কাল রাতে আতঙ্ক নিয়ে ঘুমাতে গেছি। আজো যাবো।
এমনিতেই আমার ঘুম পাতলা। ছোটোখাটো অনিয়মেই ঘুম ভাঙ্গে। আর সেদিন পুরো দালানটাই দুলছিলো। আমি মেয়েটির ঘুমন্ত মুখের দিকে তাকাই। নিশ্চিন্ত প্রশান্তি। পরদিন ঠিকঠাক জেগে উঠবে তাই।
আমিও ততটাই নিশ্চিন্ত ছিলাম দু'মিনিট আগেও। এখন ভয়ার্ত বুকে ভাবছি, চারজন থেকে হয়তো কেউই থাকবো না কাল। সেও ভালো। কিন্তু যদি সংখ্যাটা হয় তিন কিংবা দুই!!
দ্রুত মেয়েকে টেনে তুলি। পাশের ঘরে ছেলে ততক্ষণে জেগে গেছে। কি আছে কি নেই, কিচ্ছু না ভেবে দ্রুত সিঁড়ি ভাঙ্গি। খোলা আকাশের নিচে চারজন মানুষ। কেউ কারো হাত ছাড়তে সাহস করিনা। যে চরম সত্যটি সামনে এসে দাঁড়ায়, পৃথিবীতে এরচে’ বেশি ভালোবাসার কেউ নেই। কিছু পরে ধীরে ধীরে সবাইকে মনে পড়ে। ফোন করে খবর নিই।
ফজরের আজান পড়ে। আমরা ঘরে ফিরি, প্রিয় ঘর। নতুন করে সব কিছুর জন্য মায়া লাগে। পেন্ডুলামওলা ঘড়ি, শাড়ির আলমারি, দেয়ালে টানানো ছবি-মায়া লাগে।
সকাল হতে এখনো বাকি। হয়ত ফেরা হবেনা ভেবে যে বিছানা ছেড়ে গিয়েছিলাম, আবার শুই। মেয়েটি আমাদের মাঝে এইচ হয়ে শোয়, সম্পর্কের সেতু।
মানুষ যখন দিগ্বিদিক খেই হারিয়ে ফেলে, প্রকৃতি তখন প্রবল ঝাঁকুনি দিয়ে মনে করিয়ে দেয়-তুমি কার, কে কাহার। এর প্রয়োজন আছে....
তাসলিমা আক্তার: ব্রিটিশ রেডক্রস সংস্থার মানবসম্পদ বিভাগে কর্মরত
বাংলাদেশ সময়: ২২০৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৬
জেডএম