৮.
ঘর গোছানোর তোড়জোর,
রাত নামে, আসেনা ভোর।
কোরবানির ঈদের দিনেই সকালবেলা অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছিল গরুটা।
সেকি বাজে অবস্থা। আগের রাতে জোর করে খাওয়ানো হয়েছে অনেক কিছু। তাতেই ডায়রিয়া। পেটও ফুলেছে। সকালে নামাজ পড়ে এসে দেখি নাই। বাবা টেনশনে। কোরবানি হবে কী দিয়ে? হাট ভেঙেছে। এই সময়ে গরু পাওয়ার উপায় নেই কোনো।
ভাগ্য ভালো ছিলো সেদিন। গরু বিক্রি করতে না পেরে পথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল এক চাষা। তাকে ধরে কেনা হয়েছিল গরু। আমাদের বিপদ বুঝতে পেরে দাম হাঁকিয়েছিল অনেক। অনুনয় বিনয়ের পর মোটামুটি একটা দামে কিনেছি শেষে।
এরপর কসাই এনে কাটাকাটি, মাংস বাটোয়ারা, নানান কাজ। আমি এসবে নেই। পালিয়ে পালিয়ে বেড়াই। বাবাই খুশি মনে করেন সব। মাংস কাটাকাটিতে তিনি ওস্তাদ। কসাইকে বসিয়ে রেখে মাঝে মধ্যে তিনি মাংস কাটায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
আমি নামাজ পড়ে এসেই বিছানায়। শুয়ে থাকি। বই পড়ি। রুবি এসে সালামি চায়। আমি ঝাড়ি দিয়ে ভাগাই। না শুনলে গোটা দুই কিল। রুবি মাকে গিয়ে নালিশ দেয়। মা এসময় রুহ আফজার শরবত বানান। সাথে ফিরনি, সেমাই আর লুচি। লোকজন যারা বাড়িতে আসে তাদের জন্য। আদুরে মেয়ের নালিশে মা হাসেন। গালে চুমু দিয়ে কড়কড়ে নতুন নোট দেন সালামি হিসেবে। সালামি আমিও পাই। শান্তির দিন। উৎসবের দিন।
সব কোরবানিতে এমন হয় না। এতোসব খাওয়া দাওয়ার আয়োজন, মন ভালো থাকা! গত কোরবানিতে হয়েছিল। সুস্থ ছিলো মা। সচরাচর সুস্থ থাকে না। মা সুস্থ থাকলেই আমাদের আনন্দ। মন ভালো সবার। আর অসুস্থ থাকলে মন খারাপ।
কেন এসব বলছি? এমন এলোমেলো কথা! কারণ, আজ আমাদের মন খারাপ। আমি, রুবি আর মামা। মায়ের শরীরটা ভালো না। ডাক্তার বিশ্বজিত অপারেশনের আরেকটা চেষ্টা নিতে চাচ্ছিল। কিন্তু জানালো, মায়ের শরীর ভালো না। অপারেশনের ধকল সামলানোর মতন অবস্থা নেই। আমি আর রুবি মন খারাপ করে ছিলাম সারাদিন। মামা ছিলো হাসপাতালে। একটু আগে এলো মামা। এখন আমাকে যেতে হবে।
আমার যেতে ইচ্ছে করে না। মায়ের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে ভালো লাগে না। কষ্ট হয়। মায়ের মুখের দিকে তাকালে অসহায় লাগে।
আমি রুবি আর মামার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাস্তায় বের হই। মামা বারবার করে বলে দেয়, রানা কিংবা রানার মতন আর কেউ তুলে নিতে চাইলে যেনো না যাই। আগের দিনের ঘটনা বলেছি সবাইকে। মামা ঝাড়ি দিয়েছেন। বলেছেন, ‘এতো বড় হইছ, আক্কেল হইলো না। কি দরকার ছিলো যাওয়ার?’ বরাবরের মতন চুপ থেকেছি। ঝড়ের প্রথম ঝাপটা যাওয়ার পর মামাকে বাবার কথাটা বলেছি।
মামা সঙ্গে সঙ্গে ফোন করেছিলেন বাবাকে। পাওয়া যায়নি। ওই দিনের পর থেকে বাবাকে ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। এটা নিয়েও টেনশনে আছি আমি আর মামা।
