ঢাকা: ‘এই সিঁড়ি নেমে গেছে বঙ্গোপসাগরে
সিঁড়ি ভেঙে রক্ত নেমে গেছে
বত্রিশ নম্বর থেকে
সবুজ শস্যের মাঠ বেয়ে
অমল রক্তের ধারা বয়ে গেছে বঙ্গোপসাগরে। ’
বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে লেখা এই কবিতা সহ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করা আরও অনেক অনেক কালজয়ী কবিতার স্রষ্টা কবি রফিক আজাদ গুরুতর অসুস্থ।
মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) কবিকে রাজধানীর ধানমন্ডির আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালটির নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
কবি রফিক আজাদ দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, কিডনি ও ফুসফুস সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগছেন বলে জানান কবি পরিবার ঘনিষ্ঠ লেখক ও প্রকাশক হুমায়ুন কবীর ঢালী।
রফিক আজাদ ১৯৪১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার গুণী গ্রামের এক অভিজাত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই ১৯৫২ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বাবামা’র কঠিন শাসন উপেক্ষা করে তিনি ভাষা শহীদদের স্মরণে খালি পায়ে মিছিল করেন।
চিরদিনই প্রতিবাদী এই কবি তার দ্রোহকে শুধু কবিতার লেখনীতে আবদ্ধ না রেখে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন জাতির চরম ক্রান্তিকালে, ১৯৭১ এ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনের সৈনিক হিসেবে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।
কর্মজীবনে রফিক আজাদ বাংলা একাডেমির মাসিক সাহিত্য পত্রিকা ‘উত্তরাধিকার’-এর সম্পাদক ছিলেন। ‘রোববার’ পত্রিকাতেও রফিক আজাদ নিজের নাম উহ্য রেখে সম্পাদনার কাজ করেছেন। এছাড়া টাঙ্গাইলের মওলানা মুহম্মদ আলী কলেজের বাংলা বিভাগে অধ্যাপনাও করেন তিনি।
রফিক আজাদের প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে, ‘অসম্ভবের পায়ে’, ‘সীমাবদ্ধ জলে সীমিত সবুজে’, ‘চুনিয়া আমার আর্কেডিয়া’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
রফিক আজাদ ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৩ সালে একুশে পদক পান। এছাড়া সাহিত্যে অবদানের জন্য হুমায়ুন কবির স্মৃতি (লেখক শিবির) পুরস্কারসহ আরও বেশ কয়েকটি পুরস্কার পান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৬
আরএইচ/আরআই