ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

মিডনাইট ইন প্যারিস | জনি হক

ভ্রমণ ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫
মিডনাইট ইন প্যারিস | জনি হক ছবি: লেখক

ই শহরে নাকি প্রতিদিনই মানুষ প্রেমে পড়ে! প্রতিদিনই নাকি শহরটা নতুনভাবে ধরা দেয় বাসিন্দাদের কাছে। মনে হতে পারে পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্য কথাগুলো বলা হচ্ছে।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, যতই ঘুরে দেখবেন, ততই সত্যি মনে হতে থাকবে কথাগুলো। প্যারিস সেই প্রেমের শহর। কবিতার শহর। ছবির শহর। শিল্পের শহর। স্বপ্নের শহর। তিন দিনের ভ্রাম্যমাণ জীবনযাপনে প্রতিদিনই প্যারিস নতুনভাবে ধরা দিয়েছে আমার কাছে!

ইউরোপের দর্শনীয় শহরগুলোর মধ্যে কেন প্যারিসকে অন্যতম বলা হয়, তা জানা হলো ঘুরে ঘুরে। কান চলচ্চিত্র উৎসব কাভার করতে প্যারিসে যাওয়া। ট্যুরের প্রতিদিনকার খবর-অভিজ্ঞতা বাংলানিউজে ‘কান-কথা’ নামে সরবরাহ করার সময়সীমা ছিল ১৩ থেকে ২৪ মে। উৎসব শেষের পরদিন ট্রেনে চড়ে একটানে প্যারিস! হাতে একদিন। আজই (২৫ মে) প্যারিসকে যতটা পারা যায়, ঘুরে ঘুরে দেখে নিতে হবে। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ছবির দেশে, কবিতার দেশে’ এসে ঘোরাঘুরির সুযোগ হাতছাড়া করে কে? আমি অন্তত নই!



আইফেল টাওয়ারের আশপাশে দারুণ ঠাণ্ডা হাওয়া। কারণ সামনেই প্যারিসের বুক চিরে বয়ে চলা সেন নদী। কিছুদূর গেলেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি। টাওয়ারের কোণাকুণি পথ দিয়ে হেঁটে গেলে পৌঁছে যাওয়া যায় পন্ট ডি আলমা সড়কে। এখানেই ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট দুর্ঘটনায় নিহত হন ব্রিটেনের প্রিন্সেস ডায়ানা। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওই স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে মশাল আকৃতির স্থাপনা। প্যারিসের পথে পথে আশপাশে তাকালে কোনো না কোনো স্থাপত্য চোখে পড়বেই



বিখ্যাত কবি-শিল্পীদের এই অমরাবতী-দেশভ্রমণের অভিজ্ঞতা লেখার পরামর্শ দিয়ে রেখেছিলেন এডিটর-ইন-চিফ আলমগীর হোসেন ভাই। হাজার হাজার মাইল দূর থেকে মুঠোফোনে আরেকবার ঘুরে বেড়ানোর তাড়নাটাকে উসকে দিলেন তিনিই। তাই কান থেকে প্যারিসের নয়শ’ কিলোমিটার পথ পারি দেবার ক্লান্তি সত্ত্বেও হোটেলে ফেরার ভাবনা মাথায় এলো না।

গার দু লিয়ন স্টেশনে আগে থেকেই অপেক্ষায় আছেন রনি। পুরো নাম ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি। প্যারিসে পড়াশোনা করেন। থাকেন আইফেল টাওয়ারের পাশে। বাড়ি ফেনী। দেখতে লিকলিকে। কিন্তু বুদ্ধি আর জানাশোনায় ফরাসিদের চেয়েও হয়ত এগিয়ে! ১০ মে ফ্রান্সের রাজধানীতে পা রেখেই সেটা বুঝেছিলাম। ওইদিনের গল্পটা পরে। আগে শেষ দিনের গল্পটা হোক।



বিশ্বের অন্যতম ব্যস্ত নগরীগুলোর একটি হলেও সুসংগঠিত পাতাল রেলসেবা থাকায় প্যারিসের রাস্তায় কোনো যানজট নেই। সাশ্রয়ী হওয়ায় রেলপথকেই বেছে নিলাম এদিক-সেদিক যাওয়ার জন্য। এখানে রাস্তাঘাট চেনা জানা না থাকলেও হারানোর উপায় নেই! প্যারিসের রেল কিংবা বাস, সবখানেই আছে প্রয়োজনীয় ম্যাপ। আক্ষরিক অর্থেই প্যারিস ছবির মতো সাজানো-গোছানো একটি শহর।