হাসপাতালের দিকে যাই। যেতে যেতে মায়ের কথা মনে পড়ে। মাথার ভেতর মাকে নিয়ে দারুণ সব স্মৃতি আসে আর যায়। মা আমার মনের কথা বুঝতে পারে মনে হয়। পৃথিবীর সব মায়ের সঙ্গেই সন্তানদের টেলিপ্যাথিক কোনো ব্যাপার-স্যাপার আছে নিশ্চিত। এমন অনেক দিন হয়েছে, খিচুড়ি খেতে ইচ্ছে করেছে হুট করেই। খিচুরি, ডিম ভাজা, শসা আর টমেটোর সালাদ। টিউশনি করে ফিরছি, ফেরার পথে ভাবনায় খিচুড়ির ছবি ভাসছে। যন্ত্রণা।
বাসায় এলাম। এসে ব্যস্ত হয়ে গেলাম অন্য কাজে। ভুলেই গিয়েছি খিচুড়ির কথা।
রাতে খেতে বসে দেখি টেবিলে খিচুড়ি। মা প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছেন। সবকিছুই ঠিকঠাক মতন আছে। সঙ্গে যোগ হয়েছে চাটনি।
এমন একদিন না, অনেকবার হয়েছে। মা মনের কথা পড়ে ফেলেন। লুকাতে পারি না কিছু।
ফজরের নামাজের পর কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করতেন মা। একদিন শীতের সময় গায়ের কাঁথাটা সরে গিয়েছিল। ঘুমানোর সময় স্থির থাকি না আমি। খাটের এপাশ ওপাশ ছুটে বেড়াই। শীতের তীব্রতায় কাঁথা সরে যাওয়ার বিষয়টা টের পেয়েছিলাম। আধো ঘুম, আধো জাগরণ অবস্থা। আলসেমিতে ইচ্ছে করছিল না গায়ের কাঁথাটা টানার। ঠিক এ সময়েই টের পেয়েছি মা গায়ে কাঁথাটা দিয়ে দিচ্ছেন কিংবা কোনো এক ঝুম বৃষ্টির দুপুরে হয়তো জানালার পাশের সোফায় মাথা রেখে দিয়েছি ঘুম। উঠে টের পেয়েছি মা জানালা বন্ধ করে দিয়েছেন। জানালা দিয়ে বৃষ্টির ছাট এসে যেনো ভিজিয়ে না দেয় তার ছেলেকে। ঘুমের যেনো এতোটুকুনও ব্যাঘাত না হয়।
হাসপাতালে পৌঁছাই। রুগ্ন মানুষদের মুখ আর ভালো লাগে না। চারিদিকে ঝামেলা।
আমার একটু একা থাকা দরকার। শূন্যতা দরকার।
এই মিথ্যে শহরে অতিষ্ঠ লাগে। এতো কষ্ট, অনিশ্চয়তা।
মনে হয় আমার এভাবে থাকার কথা ছিলো না।
দোয়েল, ফিঙে, হালতি পাখি কিংবা গুবরে পোকার জীবন পাওয়ার কথা ছিলো। শিউলি, বুনো ফুল ঘাস ডিঙিয়ে, পেছনে ফেলে কাঁচা রাস্তা আমার কোথাও যাওয়ার কথা ছিলো। কচুরিপানার মতন অবুঝ হয়ে ভেসে ভেসে, রোদ-ছায়ায়, জলের ফেনায় আমিও নদীর খুব কাছের কেউ হতে পারতাম। কাঁদামাটি, গাছের বাকলে নাম লিখে কবি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে একটু তাইরে নাইরে করলেও সালিশে খেয়ালি বলে আমাকে ক্ষমা করতো মজলিশ।
এমনই মনে হয়। প্রায়ই। চোখ যখন কোলাহল, তকদিরের কাছে মাথা নত করে কাজ করে যায় তখন মনে হয়, এই আমার এখানে থাকার কথা ছিলো না। কতো কিছু হওয়ার কথা ছিলো, ছুঁয়ে দেখার কথা ছিলো।
নষ্ট শহরে চায়ের কাপের ধোঁয়া না হয়ে বেঁচে থাকার স্বাদ পেতে পান্তার সঙ্গে সালুন হতে চেয়েছিলাম। আমার হয়নি। হলো না।
যাওয়া কথা ছিলো অরণ্যে। হওয়ার কথা ছিলো সুতানালি সাপ, বুনো হনুমান, চিত্রা হরিণ কিংবা ভেজা ঘড়িয়াল।
আমার এমন হলো না। আছে শুধু শোক, অশ্রু, দুশ্চিন্তা।
এটাই জীবন আমার। মস্ত কারাগার। মুক্তি নেই। ক্লান্ত লাগে। একটু জিরিয়ে নিতে ইচ্ছে করে। পারি না। সে সময় কই?
