্রবাসী  খ্যাতনামা শিল্পী শাহাবুদ্দীন আহমেদসহ গুণী শিল্পীরা।



তারা কেউ এঁকেছেন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি, কেউ এঁকেছেন ভয়াল সেই রাতের ছবি। শোকাবহ সেই সময়টি যেন মূর্ত হয়ে উঠছিল বরেণ্য শিল্পীদের চিত্রপটে। এই শিল্পীদলে আরো ছিলেন—রেজাউল করিম, আবদুল মান্নান, বীরেন সোম, ফরিদা জামান, রণজিৎ দাস, জামাল আহমেদ, মো ইউনুস, শামসুদ্দোহা, রেজাউন নবী, শেখ আফজাল, আতিয়া ইসলাম এ্যানি, মোঃ মনিরুজ্জামান,  কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, খালিদ মাহমুদ মিঠু, অশোক কর্মকার, ১৫ আগস্টের শহীদ কর্নেল জামিলের কন্যা আফরোজা জামিল কংকা, সরকার হেলালউদ্দিন, সঞ্জীব দাস অপু, তরিকত ইসলাম, আজমির হোসেন, অনুকূলচন্দ্র মজুমদার, নাজির খান খোকন, বিপাশা হায়াত, আবদুস সাত্তার তৌফিক, তরুণশিল্পী দম্পতি জাহিদ-উর্মি, শিল্পী কামালুদ্দিনসহ নবীন শিল্পীরা। আমি নিজেও এঁকেছি এ মাটির সন্তান বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে।

সমরজিৎ রায় নিবিষ্ট হয়ে আঁকছিলেন সেই রাতের নির্মমতার প্রতীকী ছবি। এ বিশেষ আয়োজন নিয়ে তাঁর মূল্যায়ন—“আগে কখনো এত বিপুলসংখ্যক শিল্পীকে একসঙ্গে এ ধরনের আয়োজনে দেখা যায়নি। উদ্যোক্তারা যাঁদেরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তাঁরা প্রায় সবাই এখানে এসেছেন বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে প্রাণের টানে। ” শিল্পী আলভীর উপলব্ধি—“১৫ আগস্ট এমন একটি দিন, যেদিন সব বাঙালিকে নাড়া দিয়ে যায়। শিল্পীরা মনের তাগিদেই এখানে এসেছেন। আমরাও ব্যথিত চিত্তে স্মরণ করলাম ১৫ আগস্টকে। ” স্পেনপ্রবাসী শিল্পী মনিরুল ইসলাম বলছিলেন—“বঙ্গবন্ধু অনেক বড় মাপের মানুষ ছিলেন। শিল্পীরা রঙতুলিতে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মকে তুলে ধরছেন। ” তিনি এঁকেছেন সে রাতের প্রতীক নিয়ে।

শিল্পী রেজাউল করিম তাঁর স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে রঙ ঢেলে এঁকেছেন নিজরক্তে ডুবে যাওয়া বঙ্গবন্ধুর লুটিয়ে যাওয়া ছবি। বাংলার নদীজল ঘেরা সবুজের আবহে জাতির পিতার অবয়ব তুলে ধরেছেন অশোক কর্মকার। আর জাতীয় পতাকার প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর হাত নেড়ে জনতার অভিবাদনের প্রতিক্রিয়া জানানোর ছবি এঁকেছেন আবদুল মান্নান। নন্দিত বঙ্গবন্ধু প্রতিকৃতি এঁকেছেন—রণজিৎ দাস, শামসুদ্দোহা ও শেখ আফজাল। উদ্যোক্তারা জানালেন—“এই চিত্রগুলো নিয়ে আগামীতে বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। ”

জাতির পিতার প্রতি চারুশিল্পীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের এই প্রচেষ্টার স্বতঃস্ফূর্ততা এই সত্যটিই মনে করিয়ে দিল বঙ্গবন্ধু আর বাংলাদেশ একসূত্রে গাঁথা।

লেখক : চিত্রশিল্পী



বাংলাদেশ সময়: ১২৫০ ঘণ্টা, আগস্ট ১৫, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।