২.
কু-ঝিক ঝিক, কাশফুল,
থাকল জমা আমার ভুল।
ট্রেনে দুর্ঘটনা।
ক্যানিং যাচ্ছি। হালকা বৃষ্টি হয়েছে সকালবেলা।
গতকালের ঝড়ের পর দমকা হাওয়া। ধূসর, কালো মেঘ ঢেকে রেখেছে আকাশ আর সূর্যকে। বৃষ্টি হবে হবে ভাব।
দুর্ঘটনা নিয়ে লোকজনের চোখে-মুখে ভয়। আমি এসব কেয়ার করছি না।
শরীরটা খারাপ। গাড়িতে উঠলেই বমি হয়। অ্যাভোমিন গিলে লং জার্নিতে যাই সবসময়। আসার পথে খেয়াল ছিলো না ওষুধ খেতে। এদিকে, অ্যাভোমিন পাওয়া যায় কিনা কে জানে!
বমি করেছি। করার পর অবশ্য ফুরফুরে লাগছে। সিদ্ধ ডিম খাচ্ছি। এর আগে খাওয়া হয়েছে বরইয়ের ভর্তা। ট্রেনে এসব বিক্রি হয়। চলতি পথে খেতে মন্দ লাগে না।
বোন রুবি চোখ-মুখ শক্ত করে আছে যন্ত্রণায়। বাতের ব্যথা। অল্পবয়সে এই রোগ সে কোথা থেকে আমদানি করলো কে জানে!
‘ব্যথা ভাইয়া। ব্যথা। চকলেট খাবো। ’ রুবি কেঁদে কেঁদে আবদার করে আমার কাছে। ব্যথার সাথে চকলেটের কী সম্পর্ক বুঝলাম না। রুবির সব কথাই চকলেটে গিয়ে শেষ হয়!
‘গাধী, চুপ থাক। এইখানে চকলেট নাই। মাইর খাবি। ’ মেজাজ খারাপ করে বলি। খাওয়ার সময় বিরক্ত করলে চড় বসাতে ইচ্ছা করে।
‘ব্যথা তো। ’ বলে কাঁদতে শুরু করে রুবি।
‘চুপ। চুপ। চুপ। ক্যানিং পৌঁছে ক্যান্ডি। এর আগে না। ’ বড় মামা টেনশনে আছেন। রুবিকে ধমক দিয়েই সামনে কী অবস্থা জানতে লোকজনের সঙ্গে কথা বলা শুরু করেন। ট্রেনলাইনের দুর্ঘটনা নিয়ে খবরাখবর নেওয়ার চেষ্টা করে।
আমি রুবিকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্য দেখায় মন দেই। রুবি ঘ্যান ঘ্যান করে। আমি পাত্তা দেই না। চোখ বন্ধ করার মতোন কান বন্ধ রাখার উপায় থাকলে মন্দ হতো না। তাহলে এখন আর রুবির আলাপ শুনতে হতো না। কান বন্ধ রাখতাম।
জানালার বাইরে এখানে অন্য পৃথিবী এক! নদীর বেসামাল জল ঝাপটা মারে পাড়ে। কতোগুলো নৌকা ছুটছে। মহিষের দল সারিবেঁধে পার হচ্ছে নদী। বৃষ্টির পর ধোয়া গাছের পাতা বড় বেশি সবুজ। এই সবুজ আর গ্রামটাকে একটু একটু করে গিলে ফেলার চেষ্টা করছে শহর। সবুজের শহরে উঁকি দিচ্ছে একটা-আধটা ইট-সিমেন্টের বাড়ি। বাড়ি উঠছে। ইট-বালু-সুরকি স্তূপ করে রাখা। একটা ইটের ভাটাও চোখে পড়লো।
কচুরিপানায় ভর্তি একটা পুকুর আছে। প্যাকোর প্যাকোর করে কয়েকটা হাঁস নেমে পড়লো পুকুরে। সাঁতার কাটবে আরামে। গাছ, পাতা কেমন ধেয়ে আসছে নিজের দিকে। কু-ঝিক ঝিক, কু-ঝিক ঝিক, কু-ঝিক ঝিকে ঘুম চলে আসে আমার।
আজকাল সুন্দর কিছু দেখলেই আমার ইচ্ছে হয় মাকে দেখাতে। মায়ের তো আর অল্প কিছুদিন থাকা হবে পৃথিবীতে। সুন্দর কিছু দেখুক। ভালো করে দেখুক।
সুন্দর কোনোকিছুর দিকে একটানা তাকালে আমার ঝাপসা হয় চোখ। মাকে ধরে রাখতে ইচ্ছে হয়। ধরে রাখার ব্যাপারটা নিজের হাতে নেই। কী অসহায় আমরা। কী অসহায় মানুষ!