মায়ের সঙ্গে দেখা হলো না। ডাক্তার জানালো, দেখার মতন অবস্থায় নেই। সৃষ্টিকর্তাকে ডাকতে হবে।
সুরা পড়ি। সুরা ইয়াসিন। হাসপাতালের করিডরে বসেই মনে শান্তি আসে। প্রার্থনায় আরাম হয়। মন স্থির হয়।
হাসপাতালের বাইরের টেলিফোন বুথটা থেকে বাবাকে ফোন করি। তিনি বাসায় আছেন এখন। অফিসে যান না। জিজ্ঞেস করতে বলেছেন, ‘ঝামেলা। ঠিক হয়ে যাবে। অতো বুঝে লাভ নেই। ’ খোলাসা করেননি কিছু। আমি, মামা ঘাটাইনি আর।
‘বাবা, কেমন আছো? মায়ের শরীর ভালো না। ’ ওপাশ থেকে ফোন ধরলেই বলি আমি বাবাকে।
‘ও। সেন্স আছে?’ ভাঙা গলায় বলেন বাবা। শরীর ভালো না বোঝা যায়।
‘শরীর খারাপ?’ আমি চিন্তিত হয়ে বাবাকে জিজ্ঞেস করি।
‘জ্বর একটু। মায়ের কথা বল। ডাক্তার কী বলছে?’
‘বলছে ভাগ্যের হাতে ছাড়তে। ’ আমি আস্তে করে বলি। কণ্ঠে শূন্যতা ভর করে।
‘তোরা হাসপাতাল থেকে কেউ আজ নড়বি না। ঠিক আছে। ’
‘আচ্ছা। ’
‘আমি ফোনের পাশেই আছি। বাসার টিঅ্যান্ডটি। আমার মোবাইল ফোনটায় সমস্যা। কিছু হলেই কল দিবি। ’
‘ঠিক আছে। ’
‘দোয়া কর মায়ের জন্য। আমি মসজিদে দোয়ার ব্যবস্থা করতেছি। সুযোগ পাইলে নামাজটা পড়িস। ’
‘পড়বো। ’
‘আর খাওয়া দাওয়া করিস। কিছু না খাইলে তুই আবার অসুস্থ হবি। অসুস্থ হইলে মা’রে দেখবি কেমনে?’ বলে বাবা।
‘বাবা রাখি। আচ্ছা বাবা তুমি কি ঠিক আছো?’ কথা বলি আমি। ওপাশ থেকে বাবা জবাব দেয় না। আমিও চুপচাপ।
কিছুক্ষণ চুপ থাকার পর বাবার ফোন রেখে দেওয়াটা টের পাই। আমিও ফোন রেখে টেলিফোন বুথ থেকে বের হই। মায়ের সঙ্গে সঙ্গে বাবার জন্যও মন খারাপ লাগে। কী ক্লান্তই না লোকটা!
