ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

জীবনবোধের নিগূঢ় ইতিবৃত্তের নাটক ‘জাহানারা-জাহানারা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৮
জীবনবোধের নিগূঢ় ইতিবৃত্তের নাটক ‘জাহানারা-জাহানারা’ জাহানারা জাহানারা নাটকের দৃশ্য। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: সকালবেলা ক্যানিং বা ডায়মন্ড হারবার লোকাল ধরে জাহানারা বালিগঞ্জ রেলস্টেশনে নামেন। লেডিস টয়লেটে ঢুকে শাঁখা-সিঁদুর-শাড়ি পরে ভোল পাল্টে ব্যানার্জি, মুখার্জি হয়ে ঢুকে পড়েন রাসবিহারী কিংবা গড়িয়াহাট বা কসবার কোনো সম্ভ্রান্ত বনেদি পরিবারে। সেসব পরিবারে সাতপুরুষের বিগ্রহ পূজার ছোট মন্দিরে শুধু ব্রাহ্মণ ঝি প্রবেশ করতে পারেন। 

জাহানারা এখন জুঁই ব্যানার্জি হয়ে এমনই এক পরিবারে ঢুকে প্রতিশোধ নেন। শোধ তোলেন তার প্রিয় সংগীত শিল্পী বাবার জাতের কারণে আর দারিদ্রের অপমানে আত্মঘাতি হওয়ার ঘটনার।

এমন কাহিনীর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যায় নাটক ‘জাহানার-জাহানারা’।

নাটকে দেখা গেছে, দিনের বেলা ক্যানিং লাইনের ইসলামপুর বস্তির নোংরা জীবনে, নোংরা যাপনে, নোংরা ভাষায় অভ্যস্ত জুঁই আর শ্যামারা স্থান-কাল বদলে ঘরে গিয়ে আবার জাহানারা, শামীমা হন। শিক্ষিত তথাকথিত প্রগতিবাদী পরিবারের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা হীনমন্যতা আর সংসারের অন্ধকারের উল্টো দিকে লড়াই চালান জাহানারারা। সে সংগ্রাম নিজেদের রক্তমাংসের সঙ্গে যত্নে একান্তে বড় হয়ে ওঠা সন্তানকে পাচারকারী আর সমাজবিরোধীদের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য।

শনিবার (৩১ মার্চ) রাতে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় এ নাটকটি। ‘জাহানারা-জাহানারা’ নাটক মঞ্চায়ন করেছে ভারতের নাটকের দল 'হ য ব র ল'। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন উপমহাদেশের প্রখ্যাত অভিনেতা-নির্দেশক চন্দন সেন।

নাটকের অন্য চরিত্রে অভিনয় করেছেন তপন বিশ্বাস, বিন্দিয়া ঘোষ, পার্থ চৌধুরী, স্বপন সিংহ রায়, ঋতু চক্রবর্তী, সঞ্জয় বসু, মৌমিতা চক্রবর্তী, সুভাষ মৈত্র, পতিত পাবন মন্ডল, শ্যামল দে প্রমুখ।

নাটকটি সম্পর্কে এর নির্দেশক চন্দন সেন বাংলানিউজকে বলেন, জীবনবোধের নিগূঢ় ইতিবৃত্ত নিয়ে গড়ে উঠেছে নাটক ‘জাহানারা-জাহানারা’। এখানে সমাজের বিভিন্ন জাত-বর্ণের যেসব হীনমন্যতা, কুসংস্কার আর সমাজবিরোধীদের কার্যকলাপ ছড়িয়ে আছে, সেগুলোই মূলত তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।

‘জাহানারা-জাহানারা’ মঞ্চায়নের আগে সংক্ষিপ্ত আলোচনায় অংশ নেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। তিনি এসময় বলেন, নাটক হচ্ছে বিশ্বাসের জায়গা। এটিকে জীবনবোধ থেকে প্রবলভাবে বিশ্বাস করতে হবে এবং আমাদের হৃদয়ে ধারণ করতে হবে।

এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। অনুষ্ঠানে দুই বাংলার নাটকের পাঠাভিনয়ে অংশ নেন ভারতের চন্দন সেন ও বিন্দিয়া ঘোষ এবং বাংলাদেশের অধ্যাপক আব্দুস সেলিম ও তপন হাফিজ।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৮
এইচএমএস/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।