ঢাকা: বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা।
কয়েকটি দেশের উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে বিদেশি কূটনীতিকদের অবহিত করার পর তারা নিরাপত্তা বিষয়ে আশ্বস্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছে কূটনৈতিক সূত্র।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় বিকেল তিনটা থেকে চারটা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যপী এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন এবং সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকের বিষয়ে মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বাংলানিউজকে বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে সরকার যে ব্যবস্থাগুলো নিয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে সকল কূটনীতিককে একসঙ্গে জানালাম। আগে সবাই আলাদা আলাদাভাবে জানতেন। এবার সবাইকে একত্রে নিয়ে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো জানানো হয়েছে।
তিনি জানান, নতুন করে এসব দেশগুলোর কোনো আপত্তি বা পরামর্শ নেই। বরং আমাদের গৃহীত ব্যবস্থায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
রাশেদ খান জানান, উপস্থিত কূটনীতিকরা বলেছেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে আমাদের উদ্বেগকে উড়িয়ে না দিয়ে আমলে নেওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি। এক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি দেশের উদ্বেগের পর বাংলাদেশের বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে নানা পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে তাদের সুপারিশ অনুযায়ী, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় যৌথবাহিনী মোতায়েনসহ বিভিন্ন পর্যায়ে জনবল বাড়ানো হয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স নামে একটি বিশেষায়িত বাহিনী।
সম্প্রতি বাংলাদেশে পশ্চিমা স্বার্থের ওপর সম্ভাব্য হামলার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে ভ্রমণ সতর্কতা জারির পর ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা।
সরেজমিনে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দেখতে আসেন যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের প্রতিনিধিরা। এসব সফরে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে তারা নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ত্রুটিগুলো তুলে ধরে তা নিরসনে কয়েক দফা সুপারিশসহ প্রতিবেদন দেন।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না হলে ঢাকা-লন্ডন ফ্লাইট বন্ধ কিংবা ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর জন্য সরকারের উদ্যোগ থেমে যেতে পারে বলে জানানো হয়। এরই প্রেক্ষিতে ঢাকা থেকে কার্গো পাঠানোর বিষয়ে অস্ট্রেলিয়ার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়টিও অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।
তারা আগামী এপ্রিলের মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের জন্য একটি সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন।
সরকার বিষয়টি আমলে নিয়ে তাদের সুপারিশ অনুসারে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় যৌথ বাহিনী মোতায়েন করেছে। গঠিত হয়েছে অ্যাভিয়েশন সিকিউরিটি ফোর্স নামে একটি বিশেষায়িত বাহিনী। যারা ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছে। বিমান বাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে এ বাহিনী গঠন করা হয়েছে। দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তাদের প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলা হবে।
এছাড়া শাহজালাল বিমানবন্দরের অত্যাধুনিক নিরাপত্তা সরঞ্জাম সংগ্রহের প্রক্রিয়া চলছে। বিমানবন্দর এলাকার সকল স্ক্যানার যথাযথ ব্যবহারের পাশাপাশি যাত্রী পরিবহন এলাকায় সিসি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ভেহিক্যাল স্ক্যানারসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বসানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৬
জেপি/এএসআর