শহরটি উত্তর ফ্রান্সে ইল-দ্য-ফ্রঁস অঞ্চলের প্রাণকেন্দ্রে সেন নদীর তীরে অবস্থিত। নদীতে নৌকায় ঘুরে বেড়াতে ভোলেন না পর্যটকরা। দুই হাজারেরও বেশি বছরের ঐতিহ্যবাহী এই নগরী বিশ্বের অন্যতম বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। রাজনীতি, শিক্ষা, বিনোদন, গণমাধ্যম, ফ্যাশন, বিজ্ঞান ও শিল্পকলা—সবদিক থেকেই প্যারিসের গুরুত্ব ও প্রভাব অনন্যসাধারণ। এজন্য বিশ্বের অন্যতম আধুনিক নগরীও বলা হয় প্যারিসকে।

সত্যি বলতে, প্যারিসের সৌন্দর্যের কোনো জুড়ি নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন, শিল্পীর অঙ্কনে উদ্ভাসিত এবং পর্যাপ্ত আলোয় আলোকিত ব্যস্ত শহরটিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য দর্শনীয় জায়গার অভাব নেই। আইফেল টাওয়ার, প্যারিস গেট, প্রেসিডেন্টের বাসভবন এলিজি প্যালেস, এনভারস এ মোমার্থ, পার্লামেন্ট হাউস, লুভর জাদুঘর, নটরডেম গির্জা, কনকর্ড টাওয়ার, গিমে জাদুঘর, নেপালিয়ানস টুম, নোত্র্‌ দাম গির্জা, শঁজেলিজে সড়ক, আর্ক দ্য ত্রিয়োম্‌ফ, বাজিলিক দ্যু সক্রে ক্যর, লেজাভালিদ্‌, পন্তেওঁ, গ্রঁদ আর্শ, পালে গার্নিয়ে, ম্যুজে দর্সে, ম্যুজে নাসিওনাল দার মোদের্ন—কী নেই প্যারিসে! ফলে বিশ্বের সর্বোচ্চসংখ্যক পর্যটকের গন্তব্যস্থল প্যারিস। প্রতি বছর এখানে প্রায় তিন কোটি বিদেশি পর্যটক আসেন। একদিনে কতটা ঘুরে দেখা যাবে বোঝা যাচ্ছিল না। আর, অতো ভেবে লাভ কী! এলাহী ভরসা নিয়ে শুরু করলাম যাত্রা।



ইল্‌-দ্য-ফ্রঁস্‌ তথা প্যারিস অঞ্চল ফ্রান্সের অর্থনীতি সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। প্যারিসের লা দেফঁস ইউরোপের বৃহত্তম পরিকল্পিত বাণিজ্যিক এলাকা। এখানেই ফ্রান্সের প্রধান প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রায় অর্ধেক সংখ্যকের সদরদপ্তর। বিশ্বের বৃহত্তম একশ’ কোম্পানির ১৫টির সদরদপ্তরও এই প্যারিসেই। এছাড়া প্যারিসে বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সদরদপ্তর রয়েছে।

এরমধ্যে—জাতিসংঘের অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে অন্যতম ইউনেস্কো, ওইসিডি, ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। এই শহরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী থেকে শুরু করে সবার ভদ্রতা চোখে পড়ার মতো। প্যারিসের প্রতিটি মোড়—হোটেল, রেস্তোরাঁ, বার ও নাইটক্লাবে ভরপুর। দিনভর ব্যস্ততার কারণে বাইরেই খেয়ে থাকেন ফরাসিরা। সাপ্তাহিক ছুটির দিনের (রোববার) আগের রাতে বাড়িতে বাড়িতে ধুমধাম পার্টি হয়।

বিকেল গড়াতে গেলাম চ্যাম্প ডি মার্সে। এখানেই দাঁড়িয়ে আছে পর্যটকদের প্রিয় স্থাপনা প্যারিসের অন্যতম প্রধান শোভা আইফেল টাওয়ার। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি পর্যটকের দর্শন পাওয়া অসাধারণ এক স্থাপত্যশিল্প। হলিউডের বিভিন্ন ছবিতে দেখানো সর্বাধিকবার ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনাও এটি! প্যারিসের অন্য সব স্থাপনার উচ্চতা ভেদ করে শতবর্ষ ধরে দাঁড়িয়ে আছে আইফেল টাওয়ার। এর উচ্চতা অ্যান্টেনাসহ ১০৮১ ফুট ৭ ইঞ্চি। তৈরি করতে লেগেছিল প্রায় দুই বছর দুই মাস পাঁচ দিন। ১৮৮৭ সালের ২৮ জানুয়ারিতে নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে চলেছে ১৮৮৯-এর ৩১ মার্চ পর্যন্ত। কমপক্ষে তিনশ’ শ্রমিকের অবিরাম শ্রমের ফসল এই আইফেল টাওয়ার।