ট্রেনের ভেতর গেরুয়া পোশাক পরা এক সাধু মন্দিরের জন্য চাঁদা তুলতে এসেছেন। এসব লোক সব জায়গায় আছে। পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে যায়। মন্দ লাগে না।
পাশের যাত্রী থেকে জানলাম, মন্দিরের জন্য নিয়মিত টাকা ওঠায় এই লোক। কোথায় মন্দির জানা নেই। তিনি নিয়মিত যাওয়া-আসা করেন এই রুটে। সবসময় এই লোকের সঙ্গে দেখা হয়। মন্দিরের কাজ কতদূর, এটা নাকি জানতে চেয়েছিলেন একবার।
‘সামনের অমাবস্যায়। দু’টো ডাল-রুটি খেয়ে যাবেন সেদিন। আসবেন মশায়। ’ এই উত্তর ছিলো সাধুর। পাশের যাত্রীর কাছ থেকে এসব শুনেও লোকটাকে দশ রুপির একটা নোট দিলাম। নোটটা দিলাম দেখে পাশের যাত্রী মনে হয় মনোক্ষুণ্ন হলো।
চুপ হয়ে গেলো সে। একটা কথাও বললো না আর।
সাধু লোকটাকে আমার ভালো লেগেছে। কোনো এক গল্পের চরিত্র মনে হচ্ছে। তাই দান করেছি। দশ রুপি পাওয়ার পর তার মুখের কোনায় ফুটে ওঠা হাসিটা দেখাই দরকার ছিলো। সে হাসিটা দেখলাম। মন ভালো হয়ে গেলো। কে কী ভাবলো, মন খারাপ করলো কিনা, এতে কিছু যায় আসে না আমার।
রুবির বাতের ব্যথা কমে গেছে। আচমকাই। এখন সে হা হয়ে বাইরের দৃশ্য দেখছে। সুন্দর দৃশ্য।
রুবিকে চকলেট কিনে দেওয়া হয়েছিলো সকালে। বাদাম চকলেট। মুখে দিলেই বাদামের ঘ্রাণ।
সে চকলেট আরাম করে খেতে পারেনি রুবি। দু’টো চকলেটের একটা আসার পথে তাড়াহুড়োয় ফেলেছে কোথাও। আর একটা কথা বলতে বলতে মুখে দেওয়ার সময় হুট করে গলা দিয়ে নেমে গেছে। কোৎ করে গিলে ফেলতে হয়েছে তখন। আরাম করে খেতে পারেনি। এই শোক তাকে কাবু করেছে। তাই থেকে থেকে চকলেটের কথা মনে করে চিৎকার করেছে অনেকক্ষণ।
আপাতত সব শোক, যন্ত্রণা ভুলেছে মেয়েটা এটাই শান্তি। রুবির মুখ নিয়ে আমরা শঙ্কিত। সে চুপ থাকলেই বাঁচোয়া।
ক্যানিংয়ে যাচ্ছি অপুদার সঙ্গে দেখা করতে। অপূর্ব সরকার। বরিশালে আমাদের পাড়াতেই থাকে। একসঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম।
ভারতে পড়তে এসেছে এই ছেলে। ক্যানিংয়ে থাকে। এখানেরই কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে মনে হয়।
