ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

স্বাধীনতা দিবসে সংস্কৃতি অঙ্গনের যত বর্ণিল আয়োজন

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০১ ঘণ্টা, মার্চ ২৬, ২০১৮
স্বাধীনতা দিবসে সংস্কৃতি অঙ্গনের যত বর্ণিল আয়োজন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশন করা হয়। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: বর্ণিল সব আয়োজনে দেশের ৪৮তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে জাতি। সোমবার (২৬ মার্চ) ভোরের সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ঢাকাসহ সারাদেশের আনাচে-কানাচে শুরু হয় স্বাধীনতা দিবসের নানা আয়োজন। দিনভর জাগরণের গণসঙ্গীত, নাচ, নাটক, চিত্রাঙ্কন, আবৃত্তি আর মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণে উৎসবমুখর ছিল রাজধানীর সংস্কৃতি অঙ্গন। গালে স্বাধীনতার রং মেখে, গানের সুরে, কবিতার ছন্দে, নৃত্যের আনন্দে আর চিত্রমালায় স্মরণ হয়েছে একাত্তরের মহাকাব্যিক অধ্যায়।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের স্মৃতিবিজড়িত স্থান রেসকোর্স ময়দান বা এখনকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। সোমবার নাচ-গানে বাঙালির বিজয় ও পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পরাজয়ের সাক্ষ্যবহ আঙিনাটিতে বর্ণিল আয়োজনে দিবস উদযাপন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ফকির আলমগীর, লোকসঙ্গীত শিল্পী চন্দনা মজুমদার, শিল্পী পারভেজ ও ব্যান্ডদল চিরকুট। আবৃত্তি করেন বাচিকশিল্পী ডালিয়া আহমেদ ও মাহিদুল ইসলাম।

শিল্পকলা একাডেমি
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে পৃথক দু’টি অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। সকাল ৮টায় জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্যদিয়ে শুরু হয় প্রথম অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গানটির সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন দীপা খন্দকার ও তার দলের সদস্যরা। এম.আর ওয়াসেক এর পরিচালনায় ‘চলো এগিয়ে যাই’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে একাডেমির শিল্পীরা। সমবেত সংগীত পরিবেশন করে সত্যেনসেন শিল্পী গোষ্ঠী, বহ্নিশিখা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংগীত বিভাগ, ঋষিজ শিল্পী গোষ্ঠী। শিল্পকলা একাডেমির নন্দমঞ্চে নৃত্য পরিবেশন।  ছবি: বাংলানিউজসন্ধ্যায় একাডেমির নন্দমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠান। এ পর্বে ফারহানা চৌধুরী বেবীর পরিচালনায় নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা। এরপর অন্তর দেওয়ান, ওয়ার্দা রিহাব ও অনিক বোসের পরিচালনায়ও সমবেত নৃত্য পরিবেশন করেন শিল্পীরা।

জাতীয় জাদুঘর
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের কবিতার আসরের আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর। বিকেলে জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে আবৃত্তি পরিবেশন করেন বর্ষিয়ান বাচিকশিল্পী কাজী মদিনা, ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, কেয়া চৌধুরী, রূপা চক্রবর্তী, ডালিয়া আহমেদ, মীর বরকত, গোলাম সরোয়ার, রফিকুল ইসলাম, ইকবাল খুরশিদ, ঝর্ণা সরকার, আহকামউল্লাহ, রেজিনা ওয়ালি লীনা, মাসুদুজ্জামান, শাহাদাৎ হোসেন নিপু প্রমুখ।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সকালে ছিল জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা উত্তোলন। শিশু-কিশোর আনন্দানুষ্ঠানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে নৃত্যজন, কল্পরেখা, ঢাকা আহছানিয়া মিশন স্কুল (মোহাম্মদপুর), দনিয়া সবুজকুঁড়ি, কচিকাঁচার মেলা, আলফ্রেড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও বধ্যভূমির সন্তানদল।  

সন্ধ্যায় জাদুঘর মিলনায়তনে যাত্রাপালা ‘আনারকলি’ পরিবেশন করে লোকনাট্য গোষ্ঠী (মানিকগঞ্জ)। এ আয়োজনেই মিরপুর জল্লাদখানা ঘিরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করেন জল্লাদখানায় শহীদ পরিবারের সদস্যরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করে চারুলতা একাডেমি, ঢাকা সিটি স্কুল, কল্পরেখা, স্বপ্নবীণা শিল্পকলা বিদ্যালয়, উইলস্ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, মিথস্ক্রিয়া আবৃত্তি পরিষদ, যুব বান্ধব কেন্দ্র (বাপসা), বধ্যভূমির সন্তানদল ও বর্ণালী থিয়েটার। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামের কবিতার আসরের আয়োজন করে জাতীয় জাদুঘর।  ছবি: বাংলানিউজকেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মঞ্চে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে আনন্দন, ভিন্নধারা, দৃষ্টি ও খেলাঘর। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন কানন বালা সরকার, আকরামুল ইসলাম, ফাহিম হোসেন চৌধুরী ও অলক দাস গুপ্ত। দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে স্বরচিত্র, স্বরকল্পন ও চারুকণ্ঠ। একক আবৃত্তি করেন হাসান আরিফ ও গোলাম সারোয়ার। শিশু সংগঠনের মধ্যে পরিবেশনায় ছিল মৈত্রী শিশুদল। দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে বহ্নিশিখা ও নৃত্যম। পথনাটক করে আরণ্যক নাট্যদল।  

রবীন্দ্র সরোবর
সন্ধ্যায় রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী, ওস্তাদ মোমতাজ আলী খান সঙ্গীত একাডেমি ও সঙ্গীত ভবন। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন আঞ্জুমান ফেরদৌসী কাকলী, প্রলয় সাহা, বুলবুল মহলানবীশ, ইন্দ্রমোহন রাজবংশী ও মারুফ হোসেন। দলীয় আবৃত্তি করে স্বনন টিএসসি, ঢাকা স্বরকল্পন ও স্রোত। শিশু সংগঠনের মধ্যে পরিবেশনায় ছিল মন্দিরা সাংস্কৃতিক পাঠশালা। দলীয় নৃত্য করে আঙ্গীকাম ও নৃত্যজন। পথনাটক করে মৈত্রী থিয়েটার।

কেন্দ্রীয় কচিকাঁচার মেলা
বিকেলে কচিকাঁচার মেলা মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। এতে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাঁথা শোনান ওয়ার ক্রাইমস্ ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির সভাপতি ডা. এম এ হাসান। আলোচনায় অংশ নেন কচিকাঁচার মেলার সভাপতি খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান, সহ-সভাপতি সৈয়দ আবুল বারক্ আলভী। শিশু বক্তা ছিল তাসনুভা তাবাসসুম অরিত্রী। শিশু সভাপতি ছিল ইসরাত জাহান দিবা।

বাংলাদেশ সময়: ০০৫৬ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০১৮
এইচএমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।