ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

শিল্প-সাহিত্য

নানা আয়োজনে মোংলায় কবি রুদ্রের জন্মদিন উদযাপন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২০
নানা আয়োজনে মোংলায় কবি রুদ্রের জন্মদিন উদযাপন কবি রুদ্রের জন্মদিন উদযাপন। ছবি: বাংলানিউজ

বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলায় নানা আয়োজনে 'ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ গানের স্রষ্টা তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহর ৬৪তম জন্মদিন উদযাপিত হয়েছে।  

দিনটি স্মরণে শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সকালে মোংলা উপজেলার মিঠাখালীতে কবির নিজ গ্রামে রুদ্র স্মৃতি সংসদ সকালে শোভাযাত্রা সহকারে তার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

পরে অনুষ্ঠিত হয় দোয়া মাহফিল এবং বিকেলে মোংলা প্রেসক্লাবে স্মরণসভার আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, মোংলা শাখা।  

করোনাকালীন দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে এবার সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সীমিত পরিসরে সংসদ এ আয়োজন করেছে।

বাংলাদেশের কবিতা জগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র, তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ১৯৫৬ সালের এই দিনে (১৬ অক্টোবর) মোংলা উপজেলার মিঠাখালী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৪ সালে ঢাকা ওয়েস্ট অ্যান্ড হাইস্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৭৬ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন বাগেরহাটের এই কৃতি সন্তান কবি রুদ্র মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ।

স্বল্প জীবনে তিনি অনেক কবিতা, ছোটগল্প ও নাটক রচনা করেছেন। তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে উপদ্রুত উপকূল, ফিরে চাই স্বর্ণগ্রাম, মানুষের মানচিত্র, ছোবল, গল্প, দিয়েছিলে সকল আকাশ, মৌলিক মুখোশ।

ছোট গল্পের মধ্যে রয়েছে সোনালি শিশির। বিষ বিরিক্ষের বীজ নাটকেরও রচয়িতা তিনি। ‘ভালো আছি ভালো থেকো’ সহ অর্ধ শতাধিক গান রচনা ও সুরারোপ করেছেন তিনি। পরবর্তীকালে এ গানটির জন্য তিনি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি প্রদত্ত ১৯৯৭ সালের শ্রেষ্ঠ গীতিকারের (মরণোত্তর) সম্মাননা লাভ করেন। এর আগে কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ ১৯৮০ সালে মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন রুদ্র মোহাম্মাদ শহিদুল্লাহ।

অকাল প্রয়াত এই কবি তার কাব্যযাত্রায় যুগপৎ ধারণ করেছেন দ্রোহ ও প্রেম, স্বপ্ন ও সংগ্রামের শিল্পভাষ্য। ‘জাতির পতাকা আজ খামচে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন’ এই নির্মম সত্য অবলোকনের পাশাপাশি ততোধিক স্পর্ধায় তিনি উচ্চারণ করেছেন ‘ভুল মানুষের কাছে নতজানু নই’। যাবতীয় অসাম্য, শোষণ ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে অনমনীয় অবস্থান তাকে পরিণত করেছে ‘তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক’-এ। একই সঙ্গে তার কাব্যের আরেক প্রান্তর জুড়ে রয়েছে স্বপ্ন, প্রেম ও সুন্দরের মগ্নতা। দেশ ও জাতির সংকটে রুদ্রের কবিতা হয়ে উঠেছে তারুণ্যের হাতিয়ার। ক্ষনজন্মা এই কবি ১৯৯১ সালের ২১ জুন মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫: ৪০ ঘণ্টা, ১৬ অক্টোবর ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।