ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

অনুভূতির রঙে সৃষ্টি-শান্তি-বিস্ময়

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর, ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
অনুভূতির রঙে সৃষ্টি-শান্তি-বিস্ময় নুসরাত জাহান নাজলীর চিত্রকর্ম। ছবি: জিএম মুজিবুর

ঢাকা: প্রকৃতির আদর্শ রূপের চেয়ে বাস্তবতাকে তুলে ধরায় শিল্পীর আগ্রহ বেশি। এজন্য দৃশ্যের মাঝে সাদৃশ্য তৈরি করতে তিনি চিত্রকর্মে যোগ করেছেন নানান ধরনের উপকরণ। সৃষ্টিশীল ভাবনার সঙ্গে ক্রাফটের অন্তঃযোগে শিল্পীর সৃজন হয়ে উঠেছে অনন্য। এমন অনন্য শিল্পকর্ম নিয়েই ‘গ্যালারি চিত্রকে’ শুরু হলো শিল্পী নুসরাত জাহান নাজলীর চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ‘সৃষ্টি, শান্তি ও বিস্ময়’।

শুক্রবার (২০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করা হয়। দেশবরেণ্য চিত্রশিল্পী মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।

প্রর্দশনীতে স্থান পাওয়া ৩৩টি চিত্রকর্মে ফুটে উঠেছে আবহমান বাংলার ইতিহাস-ঐহিত্য। রঙের সঙ্গে বেত, কাঠের টুকরো, কাপড়, গয়নাসহ নানা ধরনের উপকরণ মিশিয়ে চিত্রশিল্পী ফুটিয়ে তুলেছেন তার শিল্পকর্মের অালাদা এক সৌন্দর্য। সেই সৌন্দর্য স্পর্শ করলে হৃদয়ে অনুভূতি জাগে, একটা ভালো লাগার ঘোর কাজ করে।  

তেমনটাই বললেন কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক। বলেন, ‘শিল্পীর কাজে যত্ন আছে, ভালোবাসা আছে। আছে কষ্ট, আছে ত্যাগ। এজন্য ছবিগুলো দেখলে একটা শান্তির অনুভূতি হয়। একটু বিস্মিত হতে হয়, কিভাবে কাজটা করা! যেন খানিকটা বিভ্রমের মতো। ’

মনিরুল ইসলাম বলেন, চিত্রকর্মগুলোতে শিল্পীর চিন্তার জগতটা একটু অন্যরকম। শিল্পে কৌশল বেশি থাকলে শিল্পই মরে যায়, তাই একটা নির্দিষ্ট সময়ে কৌশলকে শেষ করে দিতে হয়। শিল্পী তাই করেছেন। নিজের অনুভূতি নিয়েই তিনি ছবি এঁকেছেন। দেশীয় ঐতিহ্য নিয়ে আঁকা ছবিগুলোতে বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তন এসেছে বিষয়বস্তুর। পরিমিত রং, ভালো বিষয়বস্তু আর যত্ন ছবিগুলোর অনন্য গুণ। নুসরাত জাহান নাজলীর চিত্রকর্ম ঘুরে দেখেন অতিথিরা।  ছবি: জিএম মুজিবুরবরেণ্য এ শিল্পীর মতে, এ ছবিগুলো সাধারণ অঙ্কন থেকে একটু অন্যরকম। শিল্পী এখানে রংয়ের সঙ্গে বিভিন্ন উপাদান ব্যাবহার করেছেন। তার গয়না, কাপড়ের অংশ ইত্যাদি ‘শিল্পীর সেলফ অব আর্ট’কে ফুটিয়ে তুলেছে। আঁকার ইচ্ছে আর বাসনা থেকে তার যে চেষ্টা, তা মোটামুটি স্বার্থক।

প্রদর্শনীতে শিল্পী তার একাকিত্ব আর শখ থেকে সময়যাপনের জন্য হাতড়ে বেড়িয়েছেন স্মৃতি। সেসব স্মৃতিতে আছে শৈশবের উচ্ছ্বাস, কৈশোরের রঙিন ভালোলাগা। আছে প্রেম আর প্রকৃতির নিসর্গ রূপ। শিল্পীর গন্তব্য, প্রকৃতি ও জীবন, সংগ্রহ, পালের হাওয়া লাগলো মনে, পারাপার, চন্দ্রিমা, অরণ্য, নববধূ, নীল দরজা, কুলা, ১৯৭১’র সময়, ১৯৭১’র চিঠি, ঐতিহ্য, স্মৃতির পাতায়, গোল হাতলসহ ৩৩টি শিল্পকর্ম এমন কথাই বলে।

চিত্রশিল্পী নুসরাত জাহান নাজলী বলেন, ‘আমার এ ছবিতে হাত দিলে আলাদা একটা অনুভূতি পাওয়া যাবে। শখের বশে বিভিন্ন সময় একাকিত্বের জায়গা থেকে স্মৃতি হাতড়ে এ ছবিগুলো আঁকা। ছবিগুলো কোলাজ এবং থ্রিডি ধাঁচের। রঙের সঙ্গে অনুভূতির সংমিশ্রণে তুলে ধরা হয়েছে বিষয়বস্তুকে। ’

শিল্পীর সপ্তম এ একক প্রদর্শনী শেষ হবে আগামী ৩০ এপ্রিল। সর্বসাধারণের জন্য প্রদর্শনী খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৮
এইচএমএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।