ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

কণ্ঠশীলন ও ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক স্মরণ

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
কণ্ঠশীলন ও ছায়ানটে ওয়াহিদুল হক স্মরণ রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে অনুষ্ঠিত ছায়ানটের ওয়াহিদুল হক স্মারক দেশঘরের পালাগানের একটি অংশ। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: ওয়াহিদুল হক নামটিই যেন একটি প্রতিষ্ঠান। সেই ব্যক্তিটির জন্মদিন মানেই দেশের সংস্কৃতি অঙ্গনের জন্য বিশেষ দিবস। তেমনটিই ছিল শুক্রবার (১৬ মার্চ)। এদিন ছিল ওয়াহিদুল হকের ৮৫তম জন্মদিন। 

এ উপলক্ষে ছায়ানট ও কণ্ঠশীলনের দু’টি অংশের পৃথক আয়োজনে মুখরিত ছিল সংস্কৃতি অঙ্গন।

ওয়াহিদুল হকের জন্মদিন উপলক্ষে ছায়ানটের আয়োজনে সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সরোবরে বসেছিল বাংলার লোকগানের আসর ‘দেশঘরের আসর’।

উৎসবের উদ্বোধন করেন কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীর পূর্বমুখাতীর প্রবীণ শিল্পী মোজাফফর হোসেন। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক লাইসা আহমেদ লিসা।

অনুষ্ঠান শুরু হয় শিল্পী মোজাফফর হোসেনের কীর্তন দিয়ে। তিনি গেয়ে শোনান ‘গোপি জন মনচোরা’। এরপরে তিনি গেয়ে শোনান কবি জসীম উদ্দীনের লেখা গান ‘বাজান চল যাই চল মাঠে লাঙ্গল বাইতে’।

পালাগানের গুরু-শিষ্য লড়াই করে দর্শকদের মাতিয়ে দেন গুরু আরিফ দেওয়ান ও তার শিষ্য কানন দেওয়ানের দল। এছাড়াও একক গান পরিবেশন শিল্পী মো. আফছার আলী। সবশেষে ছিল ধামাইল নৃত্য। শ্রীমঙ্গলের রামকৃষ্ণ সরকার ও তার দল ধামাইল নৃত্য দিয়ে মুগ্ধ করেন দর্শকদের।

এদিকে অন্যরকমভাবে সংস্কৃতিসেবী ওয়াহিদুল হক ও শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীকে স্মরণ করেছে কণ্ঠশীলন। ওয়াহিদুল হক ছিলেন কণ্ঠশীলনের প্রাণপুরুষ এবং কাইয়ুম চৌধুরী ছিলেন এ সংগঠনের সভাপতি। এ মাসেই তাদের দু’জনের জন্মদিন। কাইয়ুম চৌধুরী জন্মেছিলেন ৯ মার্চ আর ওয়াহিদুল হকের জন্মদিন ছিল ১৭ মার্চ।

কণ্ঠশীলনের সভাপতি সন্জীদা খাতুনের সঞ্চালনায় সন্ধ্যায় ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে চিত্রকলা নিয়ে কথা বললেন চিত্র সমালোচক মঈনুদ্দীন খালেদ। কবিতার সঙ্গে ছবির নৈকট্য ফুটে উঠে তাদের আলোচনায়। বিভিন্ন আকর্ষণীয় উদাহরণ দিয়ে তারা তা বোঝালেন। বৈঠকি আড্ডার ধরনে এ আলোচনা শ্রোতাদের মুগ্ধ করে।

এরআগে আয়োজনের শুরুতে ওয়াহিদুল হক ও কাইয়ুম চৌধুরীর রচনা থেকে পাঠ করা হয়। ছিল কণ্ঠশীলন প্রযোজনা ‘সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে’। সবশেষে কণ্ঠশীলনের সদস্যরা জীবনানন্দ দাশের ছবিময় কবিতা আবৃত্তি করে শোনায়।

দুপুরে কণ্ঠশীলনের আরেকাংশের আয়োজনে শুরু হয়েছে দুই দিনের ওয়াহিদুল হক স্মারণিক মিলনোৎসব। ‘আপনা মাঝে শক্তি ধরো, নিজেরে করো জয়’- প্রতিপাদ্যে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও প্রবীণ সাংবাদিক কামাল লোহানী। আয়োজনে সভাপতিত্ব করেন কণ্ঠশীলনের সভাপতি গোলাম সারোয়ার।

কামাল লোহানী বলেন, বর্তমানে দেশে সাম্প্রদায়িতার বিষবাষ্প ছড়িয়ে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। এমন সময় কণ্ঠশীলনের এ আয়োজন আমাদেরকে আশা দেয়।

ওয়াহিদুল হককে স্মরণ করে তিনি বলেন, দেশের সংস্কৃতিচর্চার পথ নির্মাণে অগ্রপথিক ছিলেন ওয়াহিদুল হক। সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তার সবচেয়ে বড় অবদান সংস্কৃতির ক্ষেত্র প্রস্তুত করা। বাঙালিত্বেও গর্ব নিয়ে মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকার জন্য আজীবন মানুষ গড়েছেন, সংঘবদ্ধ করেছেন, পথ দেখিয়েছেন ওয়াহিদুল হক। তার দীক্ষা নিয়েই বাঙালি সংস্কৃতির প্রচার ও প্রসারে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে কণ্ঠশীলন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
এইচএমএস/জিপি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।