ভারতে পড়তে আসলেই আমরা তাকে মেধাবী ছাত্র মনে করি। দেশে থাকতে অপুদার পাশ করতেই ঝামেলা হয়ে যেতো। এখানে এসে নাকি ভালো ছাত্র হয়ে গেছে। রেজাল্ট ভালো। বাবার কাছে শুনেছি।
বাবা বলেন, ‘পা ধোয়া পানি খাও। দেখো কী জেদ ছেলের। একসময় ছাত্র খারাপ ছিলো আর এখন? হবে না। তোমাকে দিয়ে হবে না। ’
আমাকে নিয়ে বাবার অভিযোগের কমতি নেই। তিনি নামকরা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন। আমার সে সুযোগ হয়নি। ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার এসব কিছুই হতে পারিনি। একমাত্র ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন ছিলো অনেক। সে স্বপ্নে ছাই ঢেলে দিয়েছি।
আগে এসব নিয়ে কথা উঠলে আমার গা জ্বলতো। বাবার কথার পিঠে আমিও কথা বলতাম। এখন চুপ করে থাকি। চুপ করে থাকাই সব সমস্যার একমাত্র সমাধান।
ট্রেন লাইন তুলে ফেলেছে কারা যেনো। গুজব ছড়িয়েছে ট্রেন এ দুর্ঘটনা!
এদিকটায় রাজনৈতিক কোনো ঝামেলা চলছে। লোকজন ভয় করছিলো এটা নিয়েই। শোনা যাচ্ছিলো, ট্রেন থামিয়ে লুটপাটও হয়েছে। ঘটনা এতোটা সিরিয়াস নয়। তবে ঝামেলা কিছু হয়েছে। রাজনীতির সুযোগ নিয়ে উটকো লোকজন এটা ওটা সামান্য জিনিস ছিনিয়ে নিয়েছে।
ক্যানিং পৌঁছাতে দেরি হয় না। মফস্বল শহর। অল্প কিছু বাড়ি আর অল্প কিছু মানুষ।
বাবা একটা ঝামেলায় পড়েছেন। বিস্তারিত জানি না। বাবা আর মামা আলোচনা করেন। আমাকে গোনায় ধরেন না। যতোটুকু জানি তাতে বুঝলাম পুলিশি ঝামেলা। ডলার এনডোর্স করাতে গিয়ে কোনো একটা সমস্যা। ভিসা আর পাসপোর্ট নিয়েও কিছু হয়েছে মনে হয়।
অপুদার পরিচিত একজন উকিল আছে এখানে। সরূপ মুখার্জি। জাদরেল উকিল।
মুশকিল আসানের জন্য তিনিই একমাত্র ভরসা। অপুদার সঙ্গে বাবার আলাপ হয়েছে আগে। সরূপ মুখার্জি ক্যানিংয়ে থাকেন। তার বাড়িতে আজ নিয়ে যাওয়া হবে আমাদের। সেখানে ঝামেলা নিয়ে কথাবার্তা হবে। উকিল সাহেবের সম্মানী কেমন হবে সেটা নিয়েও কথা হবে।
স্টেশন থেকে অপুদার বাড়ি কাছেই। ঠিকানা খুঁজে পেতে কষ্ট হয় না।
এদিকে, এখনও বাড়িঘর ওঠেনি তেমন। বেশিরইভাগই খোলা জমি। কোনোটা দেয়াল দিয়ে ঘেরা। দেয়ালের পাশ দিয়ে দাড় করানো ছোট টিনের বোর্ড। এসব বোর্ডে লেখা, ‘এই জমির মালিক ক, খ, গ’ ইত্যাদি। একদম আমাদের দেশের মতোন!
