ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৩ মে ২০২৪, ১৪ জিলকদ ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

জোড়া কবিতা | অনামিকা তাবাস্‌সুম

কবিতা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫
জোড়া কবিতা | অনামিকা তাবাস্‌সুম

অহমিকার সাপ

ভুলের মগ্নতা ভেঙে উড়ে যায় পাখি, শামুকের মগজে রক্তকমল এক রাত আসে, সেও ভুলে যায় রোদ্দুর রঙ। আমি ঝরে পড়ে যাওয়া এক গাছের ডাল হয়ে কোলাহল থেকে দূরেই থাকি।

ভুলে যাই মাটির বালকেরা নদীতীরে একদা গাইত, কামিনী ফুলের ঘ্রাণের মতো, ভাটিয়ালী। তোমার শ্যামল চোখে এখন অচেনা ঝড়। আমিও ভুলে যাচ্ছি, তোমার বৃষ্টি জমানো দু’হাত।
গল্পের ভিতরে ঢুকে গেছে এখন, অহমিকার সাপ!


ঝুমকোজবা

এ সোডিয়াম নগর জানে না
শুধু যমুনার বরফচাপা ঢেউগুলো জানে
সন্ধ্যার অন্ধকারে ঝিমিয়ে পড়া উদ্ভিদগুলো জানে, কালো সারসগুলো জানে, অতখানি জঙ্গলের পথ পেরিয়ে কেন এলাম, এই মরা শামুক ঝিনুক বিছানো পথে।

সেকি শুধু সিলিং ফ্যানের বাতাসে বেণীর গোপন ভাঁজ খুলব বলে? মিথ্যে ভিড়ের পেছনে হাঁটব বলে? পানকৌড়ির ছানার মতো মুখস্থ ঠিকানায় মুখ লুকাব বলে? বিস্বাদ রাতের লোনা শরীর ছেনে, শ্রাবণ রজনীতে শহরতলীর একটি চাঁদ, দেখব বলে?

টেলিফোন বেজে ওঠে। বলে, উদ্বাস্তু হতে! ছন্নছাড়া মেঘ বলে, কাঙালের মতো তুমিও পুষে রেখেছো, প্রান্তরের ছায়া, পাললিক মাটির ঘ্রাণ, ধোঁয়াওড়া মাঠ আর জারুল গাছের ছায়ায় ঘুমিয়ে পড়া
ফাল্গুনের বিকেল?

এখনো গভীর অন্ধকারে রেখেছো, মুখ গুঁজে?

প্রতিটি জানালায় দ্যাখো, ঝুমকোজবা ফুল হয়ে দুলছে, কুয়াশা কুয়াশা!!

আমি প্রবাহিত মানুষের নষ্ট পঁচন হতে চাই না। আমাকে প্রাচীন ডুবোপাহাড়ের বুকে বসবাস করা নীল প্রজাপতি করে দাও
বিপর্যের গোধূলিকাল ভেঙে, আমাকে হলুদ পাতার গাছগাছালি করে দাও।
সিঁড়িতে মেঝেতে, শেকড়বিহীন ঘাসফুল করে রেখো না। তারচে’ আমাকে করে দাও
রাশি রাশি দোপাটি ফুল।



বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।