বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে শুরু হওয়া ঢাকা লিট ফেস্টের প্রথম দিনে এ অধিবেশনে কথা বলেন- বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখক মনিকা আলী, ব্রাজিলের লেখক মারিয়া ফিলোমেনা বইসো লেপেসকি, ফিনল্যান্ডের মিন্না লিন্ডগ্রেন ও ব্রাজিলিয়ান বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেখিকা ইয়ারা রড্রিগেজ। সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন ভারতীয় লেখিকা সুমনা রায়।
বাংলা একাডেমির আব্দুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে আয়োজিত এ অধিবেশনের শুরুতেই মডারেটর সুমনা রায় প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন লেখিকাদের কাছে, তাহলে- গল্প কী?
এর জবাবে মনিকা আলী বলেন, গল্প হলো ছোট ছোট ঘটনাকে আবেগ বা কাব্যিকতার ছোঁয়ায় বড় একটা সংগঠনে রূপান্তর করা।
মিন্না লিন্ডগ্রেন বলেন, লেখক হিসেবে সামাজিক জীবেনর গল্পগুলো তুলে ধরা আমার কাজ। আমি নিজে বয়স্ক মানুষের গল্প লিখতে পছন্দ করি। আমার সাম্প্রতিক বইয়ে বয়স্কদের ভালোবাসা ও অপ্রাপ্তির বিষয় ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। আমার কাছে গল্প হলো সমাজের কথা বলা।
মারিয়া ফিলোমেনা বইমো লেপেসকি বলেন, সবার জন্যই কল্পনাশক্তি খুব জরুরি। আমরা বই পড়লে সুন্দর করে কল্পনা করতে শিখি। সে জন্য আমার কাছে গল্প মানে মনোরঞ্জনের মাধ্যম।
অন্যদিকে ইয়ারা রড্রিগেজ বলেন, যেহেতু আমি নারীবাদী লেখিকা, সে ক্ষেত্রে আমার কাছে গল্প হলো, সমাজে নারীদের প্রতিচ্ছবিকে বইয়ের পাতায় ফুটিয়ে তোলা। নারীদের অধিকার, সুবিধা ও অসুবিধাগুলো গল্প দিয়ে ফুটিয়ে তুলতেই আমি সাহিত্য রচনা করি।
লেখকদের উদ্দেশ্যে সুমনা রায়ের পরের প্রশ্ন ছিল- আপনারা লেখক হিসেবে আর পাঠক হিসেবে কেমন করে নিজেদের উপস্থাপন করেন?
এর জবাবে মারিয়া ফিলোমেনা বলেন, আমি ছন্দময় মানুষ। সবসময় ব্যালে নাচের ছন্দ অনুসরণ করি। সে জন্য আমার লেখা গল্পগুলোতেও ছন্দ খুঁজে পাওয়া যায়।
মিন্না লিন্ডগ্রেন বলেন, অনেকে মনে করে, আমি খুব হালকা বিষয় নিয়ে লিখি। আমি আধুনিক সমাজের বয়স্করা কী করে বা কী করা উচিত এমন বিষয় নিয়ে লিখলেও আমার লেখায় প্রচুর হিউমার থাকে, সে জন্য মানুষ এগুলোকে হালকা মনে করে। যদিও সঙ্গীতের ক্ষেত্রে আমার পছন্দ শাস্ত্রীয় সঙ্গীত।
এর জবাবে ইয়ারা রড্রিগেজ বলেন, আমার লেখার বিষয়ের সঙ্গে ভারী সঙ্গীতের মিল পাওয়া যায় না। আমি পছন্দ পপ মিউজিক। আর লেখালেখি করি নারীর অধিকার নিয়ে, কলোনিয়াল ফেমিনিজম নিয়ে।
ধাপে ধাপে মডারেটর লেখকদের লেখালেখির সংগ্রাম ও বিপর্যয় নিয়ে প্রশ্ন করেন। এর জবাবে মনিকা আলী জানান, বাংলাদেশি হয়ে ব্রিটিশদের কাছে নিজের লেখা তুলে ধরতে প্রচুর সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে।
মারিয়া ফিলোমেনা জানান, নিজের লেখা বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে তাকে নতুন করে ইংরেজি ভাষাটিই রপ্ত করতে হয়েছে। অন্যদিকে ইয়ারা রড্রিগেজ জানান, নারীবাদী লেখার জন্য বিভিন্ন সময় প্রকাশকরা তার প্রচুর লেখা বাতিল করেছে।
আরও পড়ুন::
>>> পর্দা উঠলো ঢাকা লিট ফেস্ট’র
>>> ঢাকা লিট ফেস্ট: প্রাঙ্গণজুড়ে নানা আয়োজন
বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
ডিএন/এইচজে