ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ই-মেইলে কেভিনের দুর্নীতি, বিমানে তোলপাড়

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪
ই-মেইলে কেভিনের দুর্নীতি, বিমানে তোলপাড় ছবি: কেভিন স্টিল/বাংলানিউজ ফাইল ফটো

ঢাকা: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বছরের পর বছর ধরে লোকসানে নিমজ্জিত। কেউই একে উদ্ধার করতে পারছে না।

আর তখনই সরকার ও বিমানের চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আহমেদ নিয়ে এলেন ‘আলাউদ্দিনের চেরাগ। ’ এই চেরাগের নাম ‘কেভিন স্টিল’।     

ব্রিটিশ নাগরিক কেভিন স্টিল বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সে যোগ দিলেন গেল বছরের মার্চে। দেখতে দেখতে বিমানে তার ১১ মাস কেটে গেল। এই সময়কালে বিমানে তার উপহার ২১৪ কোটি টাকার লোকসান। তবে ১১ মাসে আলোচিত ঘটনাটি ঘটে গেল কয়েকদিন আগে।

সর্ষে ভূতের মতো কেভিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে। যে কিনা বিমানকে হাজার হাজার কোটি টাকার লোকসান থেকে বের করে আনবেন, সংস্থার ত্রাতা হয়ে দুর্নীতি-ঘুষ বন্ধ করবেন। দায়িত্ব নিয়েই তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন- দুই বছরের মধ্যে বিমানকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করবেন। এ সংক্রান্ত একটি ই-মেইল এসেছে বিমানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কাছে।

দুর্নীতি সংক্রান্ত এই ই-মেইল চিঠি পেয়ে প্রচণ্ড চটেছেন কেভিন। বিষয়টি নিয়ে বিমানের শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তিদের মধ্যে যেমন ব্যাপক আলোচনার খোরাক হয়েছে, তেমনি পুরো সংস্থার কর্মীদের মধ্যেই কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

এক কর্মী নাম না প্রকাশের শর্তে বাংলানিউজকে বলেন, ৩০ লাখ টাকার প্রধান নির্বাহী এনে যদি লোকসান হয় আর তিনি নিজেই যদি দুর্নীতি করেন তাহলে তাকে দিয়ে কিভাবে বিমানের উন্নতি সম্ভব।

ওই ই-মেইলে তার অতীত কর্মজীবনের রেকর্ড যে ভালো নয় তা নিয়ে তথ্য দিয়ে বলেছে, ব্রিটিশ এয়ারওয়েজে তার চাকরি বেশি দিনের ছিল না। সেখানে তিনি জুনিয়র পর্যায়েই কাজ করেছেন। এর বাইরে আরো যে দু’টি এয়ারলাইন্সে কাজ করেছেন তার মধ্যে এসএএমএ এয়ারলাইন্সে তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ রয়েছে। একটা সময় এয়ারলাইন্সটি বন্ধ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে তার অবদানও ছিল।  

কেভিনের বিরুদ্ধে জেনারেল সেলস এজেন্ট (জিএসএ) নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে ওই ই-মেইলে।

এতে বলা হয়েছে, জিএসএ নির্বাচনের ক্ষেত্রে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কেভিন। শুধু তা-ই নয় এদের সাক্ষাৎকার, বিভিন্ন দেশ সফর করে জিএসএ’র বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া থেকে শুরু করে চূড়ান্ত নিয়োগ তার হাত দিয়েই হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে বিমানের কাউকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এই সফরের ক্ষেত্রে জিএসএ এবং কেভিনের মধ্যে কি আলাপ আলোচনা হয়েছে এবং লেনদেন হয়েছে তা একমাত্র তিনিই জানেন।

তার সফরের পর বিভিন্ন দেশ থেকে জিএসএ এজেন্টরা প্রেজেন্টেশন দেওয়ার জন্য বিমানের প্রধান কার্যালয় বলাকায় আসেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ সংক্রান্ত কমিটিকে পাশ কাটিয়ে তিনিই জিএসএ নিয়োগ চূড়ান্ত নিয়োগ দেন।       

বাংলাদেশ সময়: ০৮১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।