ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

শিল্প-সাহিত্য ও বিবেকের বাতিঘর অধ্যাপক আনিসুজ্জামান

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৫ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
শিল্প-সাহিত্য ও বিবেকের বাতিঘর অধ্যাপক আনিসুজ্জামান অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতসহ অতিথিরা। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিসহ নানা ক্ষেত্রে দেশের জন্য অবদান রাখতে পারাকে ‘বিরল সুযোগ’ মনে করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে শিক্ষকতা করা এ ব্যক্তিত্ব নিজেকে এখনো শিক্ষক হিসেবেই ভাবতে ভালোবাসেন।

অধ্যাপক আনিসুজ্জামান তার ৮১তম জন্মবার্ষিকীতে বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতি এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি আয়োজিত ‘সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে’ অনুভূতি প্রকাশ করছিলেন। শনিবার (১০ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

 

জন্মদিনে শুভেচ্ছাসিক্ত অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, আমি যেসব সময় পার করে এসেছি, দেশের ইতিহাসে তা গুরুত্বপূর্ণ। এখানে মাঝে মাঝে ভূমিকা পালন করতে পারা আমার জন্য এক বিরল সুযোগ, সেটা আমার সৌভাগ্য।

তিনি বলেন, আমি নিজেকে মূলত শিক্ষক মনে করি। শিক্ষকতায় যে আনন্দ পেয়েছি, মর্যাদা পেয়েছি, সেটা আমার জীবনকে পরিপূর্ণ করেছে। দেশের মানুষের ভালোবাসায় আমি বাড়তি আয়ু পেয়েছি। প্রার্থনা করবেন, জীবনের এ বাড়তি সময়টা যেন আমি ঠিকমতো কাজে লাগাতে পারি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অনুভূতি ব্যক্ত করছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।  ছবি: শাকিল আহমেদআনিসুজ্জামানের ভাষা আন্দোলন, সাহিত্য ক্ষেত্রে নানা অবদানের কথা তুলে ধরে তার ‘প্রিয় বন্ধু’ অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, আনিস সাহিত্যের বাতিঘর, এটা নিয়ে কোনো প্রশ্নই ওঠে না। কিন্তু একইসঙ্গে সে বিবেকেরও বাতিঘর। আমার কাছে সেটাই বেশি উল্লেখযোগ্য, বেশি মূল্যবান মনে হয়। যদিও সে আমার অনুজ, তবুও ভালোবাসা জানানোর পাশাপাশি তার প্রতি শ্রদ্ধাও জ্ঞাপন করছি।

অনুষ্ঠানে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানও। তিনি আনিসুজ্জামানকে ‘জাতীয় অধ্যাপক’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান বলেন, পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, পরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর যখন যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে আমাদের জাতীয় পতাকা শোভা পেল, তখন সময়ের সাহসী যোদ্ধা হিসেবে ভূমিকা পালন করেছেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। আমরা এখনো তার কাছেই প্রেরণা খুঁজে ফিরি।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান আমার সরাসরি শিক্ষক নন, কিন্তু তার কাছ থেকে জীবন ও পরিবেশের যে শিক্ষা পেয়েছি, তাই আমার কাছে অমূল্য সম্পদ। তার কাছ থেকে পাওয়া জ্ঞান ও দীক্ষা আমাদের জীবন পরিচালনার বোধ জাগ্রত করেছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ও কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, অধ্যাপক আনিসুজ্জামান শিক্ষার্থীদের নিজস্ব মনোজগত তৈরি করে দেন। তিনি তথ্যকে জ্ঞানে ও জ্ঞানকে প্রজ্ঞায় পরিণত করেন। তিনি তার লেখনীর মধ্য দিয়ে শুধু সাহিত্য রচনা করছেন না, প্রতিটি পাঠকের মনে তার জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ছাপ রেখে যাচ্ছেন। তার সান্নিধ্য অত্যন্ত নির্মল। তা আমাদের পরিবর্তনের ছোঁয়া দিয়ে যায়।

আয়োজনে অধ্যাপক আনিসুজ্জামানকে নিয়ে কথা বলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান শায়ক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অর্থমন্ত্রীর একান্ত সচিব আ ন ম ফয়জুল হক।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫২ ঘণ্টা, মার্চ ১০, ২০১৮
এইচএমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।