উলিপুর (কুড়িগ্রাম থেকে): সারিন্দায় সে কী মোহনীয় সুর। শিরিষ চন্দ্র বর্মার হাতের ছড়ের ছোঁয়া পেয়ে যেনো প্রাণ পেলো একটি বাদ্যযন্ত্র।
বাংলার প্রাণের কাছে যেতে বাংলানিউজ টিম শিরিষ চন্দ্রের সন্ধান পায় কুড়িগ্রামের উলিপুরে। পীরের বাজারের অদূরে ধানক্ষেতের সবুজের প্রান্তরকে ডানে বায়ে পেছনে রেখে যখন তিনি সারিন্দায় ছোঁয়ালেন হাতের ছড় ওমনি বেজে উঠলো সুমধুর সুর।
এরপর হাতের ওঠানামাই তো, আর কিছু নয় কিন্তু কিন্তু তাতে ইথারে শব্দ ঢেউ খেলে খেলে তৈরি করলো গান-
ওরে গাড়িয়াল বন্ধু...ছাড়িয়া রইতে পারি না তোরে...
গান বাজলো টানা চার মিনিট ১৩ সেকেন্ড। কিন্তু তার রেশ টিকে থাকলো পুরো বিকেল জুড়ে। আর ধানক্ষেতের বাতাসে ভেসে থাকলো ছাড়িয়া রইতে পারিনা তোরে....
শিরিষ চন্দ্র শিক্ষক। গানের শিক্ষক। সারিন্দার প্রশিক্ষক। রয়েছেন বাংলাদেশে ভাওয়াইয়া একাডেমির সঙ্গে।
জানালেন এই সারিন্দা একটি তত জাতীয় লোকবাদ্যযন্ত্র।
একটি কাঠের ফ্রেম, চামড়া ও তার। এটাই মূল কাঠামো। আর তারের ওপর পরশ বোলায় যে কাঠি তার নাম ছড়।
সারিন্দার মূল কাঠামোর প্রশস্ত অংশ দুই দিক থেকে বেশ খানিকটা চাপা। ওপরে চামড়ার ছাউনি। মাথায় থাকে কোনও একটা কারুকাজ। কেউ কেউ ঘোড়া, পাখির মুখ বানান। কেউ বা দেব-দেবীর।
শিরিষ চন্দ্র বর্মার সারিন্দায় রয়েছে গনেশ মূর্তি।
প্রশস্ত অংশের নিচে তিনটি তার চামড়ার ওপর দিয়ে টেনে কাঠামোর অপর প্রান্তে শক্ত করে লটকানো।
ধনুকাকৃতির ছড় তৈরি পশুর লেজের চুল দিয়ে। যার মোলায়েম ছোঁয়া লেগে তারগুলোয় বাজে সুর।
বাংলাদেশ সময় ২২৩৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৬
এমএমকে