পাতাঝরা গাছের নগ্ন ডালে শিশিরের মতো মৃত্যুরা ঝুলে থাকে
পানির মতো অবলীলায় প্রতিনিয়ত আমি সে মৃত্যুকে গিলি
একটা আহত পায়রা মুক্তির গান গাইবে বলে
অবরোধের শহরে মুষ্টিবদ্ধ উদ্বাহু হাতে হুংকার তুলি
উত্তাল রাজপথে পায়ের ছাপ রেখে যে কবি গুম হয়েছিল
তারই পথরেখায় আজ আমি বিদ্রোহের নিশান উড়াই
কবিই পারে শ্লোগানমুখর মিছিলে সুর দিতে, ছন্দ দিতে
কবিই পারে ক্ষুধিত চোখের স্বপ্ন হয়ে ভরসা দিতে
রক্তের কার্পেটে পায়ের ছাপ ফেলে যে শাসক গদিতে চড়ে
কবির কাছে সেও নিরুপায় আত্মসমর্পণে মাথা নোয়ায়
হে অনুজ কবি তোমার প্রিয়া পথ চেয়ে ঘুমহীন প্রতীক্ষায়
বিরহের প্রহর দীর্ঘ হলে হৃদয় কঠিন হয়ে যায় পতিত হয়ে যায়
কণ্ঠ রোধের ভয় কিসের কারাগারের ভয় কবি কবে পায়
তোমার যৌবন বীজ রাজপথে ছিটিয়ে দাও দৃপ্ত পায়
কুয়াশার পরোয়ানা
হিম ঘন কুয়াশায় টুপটাপ শব্দে
মৃত্যুর পরোয়ানা নামে আঙিনার ঘাসে
টলমলে শিশিরের ধুসর খামের উপর
ঠিকানা বিহীন প্রাপকের ছদ্মনাম লেখা থাকে
জলার মাছ তার খবর জানে
যেদিন নাকে মসলার গন্ধ ভাসে
হাইঞ্জার আন্ধারে বাদুরের পাখার ঝাপটায়
পরোয়ানা পৌঁছে যায় খিল আঁটা বন্ধ ঘরে
উত্তরের বাতাসে শীত জাঁকিয়ে এলে
কাঁথার আড়ালে ঢাকে লোকালয়
তখন ফসলের শূন্য মাঠে
অতৃপ্ত আত্মা ছটফট করে ছুটে
তারই রক্ত শুষে ফনফনা হয়
পালানের মাঁচায় লাউয়ের কুমারী ডগা
আর আমি নির্বোধের মতো সকাল বিকাল
পানি ঢালি ভুল স্বপ্নের গোড়ায়
জলস্বপ্ন
চারপাশে সব কিছু যখন বিবর্ণ আর বিরস হয়ে আসে
তখনও কিছু সবুজ রঙ বেঁচে থাকে আশার প্রতীক হয়ে
তখনও কিছু পাখির ডানা ঝাপটানোর শব্দ কানে বাজে
মগরিবের কালে রক্তিম মেঘেও যেমন কিছু সাদা মেঘ থাকে
আমি বেঁচে থাকার ভরসা পাই, সুরঙ্গের মুখে আলোর রেখা খুঁজি
যেমন সাপের মুখে অর্ধগেলা ব্যাঙও বাঁচার আলৌকিক পথ খোঁজে
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৮
এসএনএস