১৮৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের শতবর্ষপূর্তি উপলক্ষে উন্মুক্ত হয় আইফেল টাওয়ার। আগের একশ’ বছরে বিজ্ঞান ও স্থাপত্যকলায় ফ্রান্স কতটা এগিয়েছে—তার স্মারকও এই স্থাপনা। আইফেল টাওয়ারের প্রধান স্থপতি স্টিভেন সাভেস্টার। এর ঠিকাদার ছিলেন অ্যালেক্সান্ডার গুস্তাভে আইফেল। ১৮ হাজার ৩৮টি বিভিন্ন আকৃতির ছোট-বড় লোহা বা স্টিলের মেটাল পার্টস বা যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি করা হয় এই টাওয়ার।



আইফেল টাওয়ার মোট চারটি বিশাল লোহার পিলারের ওপর দাঁড়ানো। এর ওজন ১০ হাজার একশ’ মেট্রিক টন। দূর থেকে আইফেল টাওয়ারকে সরু দেখালেও প্রকৃতপক্ষে তা অনেক চওড়া আর বিশাল। প্রতি সাত বছর পরপর টাওয়ারটিতে নতুনভাবে রঙ করা হয়। শুনতে সহজ মনে হলেও, পুরো আইফেল টাওয়ারে নতুন প্রলেপ দিতে কমপক্ষে ৬০ টন রঙ এবং প্রায় ১৮ মাস সময় লাগে!

টাওয়ারে মোট সাতটি লিফট আছে। যে কেউ চাইলে লিফট ব্যবহার করতে বা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে পারে। তবে এ কার্য সমাধায় পর্যটকদের প্রত্যেককেই ১৭ ইউরো করে গুনতে হয়। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় দেড় হাজার টাকা। আইফেল টাওয়ারে উঠলেই দশদিকব্যাপী পুরো প্যারিস শহরকে দেখা যায়। একই সঙ্গে প্রায় পাঁচ-ছয় হাজার দর্শনার্থী আইফেল টাওয়ারে উঠতে পারেন। শীঘ্রই যারা আইফেল টাওয়ার দেখতে যাবেন—এখানে নিয়মিত আসেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের জন্য কিছু পরামর্শ পাওয়া গেল। পরিষ্কার আবহাওয়ায় এর সর্বোচ্চ উচ্চতা থেকে আশপাশের প্রায় ৪২ মাইল এলাকা দেখা যায়। ঝড়ো হাওয়ায় এটি সর্বোচ্চ ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত কাঁপে। রনি জানালেন এই ভয়াবহ তথ্য! রাতে আইফেল টাওয়ারে কয়েক লাখ রঙিন বাতি কিছুক্ষণ পরপর জ্বালানো হয়। এ দৃশ্য অপূর্ব।

আইফেল টাওয়ারের আশপাশে দারুণ ঠাণ্ডা হাওয়া। কারণ সামনেই প্যারিসের বুক চিরে বয়ে চলা সেন নদী। কিছুদূর গেলেই স্ট্যাচু অব লিবার্টি। টাওয়ারের কোণাকুণি পথ দিয়ে হেঁটে গেলে পৌঁছে যাওয়া যায় পন্ট ডি আলমা সড়কে। এখানেই ১৯৯৭ সালের ৩১ আগস্ট দুর্ঘটনায় নিহত হন ব্রিটেনের প্রিন্সেস ডায়ানা। তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওই স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে মশাল আকৃতির স্থাপনা। প্যারিসের পথে পথে আশপাশে তাকালে কোনো না কোনো স্থাপত্য চোখে পড়বেই।

ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট দ্য গ্যলের ভাস্কর্য, ঐতিহাসিক প্যালেস দ্য কনকর্ড, প্যারিসের সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাভিনিউ দ্য শঁজোলজির মতো আছে আরো অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনা।

প্যারিসে আইফেল টাওয়ারের পর সবচেয়ে আকর্ষণীয় জায়গা হলো লুভর মিউজিয়াম। এখানকার কিছু শিল্পকর্ম বিশেষ করে ভাস্কর্য দেখলে চোখ ফেরানো দায়! কিছু ভাস্কর্য দেখলে মানুষ ভেবে ভুল হতে পারে! এই জায়গাটা এত সুবিশাল যে, পুরোটা ঘুরে দেখতে পাক্কা দুই দিন লেগে যাবে। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আঁকা বিখ্যাত চিত্রকর্ম ‘মোনালিসা’র মূল কপিটি এখানেই রাখা। ভ্যান গগের ‘স্টারি নাইটস’ চিত্রকর্মটিরও বিপুল দর্শনার্থী পাওয়া যায় এখানে। এছাড়া পাবলো পিকাসো, সালভাদর দালির মতো বিখ্যাত সব চিত্রশিল্পীর আঁকা চিত্রকর্মের মূল কপিগুলো দেখতে চাইলে লুভর মিউজিয়ামের বিকল্প নেই।



