ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

আবুল হাসান সাহিত্য পুরস্কার-সম্মাননায় ৪ সাহিত্যিক ভূষিত

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩০৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
আবুল হাসান সাহিত্য পুরস্কার-সম্মাননায় ৪ সাহিত্যিক ভূষিত আবুল হাসান সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ ও বিশেষ সম্মাননা অনুষ্ঠান। ছবি: ডি এইচ বাদল

ঢাকা: রাষ্ট্রীয় সীমানা পেরিয়ে বাংলা ভাষাভাষী সব লেখকের মধ্যে যোগসূত্র গড়ার প্লাটফর্ম হিসেবে ২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করে অনলাইন সাহিত্য পত্রিকা পরস্পর ডট কম। একইসঙ্গে প্রকাশনায় পেশাদারিত্ব, আপোসহীনতা, গুনগত মান নিয়ে ২০০৩ সালে আত্মপ্রকাশ করে অগ্রদূত প্রকাশনী। 

এ দুই প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত উদ্যোগেই দেওয়া হলো ইউসিবি আবুল হাসান সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭। আর এ পুরস্কারসহ আজীবন ও বিশেষ সম্মাননায় ভূষিত হলেন দেশের চার সাহিত্যিক।

সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আবুল হাসান সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ ও বিশেষ সম্মাননা শীর্ষক আয়োজনে শিক্ষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ অধ্যাপক হায়াৎ মামুদকে ‘পরস্পর-অগ্রদূত’ আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।  

এছাড়া গল্পের বাঁকবদলে বিশেষ অবদানের জন্য কাজল শাহনেওয়াজ ও কবিতার বাঁকবদলে বিশেষ অবদানের জন্য সাজ্জাদ শরিফকে দেওয়া হয় বিশেষ সম্মাননা।  

অনুষ্ঠানে তরুণ কবি অনুপম মণ্ডলকে তার কাব্যগ্রন্থ ‘অহম ও অশ্রুমঞ্জরি’র জন্য আবুল হাসান সাহিত্য পুরস্কার ২০১৭ দেওয়া হয়। পুরস্কার হিসেবে এসময় তাকে একটি ক্রেস্ট ও অর্থমূল্য হিসেবে ১ লাখ ১ হাজার ১০১ টাকা দেওয়া হয়।

সন্ধ্যায় পরস্পর ও অগ্রদূতের যৌথ আয়োজনে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।  

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক, নাট্যজন নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও কবি আলতাফ হোসেন।  

স্বাগত বক্তব্য দেন পুরস্কার ও সম্মাননা প্রদান কমিটির মূখ্য সমন্বয়ক সোহেল হাসান গালিব।

হায়াৎ মামুদ বলেন, ‘আমার অশেষ সৌভাগ্য আপনারা আমাকে এখানে ভালোবেসে ডেকে এনেছেন। মাঝে মাঝে মনে হয় এ ধরনের সম্মাননা প্রাপ্য হতেও পারে। কেননা, সারাজীবন পড়ানো এবং পড়াশোনা ছাড়া আর কিছুতো করিনি। শিল্প, সাহিত্যের সঙ্গে যারা যুক্ত, তারা চায় তাদের কেউ ভালোবাসুক। ’

হাসান আজিজুল হক বলেন, ‘হায়াৎ মামুদের আজীবন সম্মাননা প্রাপ্তিতে আমি আনন্দিত, উৎফুল্ল। তিনি বিদেশি সাহিত্যের সঙ্গে আমদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। টলস্তয়, দস্তয়ভস্কি তিনি অনুবাদ করেছেন। টাটকা ছানার তৈরি মিষ্টি যেমন সুস্বাদু, তেমনি সুস্বাদু তার গদ্য। আমাদের মধ্যে আর কেউ এভাবে লেখেনি। তিনি আমাদের এমনি লেখা আরো উপহার দেবেন এটাই প্রত্যাশা।  
কাজল শাহনেওয়াজ ও তার সমসাময়িক অনেকেই তাদের গল্পের মধ্য দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন যে, লেখার পুরনো ধাচের ধার কমে গেছে। সেখান থেকে একটা বাঁক বদল প্রয়োজন। তবে তিনি খুব কম লিখেছেন। আমরা তার কাছ থেকে আরো লেখা প্রত্যাশা করি। ’

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সত্যিকার অর্থে কবি-সাহিত্যিকদের সম্মানিত করতে হলে পাঠককে দোকান থেকে তাদের বই কিনে পড়তে হবে। আবুল হাসান ছিলেন একজন প্রতিভাবান ও সম্ভাবনাময়ী কবি। তিনি বাংলা কবিতায় একটি নতুন ধারার প্রবর্তন করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তিনি অল্প বয়সে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।

মন্ত্রী এসময় ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) লিমিটেডকে এই কবির নামাঙ্কিত নতুন সাহিত্য পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বিশেষ সম্মাননা প্রাপ্তদেরকেও পুরস্কার হিসেবে অর্থ প্রদান করার জন্য ইউসিবিএল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান।

এর আগে সন্ধ্যায় তানজীল ফাতেমা পিয়াল কবি আবুল হাসানের কবিতা আবৃত্তির মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা করনে। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সারিকা পারভীন সুমা।

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৭ ঘণ্টা; সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৮
এইচএমএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।