ঢাকা: জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিক্ষিত বন্ধু। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর প্রথম যে কয়টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল, জাপান তাদের মধ্যে অন্যতম।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইটের শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে হোটেল ওয়েলকো নারিতায় স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বিমানের মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী। মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তিনি।
মাহবুব আলী বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স সরাসরি ঢাকা ও নারিতার মধ্যে বিমান যোগাযোগ চালু করায় সম্মানিত জাপান প্রবাসীগণ সবথেকে বেশি সুফল লাভ করবেন। তাদের ট্রানজিট ভোগান্তি দূর হবে। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন মেগাপ্রকল্পে অসংখ্য জাপানি নাগরিক যুক্ত আছেন তারাও এর সুফল ভোগ করতে পারবেন। সর্বোপরি, বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে ফলে, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাবে এবং উভয় দেশের নাগরিকগণ এর সুফল পাবেন।
বিমান পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফা কামাল উদ্দীন সভায় বলেন, বিমানের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট দুই দেশের এভিয়েশন শিল্প ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। বাংলাদেশের সাথে জাপানের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে এবং নিত্য নতুন সহযোগিতার খাত উন্মোচিত হবে।
সভার সভাপতি ছিলেন বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম। তিনি বলেন, বিমানের ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করেছে। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, সাংস্কৃতিক বিনিময় হবে, পাশাপাশি পর্যটন শিল্পেরও প্রসার ঘটবে। এই রুটটি চালুর ক্ষেত্রে সার্বিক নির্দেশনা ও আন্তরিক সহযোগিতা প্রদানের জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলীকেও ধন্যবাদ জানান। একই সাথে জাপান ও বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তাবৃন্দ, নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ, জিএসএ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদেরকে এবং জাপানিজ ডেলিগেটসদের বিমানে ভ্রমণের আমন্ত্রণ জানান।
জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ বলেন, জাপানের সাথে সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা সহজে মাতৃভূমিতে যাতায়াত করতে পারবেন। যাত্রাকালীন ভোগান্তি কমে আসবে। পাশাপাশি দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নে এটি কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
বিমান ঢাকা-নারিতা ফ্লাইট চালু করায় নেপালের রাষ্ট্রদূত ড. দুর্গা বাহাদুর সুবেদি বিমান কর্তৃপক্ষকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এর ফলে নেপালের নাগরিকগণও উপকৃত হবেন। জাপানের অতিথিবৃন্দ তাদের বক্তব্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে জাপানে স্বাগত জানান এবং নতুন এই রুটটির সফলতার বিষয়ে শুভ কামনা জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে বিমান সাংস্কৃতিক দলের অংশগ্রহণে বাংলাদেশ ও জাপানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নির্ভর এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর বিমানের ঢাকা-নারিতা রুটের প্রথম ফ্লাইট বিজি-৩৭৬ নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর ওয়াটার ক্যানন স্যালুট দিয়ে স্বাগত জানানো হয়। এদিন নারিতা থেকে বিমানের প্রথম ফ্লাইট বিজি৩৭৭ ঢাকার উদ্দেশ্যে যাত্রাকালে প্রতিমন্ত্রী ও বিমান ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ নারিতা বিমানবন্দরে যাত্রীদেরকে শুভেচ্ছা জানান।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩
এমকে/এমজে