ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

আবারও জমবে মঞ্চ, আশা নাট্যকর্মীদের

দীপন নন্দী, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২০
আবারও জমবে মঞ্চ, আশা নাট্যকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুরু হয়েছে নাটকের মঞ্চায়ন

ঢাকা: ‘অনেকদিন পর বহু পরিচিত মানুষের মুখ দেখলাম। এটাই অনেক বেশি আনন্দের।

আশা করছি, আবারো জমে উঠবে মঞ্চ। ’

কথাগুলো বলছিলেন নাট্যকর্মী আহম্মদ গিয়াস। পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সবকিছু এখন খুলে গেছে৷ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মঞ্চও আজ চালু হলো। শিগগিরই শিল্পকলা একাডেমিও খুলবে বলে আশা করছি।

করোনার দহনকালে প্রায় সাড়ে ৫ মাস বন্ধ থাকার পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার (২৮ আগস্ট) আবারও শুরু হয়েছে নাটকের মঞ্চায়ন।

রাজধানীর বেইলি রোডের মহিলা সমিতির নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে মান্নান হীরা রচিত ও সুদীপ চক্রবর্তীর নির্দেশিত শূন্যন রিপারেটরি থিয়েটারের নাটক ‘লাল জমিন’। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক এ নাটকে একক অভিনয় করেছেন মোমেনা চৌধুরী।

কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শক প্রবেশ করেছেন মিলনায়তনে। মিলনায়তনে দুই আসন পর পর একজন করে দর্শক বসেন। আর নাটক দেখতে আসা দর্শককে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পড়তে হয়। সেইসঙ্গে প্রবেশমুখে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হয় এবং হাতে এবং পায়ে স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মিলনায়তনে প্রবেশে সময় লাগবে, যার জন্য আগেভাগেই মহিলা সমিতিতে আসতে শুরু করেন নাট্যপ্রেমীরা। সাধারণ দর্শকদের পাশাপাশি হাজির হয়েছিলেন বিভিন্ন নাট্যদলের কর্মীরাও। দীর্ঘদিন পর মঞ্চ খুলে যাওয়ার উচ্ছ্বাস ছিলো তাদের কণ্ঠে।

নাটক দেখতে আসা যশোরের বিবর্তন নাট্যদলের ঢাকা শাখা নাট্যকর্মী সজীব বিশ্বাস বলেন, নিউ নরমাল লাইফে একসময় সবকিছুই শুরু হবে। তাহলে নাটক কেন বন্ধ থাকবে? পাচঁ মাস তো অপেক্ষা করা হয়েছে। এবার সূচনা হলো। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এমন প্রদর্শনীর আয়োজন আমাদের উদ্দীপ্ত করেছে। স্থবিরতা ভেঙে নাট্যাঙ্গনে বইছে স্বস্তির সুবাতাস। আর দর্শকের কথা যদি বলি, সেক্ষেত্রে সবাই মঞ্চনাটক দেখে না। যারা দেখার তারা ঠিকই আসবে। সেজন্য দর্শকেরও অভাব হবে না।

বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল চন্দন রেজা বাংলানিউজকে বলেন, করোনার এ সময়ে নাটক মঞ্চায়নের দুইটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে। একটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা। যার পুরোটাই শুক্রবার মেনে চলা হচ্ছে। দ্বিতীয় বিষয় দর্শকের আগমন। সেটিও হয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী এক-তৃতীয়াংশ দর্শক দিয়ে নাট্য মঞ্চায়ন হলে নাট্যদল টিকবে না। এর জন্য দরকার পৃষ্ঠেপোষকতা।

নাট্যকর্মী আসলাম অরণ্য বলেন, গত কয়েকমাসে করোনার কারণে আমরা একটা ট্রমার মধ্যে যাচ্ছিলাম। সেখান থেকে নাটক আমাদের মুক্তি দিতে পারে। সবকিছু যেহেতু খুলে যাচ্ছে, তাহলে নাট্য মঞ্চায়ন বন্ধ রাখা উচিত হবে না।

এখন থেকে নিয়মিত নাট্য প্রদর্শনীর আশাবাদ ব্যক্ত করেন মহিলা সমিতি মিলনায়তনের ব্যবস্থাপক গাজী ইব্রাহীম ফিরোজ। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে সেপ্টেম্বর মাসে প্রদর্শনীর জন্য তিনটি নাট্যদল হল বরাদ্দ চেয়েছে। এই
সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।

এ কথা বলা বাহুল্য, নতুন করে নাট্য মঞ্চায়নে সবচেয়ে বেশি উচ্ছ্বসিত ছিলেন মোমেনা চৌধুরী। কারণ, নিজের একক নাটক মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে মঞ্চ নাটক আবারো চালু হয়েছে।

বাংলানিউজকে মোমেনা চৌধুরী বলেন, প্রথম যেদিন মঞ্চে উঠেছিলাম, অভিনয় করেছিলাম সেদিনের মতো অনুভূতি হচ্ছে। এ পাঁচ মাস বহু মানুষ আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমিও চলে যেতে পারতাম। কিন্তু আমি বেঁচে আছি এবং আবারও ‘লাল জমিনে’ অভিনয় করছি।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৮, ২০২০
ডিএন/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।