অপুদা কলকাতায় এসেছে। কী ব্যবসার কাজ যেনো। বুঝে গিয়েছে পড়াশোনায় হবে না। গোপন এক ব্যবসা ধরেছে। আমাকে বলেছে এতোটুকুই। বলেছে, ‘বুঝলি, একবার জমলেই হইলো। প্রোফিট আর প্রোফিট। এখনই কিছু বলা যাবে না। সিক্রেট। ঠিক আছে?’ আমি কাউকে বলিনি। তাছাড়া বললেও কী বলবো সেটা বুঝিনি।
অপু ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করি। ঠিকানা দিয়ে গেছেন। কোনো কিছু না জানিয়ে চলে যাই। মাকে একা রেখে হাসপাতালে।
হাসপাতালের কাছেই আছেন তিনি। হেঁটে বিশ মিনিটের পথ। প্রচণ্ড গরমে ঘেমে নেয়ে পৌঁছাই তার কোম্পানির অফিসে। অফিসে অপুদা ছাড়া কেউ নেই। সে মুখ শুকনো করে একটা রুমে বসে আছে। রুমে টেবিল ফ্যান আছে কিন্তু চলছে না। বাইরের চেয়েও বেশি গরম এখানে। দোজখ গরম। সেখানেই এসে বসি। অপুদার পাশে।
‘কী অবস্থা তোর। ’ পাশে বসে বলে অপুদা। ঘেমে গোসল লোকটা। দেখে বোঝা যায় ভালো নেই। কিন্তু কথা বলার সময় মুখে হাসি ঠিকই আছে।
‘মায়ের শরীর ভালো না। ’ আমি বলি।
‘তোর মামা আছে হাসপাতালে?’
‘না। ’
‘তো? একা রেখে আসলি?’
‘হ্যাঁ। ’ আমি মাথা নিচু করে বলি। জানি অপরাধ করে ফেলেছি।
‘আচ্ছা। সমস্যা নাই। চল, এই গরমে আর থাকা যাচ্ছে না। বের হই। লেবুর শরবত মেরে দিয়ে আসি। আত্মা ঠাণ্ডা হয়। ’
আমরা বের হই দু’জনে। অপুদা হেড়ে গলায় গান ধরে, ‘মুঝকো পানি পিলা দিজিয়ে। ’ মানুষটা কীভাবে পারে? জগতের সব ঝামেলা ভুলে এতো শান্তিতে থাকতে! হিংসে হয়।
লেবুর শরবত খাই। খেতে খেতে অপু দা কথা বলে।
‘ব্যবসাটা জমলো না। ধরা খেয়ে গেলাম। ’ হেসে হেসে বলে অপু ভাই।
‘কেন? কী হলো?’ কথাটা বলার সময় আমি চিন্তিত এমন একটা ভাব নেই।
‘দিলো না। অন্য দেশের লোকদের সুযোগ দেবে না এরা। বহুত চালাক। বাদ দে। ’
‘দিলাম বাদ। ’ বলি আমি। ব্যবসার কথায় আনন্দ পাই না।
‘পনের দিনও টিকাইতে পারলাম না ব্যবসাটা রে। আমি একটা অপদার্থ। হা হা। ’ আবারও ব্যবসা নিয়ে কথা শুরু হয়।
‘অপু দা তুমি টেনশন নিও না। ’
‘আরে আমার আবার টেনশন কী? একলা মানুষ। হা হা। বাপ-মায়ের ঠিক নাই। প্রোব্লেম হইলো এইখানে পড়াশোনাটা চালাইতে হইলে পয়সা লাগবো। অইটা ভাবছিলাম ব্যবসা দিয়া ম্যানেজ করবো। হইলো না। বাসা দিয়া পয়সা-টয়সা দেয় না। জেদ কইরা আসছি ইন্ডিয়া। ধরা খাইয়া গেলাম। আবার দেশে ফিরতে হইবো। বাপ কথা শুনাবে। এই যা ঝামেলা। ব্যাপার না। বিন্দাস। ’
‘তোমার মা-বাবার বিষয়টা জানতাম না। ’
‘কতোটুকুন জানিরে আমরা নিজেদের। হাসি খুশি মুখগুলা রাস্তাঘাটে যা দেখস সব মিথ্যা। কেউ শান্তিতে নাই। কেউ কাউরে শান্তিতে থাকতে দেয় না। আমরা লুকাই। সারাদিন চলে লুকোচুরি খেলা। হা হা। ’
‘ও। ’ বলি আমি।