মিউজিয়াম থেকে বেরিয়ে গেলাম ফ্রান্সের ঐতিহাসিক সংসদ ভবনের সামনে। কিছুদূর যেতেই সামনে দিয়ে জোনাকির মতো মিটিমিটি আলো ছড়িয়ে ভেসে গেল প্রমোদতরী। ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়নের সমাধিও (সেনা জাদুঘর) ঘুরে দেখলাম। রাতে সারাশহরে ল্যাম্পপোস্টের আলোর দ্যুতি অন্যরকম এক সৌন্দর্য তৈরি করে।

হলিউডের বর্ষীয়াণ নির্মাতা উডি অ্যালেন প্যারিসের প্রতি ভালোবাসা থেকেই তার একটি ছবির নাম রাখেন ‘মিডনাইট ইন প্যারিস’। দিন কিংবা রাতে, প্যারিসের সর্বত্রই যেন সুগন্ধি ছড়ানো! কোথাও ধুলোবালি নেই। গ্রীষ্মকালে ভোর ছয়টা থেকে রাত ১০টা অবধি এখানে দিন। মেয়েরা পথেঘাটে সারারাত একা চলাফেরা করতে পারে। তাদের সঙ্গে কেউ টুঁ শব্দটিও করে না।

প্যারিসে আমার যা কিছু দেখা, শোনা—সবখানেই গাইড ছিলেন রনি। বাংলাদেশী নির্মাতা স্বপন আহমেদের সঙ্গে ১০ মে গার দু নরে অবস্থিত ক্যাফে রয়েল রেস্তোরাঁয় গেলে সেখানে রনির সঙ্গে পরিচয় হয়। রেস্তোরাঁটির মালিক রেজাও একজন বাংলাদেশী। রেস্তোরাঁটিকে প্যারিসের বাঙালিদের আখড়া বললেও ভুল হবে না। ঢাকার হোটেল রেস্টুরেন্টে যা যা পাওয়া যায়, এখানেও তার সবই আছে।

রনি ছাড়াও রাহুল নামের আরেক বাঙালির সঙ্গে পরিচয় হলো, আড্ডা দিলাম প্রবাসী গায়ক রানার সঙ্গে। প্যারিসে এখন প্রায় ৫০ হাজার বাংলাদেশী আছে। সবার কণ্ঠেই প্যারিসের চাকচিক্য, রূপ-প্রকৃতির কথা ফুটে উঠল। প্যারিস যেন পুরোটাই একটা ছবি। একটা ক্যানভাস। এই শহরের পরতে পরতে শৈল্পিক সব ব্যাপার-স্যাপার। মুঠোফোনের ক্যামেরায় প্যারিসের কিছু মনোরম সৌন্দর্যের ছবি টুকে রাখলাম।



গত ১৪ নভেম্বর প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার দৃশ্যগুলো গণমাধ্যমে দেখে মনটা বিমর্ষ হয়ে গেল। এত সাজানো-গোছানো, শান্ত নদীর মতো শহরটিতে এমন নারকীয় ব্যাপার ঘটবে, বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। ঘটনার পরদিন প্যারিসপ্রবাসী রনিকে ফোন করে জানলাম—বাতাক্লঁ কনসার্ট হল থেকে হাঁটা-দূরত্বে ছিলেন তিনি। প্রত্যক্ষদর্শীই বলা চলে তাকে। হামলার ঘটনায় অন্য অনেকের মতো রনিও জিম্মি হয়ে পড়েছিলেন। বললেন, চোখের সামনে দেখা হাউমাউ করে কেঁদে ওঠা রাতের প্যারিসের কথা।

প্যারিসের মতো ছবিতুল্য শহর নিয়ে এই লেখাটি রক্ত আর সহিংসতার প্রসঙ্গ তুলে শেষ করতে হবে—এ ছিল কল্পনাতীত। সুন্দরী মধ্যরাতে যে প্যারিসকে দেখে এসেছি, সেখানে এমন ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি আর না হোক। প্যারিস শিল্পের নগরী। শিল্পের নগরী হয়েই থাকুক। প্যারিসের জন্য বিশ্ববাসীর ভালোবাসা কখনোই কমবে না। লাভ ইউ প্যারিস!



বাংলাদেশ সময় : ১৪৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৭, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।