অপুদার বাড়ির গেট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই কয়েকটা ছেলে ‘কুটুম গো কুটুম। ’ বলে চিৎকার শুরু করে। অবাক হই।
অবাকপনা কাটিয়ে দোতলা একটা বাড়ির নিচতলায় গিয়ে দরজায় নক করি।
নিচতলায় দু’টো ঘর নিয়ে থাকে অপু দা। গিয়ে দেখলাম, মাত্র ঘুম ভেঙেছে তার। দরজা খুলে আমাদের বাইরে দাড় করিয়ে রাখলো। তারপর অনেকক্ষণ পর বাবা আর মামাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ঘরের বাইরে এসে আমার সঙ্গে কথা শুরু করলো।
‘আছস ক্যামন তোরা?’ জড়ানো কথা। অপুদাকে দেখে মনে হলো, কোনো একটা সমস্যা হয়েছে। মাথা ঠিক নেই।
‘ভালো। পড়াশোনা করছি। ’ বাবা বলেছে পড়ুয়া ছেলে অপুদা। তাই পড়াশোনার ব্যাপারটা কথার শুরুতে জোর করেই বললাম।
‘ধুর। পড়া-ফড়া দিয়া কী করবি। এই সবে দম নাই। ছাড়ান দে। ’ কথাটা বলে অপুদা আমাদের ভেতরে ডাকে।
বাবার চোখে অবাকপনা। মামারও একই অবস্থা। রুবিকে দেখে মনে হলো, সে খুব মজা পাচ্ছে।
আমি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। বোকার মতোন সবাই ঘরের ভেতরে ঢুকলাম। দেখি ঘরের এককোনায় তোশক বিছানো। সিগারেটের ধোঁয়ায় বন্দি ঘর। বমি আসে। চোখে পড়লো এক কোনায় মদের বোতল। বাবার ভালো ছেলে, পড়ুয়া ছেলের অবস্থা দেখে আকাশ থেকে পড়লাম। দেশের বাইরে এসে এই অবস্থা!
বাবা মুখের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। কতো ভালো কথাই না আমাকে শুনিয়ে ঝাড়ি দিয়েছে। এখন এখান থেকে বের হয়ে লজ্জায় মুখ দেখানোই কষ্ট হয়ে যাবে।
আমি খুশি। বাবার শিক্ষা হলো। খুশিতে আটখানা হই। আমি বারো-ষোলখানা হয়ে আছি।
‘ঘরের অবস্থা ভালো না আঙ্কেল। তোশক ধোয়া না। তোশকে বমি আছে। বমি করছিলাম। শুকায় গেছে। মেঝেতে বসেন। ঘর মোছা আছে। একটু অ্যাডজাস্ট করেন। ’ বলে অপুদা।
‘না না। ঠিক আছে। ’ বলে বাবা। তার অবস্থা সঙ্গীন।
অপুদা বাথরুমে ঢোকে। আমরা বসে থাকি। শুনি, বাথরুমের ভেতর থেকে তার বেসুরো গলার হিন্দি গান। গোসল করছে মনে হয়। অতিথিদের বসিয়ে রেখে এসব কী? আজব!
‘বাবা, এইগুলা কী মদ?’ তোশকের পাশে থাকা মদের বোতল দেখিয়ে বাবাকে বলে রুবি। ধোঁয়া তার সহ্য হচ্ছে না। কাশি দিচ্ছে একটু পর পর।
‘চুপ। শাট আপ। ’ রুবির কথার জবাব না দিয়ে বাবা ধমক দেয়।
‘এইগুলা মদ। ’ খুশিতে গদগদ হয়ে রুবির কথার জবাব দেই আমি।
কথা শুনে বাবা রক্তচক্ষু নিয়ে তাকায়। গ্রাহ্য করি না। বোঝা যাচ্ছে, আজ আমার দিন।
‘বাবা, মদ খাবো। ’ রুবি আবদার শুরু করে। অদ্ভুত আবদার।
রুবি এই কথা বলতেই বাবা ঠাস করে একটা চড় মারে রুবির গালে। রুবি কাঁদতে শুরু করে। আমার সঙ্গে রুবির শত্রুতা, ঝগড়া। ছোটবোন মানেই যন্ত্রণা। রুবির চড় খাওয়া দেখে খুশি হই।
রুবি কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘মদ খাবো। মদ খাবো। ’ তারপর আচমকা বলে, ‘মদ না কিনে দিলে আমিও কিন্তু মায়ের মতো মরে যাবো’। কথা শুনে চুপ হয়ে যেতে হয়। এসব কোথা থেকে শিখলো রুবি?
