ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

‘সিরাজ পরাজিত হয়েছে, এ দেশ পরাজিত হয়নি’

সজিব তৌহিদ, নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
‘সিরাজ পরাজিত হয়েছে, এ দেশ পরাজিত হয়নি’ ছবি: নূর-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শিল্পকলা একাডেমি থেকে: সাম্রাজ্যবাদের আগ্রাসন থেকে স্বাধীন ভূ-খণ্ডের একজন মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামের নাম সিরাজদ্দৌলা। তিনি বাংলার শেষ নবাব।

কিন্তু সবকিছু শেষ নয়। যেখানে শেষ, সেখান থেকেই শুরু হয়েছে নতুন উদ্যেম, নতুন স্বপ্ন। আর সেই স্বপ্নের কথাই নাটকের শেষ দৃশ্যে নাবাব সিরাজউদ্দৌলার কণ্ঠে বার বার ধ্বনিত হলো। তিনি বললেন, ‘সিরাজ পরাজিত হয়েছে, এ দেশ পরাজিত হয়নি, এ দেশের মানুষ পরাজিত হয়নি। ’

সোমবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয়ে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী ‘শেষ নবাব’ নাটক বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় মঞ্চস্থ হয়।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন নাট্যকার ও চিত্র সমালোচক প্রয়াত সাঈদ আহমদকে স্মরণে তারই রচিত নাটকটি মঞ্চায়ন হয়।

চারুনীড়ম থিয়েটার প্রযোজিত ও সাঈদ আহমদ ফাউন্ডেশন ফর কালচার অ্যান্ড আর্টসের (সাফকা) সহযোগিতায় নাটকটির নির্দেশনা দেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও নির্দেশক গাজী রাকায়েত। একটি বড় চ্যালেঞ্জ নিয়েই নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন বলে জানান তিনি।

নাটকটি শুরু হওয়ার আগে নাট্যকার সাঈদ আহমেদের বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবন নিয়ে এক আলোচনা অনুষ্ঠান হয়। এতে অংশ নেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও নাট্যকার মামুনুর রশিদ, শিল্পী ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা মনোয়ার, নাট্যজন আতাউর রহমান, মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল প্রমুখ।

মামুনুর রশিদ বলেন, সাঈদ আহমদ সরকারি বড় চাকরি করতেন। দেশ-বিদেশ ঘুরে নাটক নিয়ে কাজ করেছেন। অনেক দেশের লেখক, নাট্যকার, ও সাহিত্যিকদের তার সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠেছে। সে সব অভিজ্ঞতা তার সৃষ্টিকর্মে তুলে ধরেছেন। তার নাটকে ধ্রুপদি ও ক্লাসিক্যাল চিত্র ফুটে উঠে। সিরাজদ্দৌলাকে বীর ও মহানায়ক হিসেবে আমরা জানি। কিন্তু তার দূরদর্শীতা, বুদ্ধিমত্তা ও নেতৃত্বের অভাব যে ছিলো, সে বিষয়টি এ নাটকে উপস্থাপন করা হয়েছে‍।
সাঈদ আহমদের সঙ্গে নাটক ও সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করার স্মৃতিরোমন্থন করেন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।

রবাট ক্লাইভ বাহিনীর সঙ্গে সুক্ষ্ম যুদ্ধ ‘শেষ নাবাব’ নাটকে চিত্রায়িত হয়েছে উল্লেখ করে আতাউর রহমান বলেন, নাট্যকার সাঈদ আহমদ সচিব ছিলেন। বিভিন্ন দেশে তিনি কর্মরত ছিলেন। তিনি ইংরেজি ভাষাতে অনেক নাটক লিখেছেন। কিছু নাটক বাংলাতে অনুবাদও করেছেন। তিনি অত্যন্ত রসিক মানুষ ছিলেন।

শিল্পী মোস্তাফ মনোয়ারও নাট্যকার সাঈদ আহমদের সৃষ্টিকর্মের প্রশংসা করেন। পরে দর্শক সারিতে বসে অন্য অতিথিদের সঙ্গে তারা নাটক উপভোগ করেন।

নাটকটিতে বাংলার শেষ নবাব সিরাজদ্দৌলাকে নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপন করা হয়েছে। ১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধে সিরাজের পরাজয়ে শুধু মীর জাফরের বেঈমানি নয়, নবাবের দূরদর্শীতা, বুদ্ধিমত্তা ও নেতৃত্বের দুর্বলাতাকেও নান্দনিক ভঙ্গিমায় পরিবেশন করা হয়েছে।

নাটকটি প্রদর্শনীর উদ্বোধনী ঘোষণা করেন মামুনুর রশিদ। নাটকে সিরাজউদ্দোলা চরিত্রে সালমান ডেভিড, মীর জাফর ভূমিকায় শহিদুল করিম, ঘোষেটি বেগম চরিত্রে চামেলী সিনহা, রবার্ট ক্লাইভ চরিত্রে আল মোতাসসিম, মোহনলাল ভূমিকায় শাহেদ মেহেদী, মীর মর্দন চরিত্রে মারুফ মুর্তজাসহ বিভিন্ন চরিত্রে মোট ২৩ জন নাট্যকর্মী অভিনয় করেন।

বাংলাদেশ সময়: ২৩৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৬
টিআই

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।