‘তুই জানস না মনে হয়। মা-বাবা ডিভোর্সড। মায়ের আমারে নিয়া ভাবনা নাই। বাপেরও নাই। দুইজনই বিয়া কইরা নিজ নিজ লাইফ নিয়া বিজি। আমি পড়ছি চিপায়। আমি তাদের এক্সট্রা যন্ত্রণা। তাই অল্প কিছু টাকা চাইয়া কষ্ট কইরা আসলাম ইন্ডিয়া। পারলাম না। ধরা খাইয়া গেলাম। চল শিক খাই। কাবাব আর রুটির রোল। তারপর তোরে হাসপাতালে রাইখা আসি। তোর মাকে এতোক্ষণ একা রাখা ঠিক হবে না। তোর তো মা আছে। মন খারাপ ক্যান ব্যাটা? আমার তো মা-ও নাই। ’
‘চলো রোল খাই। রোল খেয়ে হাসপাতাল। পথে পথে তুমি গান গাবা কিন্তু অপু দা। ’ আমি বলি। জীবনে এতো দুঃখ পেতে নেই। জীবন এমনই। সহজভাবে নিতে হয়। আমি সহজ ভাবে নেওয়ার চেষ্টা করবো। শুকরিয়া করুণাময়। আমার চেয়েও তো কতো মানুষ কতো কষ্টে আছে!
‘চল। চল। ওয়ে হোয়ে। পানি পিলা দিজিয়ে। হা হা হা। ’ অপু দা গান ধরে। তার পাগলামীতে চারপাশের লোকজন তাকায়। অপুদা থোড়াই কেয়ার করে। আমিও কেয়ার করি না। পৃথিবীটা থাকার জন্য খারাপ জায়গা না এমনটা মনে হয়।
রোল খেতে খেতে হাসপাতালে পৌঁছাই। গিয়ে দেখি করিডরে মামা দাঁড়িয়ে। উদ্রভ্রান্তের মতন অবস্থা।
‘কই গেছিলি। তোর মা একলা না? থাবড়া খাবি। ’ আমাকে দেখে চেচিয়ে উঠে বলে মামা।
‘মা ঠিক আছে মামা?’ আমার ভয় লাগে।
‘ঠিক আছে কিন্তু বুনো তো হারপিক খেয়ে বসে আছে। অবস্থা ক্রিটিকাল। বয়ফ্রেন্ডজনিত ঝামেলা। বয়ফ্রেন্ডটা টাউট বাটপার বলছিলাম না। কী ঝামেলা বলতো! দৌড়াদৌড়ি করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। ’ বলে মামা।
আমি? এরপর আমার কী করা উচিত? বুনো কি বেঁচে আছে? নিশ্চয়ই বেঁচে আছে। নইলে মামা এতো সহজ করে বলতে পারতো না।
কতো মানুষইতো হারপিক খায় শুনি! সবাইতো মরে না।
‘ইয়াক। ইয়াক। হারপিক একটা খাওয়ার জিনিষ হলো? বুনো মেয়েটা কী বোকা! চল চল খোঁজ নেই। ’ অপু দা আমাকে ঠেলে ঠেলে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যায়। বুনোর কাছাকাছি।
বুনো মেয়েটাকে কি আমি ভালোবাসি? ভালো না বাসলেও বুনোর এই অবস্থায় তার জন্য কষ্ট পাওয়াটা কি দোষের কিছু?
মানুষ হলে তো পাওয়া উচিত। আমি মানুষ হতে চাই। খুব ভালো মানুষ।
চলবে…
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৯ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৬
এসএনএস
আগের পর্ব পড়তে ক্লিক করুন-
**মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ১)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ২)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ৩)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ৪)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ৫)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ৬)
** মধ্যবিত্ত | কিঙ্কর আহ্সান (পর্ব- ৭)