মায়ের অপারেশনটা পিছিয়েছে। আগের দিন শরীর এতোই খারাপ হয়ে গিয়েছিলো যে, অপারেশন করার দিনটি উপযুক্ত নয় বলেই মনে করেছেন ডাক্তার। মাকে হাসপাতালে একা রেখে আমরা ক্যানিং এসেছি। বিপদ যখন আসে সবদিক থেকেই আসে। ডলার এনডোর্স নিয়ে ঝামেলাটা না হলেও তো হতো। পরম করুণাময় কোনো এক কারণে হয়তো আমাদের ওপর সন্তুষ্ট নন। তাইতো এতো বিপদ। এতো কষ্ট।
‘রুবি, মায়ের মতো মরে যাবো মানে কী? মা আর মেয়ে দু’জনকেই বাঁচতে হবে। বুঝলা? আর মদ খেতে হবে না। মদ খারাপ। চলো তোমাকে চকলেট কিনে দেই। ফাটাফাটি চকলেট। ’ অপুদা বাথরুম থেকে বের হয়ে বলে রুবিকে। কখন বের হয়েছে খেয়ালই করিনি আমরা কেউ।
রুবিকে নিয়ে অপুদা মোড়ের দোকানে যায়। কেউ না করি না। চকলেট পেলে রুবির কান্না থামবে হয়তো।
মাথার ভেতর ঘুরছে রুবির কথাটা। ‘আমিও কিন্তু মায়ের মতো মরে যাবো। ’ কী বাজে কথা।
অপুদা এসে বাঁচিয়ে দিলো। রুবিকে থামিয়ে দিয়ে এই আহত মুহূর্তটার শরীরে একটু হলেও ভালো থাকার প্রলেপ লাগালো।
যেই অপুদার ওপর বিরক্ত হচ্ছিলাম একটু আগেও, ধোঁয়াভরা এই ঘরটার ভেতর বসে সেই অপুদার ওপরেই কৃতজ্ঞতায় ভরে উঠছে আমাদের তিনজনের মন। বাবা, আমি আর বড় মামা।
কেন জানি আমার মনে হয়, অপুদা আমাদের কলকাতা থেকে দেশে যাওয়ারও ব্যবস্থা করে দিতে পারবে সহজেই। মামা বলেছেন, আমরা দেশে যেতে পারবো না। ডলার এনডোর্স নিয়ে ঝামেলাটা এতো গভীর যে, জেলেও যেতে হতে পারে। না জেনে, না বুঝেই কঠিন অপরাধ করা হয়েছে। মামা বাড়িয়ে বলেন। অতো আমলে নেইনি। তবে কিছু কিছু তো সত্যি। সেটা অপুদা ঠিক করে দেবে। আমাদের অপুদা ঠিক করে দেবে। এ ধরনের মানুষেরা অনেক কিছু পারে। অনেক কিছু।
কলকাতায় থাকা দিনগুলোর ভেতর আজকের দিনটা অপুদার কারণে আমার মনে থাকবেই। ভোলার উপায় নেই।
‘পৃথিবীতে ভালো মানুষ আছে রে। ভালো মানুষ আছে। ’ অপুদা বের হয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর বাবা আস্তে করে বলে।
আমি আর মামা মাথা ওপর-নিচ করে তার কথা মেনে নেই।
মেনে নিতেই হয়!
অপুদা ভালো থাকুক। আমাদের ভালোয় ভালোয় মাকে নিয়ে দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিক।
পাগলামি করলেও ওপরওয়ালা তাকে ভালো রাখুক। রাখুক।
প্রার্থনা এই তো।
চলবে...
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৬
এসএনএস
আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন-
**মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ১)