ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

এভিয়াট্যুর

রিজেন্টে আনন্দ অভিজ্ঞতা!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
রিজেন্টে আনন্দ অভিজ্ঞতা!

যান্ত্রিক জীবনে যখন ক্লান্তি ভর করে তখনই মন চায় একটু রিফ্রেশমেন্ট। ভ্রমণই সবচেয়ে বড় আনন্দ।

মনকে সতেজ করে তোলার উপায়। তাই যখনই হাপিয়ে উঠি চলে যাই ঢাকার বাইরে কিংবা দেশের বাইরে কোথাও।

অনেকেই জানতে চায় কোন এয়ারলাইন্সে যাচ্ছো? আমি চোখ বন্ধ করে বলে দেই রিজেন্ট আছে না? রিজেন্টেই আমার আস্থা। অনেকটা ভরসা হয়ে গেছে রিজেন্টের উপর। সবশেষ অতিসম্প্রতি মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর ভ্রমণের পর সে আস্থা আরও বেড়ে গেলো।

আসলে রিজেন্ট এয়ারে ভ্রমণের অত্যন্ত ভালো কিছু অভিজ্ঞতার কারণেই এই লেখা।  

আমি মনে করি এতে রিজেন্ট তার সর্বোচ্চ ভালো সেবাটুকু গ্রাহকদের দিতেই আরও বেশি উৎসাহী হবে। আর আরো নতুন নতুন সেবার মাত্রাও যোগ করবে।

রিজেন্টে এটাই আমার প্রথম ভ্রমণ নয়। আসলে প্রথমবার আকাশযানে চড়ার অভিজ্ঞতাও রিজেন্ট দিয়েই, ফলে সেই থেকেই মুগ্ধতা। সেটি ছিলো বছর কয়েক আগে ঢাকা-কলকাতা-ঢাকা রুটে। এবার ঢাকা-কুয়ালালামপুর ও সিঙ্গাপুর-ঢাকা ভ্রমণ হলো এ মাসেই।

প্রথম ভ্রমণের অভিজ্ঞতায়ই দেখেছি রিজেন্ট মানেই হচ্ছে সময়মতো ফ্লাইট ছেড়ে যাওয়া সময়মতো পৌঁছে দেওয়া।
এরপর অনেকবার দেশের ভেতরে এবং দেশের বাইরে ভ্রমণ হয়েছে। কখনো অফিসিয়াল, কখনো ব্যক্তিগত। আর অধিকাংশ সময়েই রিজেন্ট।

ভ্রমণের চেয়ে ভিসা করাটাই বেশ ঝক্কির। আর ভিসাটা একবার হয়ে গেলে আর যেন কোনো চিন্তা নেই, মনের ভেতরটা যেনো বলে ওঠে ‘রিজেন্ট আছে না!’

রিজেন্টে প্রথম বিদেশ ভ্রমণ নিয়ে আরেকটু বলি। গন্তব্য ছিল কলকাতা। যদিও স্বল্প সময়ের ভ্রমণ তবুও নার্ভাস ছিলাম। অনেকে অনেক কথা বলেছিল– বাংলাদেশের প্লেন ছাড়ার কোনো টাইম-টেবিল থাকে না। প্লেনের ভিতরে এই সমস্যা, ওই সমস্যা হাজারও কথা।

আমিও মনে মনে সকল নেতিবাচক প্রস্তুতি নিয়েই নিয়েছিলাম। কিন্তু সকল মানসিক প্রস্তুতিকে ব্যর্থ করে দিয়ে যথাসময়েই প্লেন ছাড়লো। কানের সমস্যা পুরোনো তাই কানে চাপ পড়া নিয়েও শঙ্কা ছিলো। কিন্তু প্লেন টেকঅফ করার কিছুক্ষণ পর তাও ঠিকও হয়ে গেলো।

ফ্লাইটের ভেতরটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। যত্নের ছাপ আছে। আর মনেই হলো যাত্রীদের জন্য এরা যথেষ্টেই সজাগ। কিসে ভালো হবে, কিসে সামান্য কষ্টটুকুও না হয় সে দিকে সতর্ক কেবিন ক্রুরা।

দেখলাম কিছু যাত্রীর অহেতুক যন্ত্রণা তারা পরম ধৈর্য্যের সাথে সহ্য করে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এতটুকু বিরক্ত না হয়ে হাসিমুখে সেই সেবা।

দেখে নিজে নিজে হাসলাম আর ভাবলাম ছোটবেলার ইচ্ছা মতো এয়ার হোস্টেস হইনি ভালই করেছি। নইলে কে সহ্য করতো যাত্রীদের অহেতুক এই যন্ত্রণা।

যাইহোক এসব নিয়ে ভাবতে ভাবতেই মনোরম প্যাকেটে খাবার চলে এলো। আরে বাহ! ৩০ মিনিটের একটু বেশি সময়ের জার্নি তাতেও আবার খাবার! খাওয়া শেষ হতে না হতেই প্লেন কলকাতার নেতাজী সুভাশচন্দ্র বসু ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট টাচ করলো।

আজ মনে করতে পারছিনা কি ছিলো খাবারের আইটেম। তবে গত সপ্তায় সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকা আসার পথে রিজেন্টের ফ্লাইটে খাবার ছিলো সত্যিই উপভোগ্য। উঠতেই দেওয়া হলো হালকা স্ন্যাকস। এরপর মূল খাবারে এলো ফ্রায়েড রাইস চিকেন। ভাত-মাছের অপশানও রয়েছে।   সঙ্গে কেবিন ক্রুদের সেই মুখে হাসি ছড়ানো সেবাতো রয়েছেই।

মনে পড়ছে এর সাত দিন আগেই ঢাকা থেকে রিজেন্টে মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা। সেই যাত্রায় অনেক বাংলাদেশি শ্রমিকরাও ছিলেন যারা মালয়েশিয়া যান। তাদের অনেক ধরনের যন্ত্রণাই সহ্য করতে হচ্ছিলো কেবিন ক্রুদের। তবে সবটাই হাসিমুখে।

অনেককেই বলতে শুনেছি ল্যান্ডিংয়ে ভীতিকর ঝাকি লাগে। কিন্তু রিজেন্টের ল্যান্ডিংয়ে কখনো এটা বোধ হয়নি।
এখানে আর একটা ব্যাপার না বললেই নয়। অন্য একটি দেশি এয়ারলাইন্সে একবার ব্যাঙ্কক যাচ্ছিলাম। সেবার ফেরার পথে সব মিলিয়ে পাঁচ ঘণ্টা ফ্লাইট ডিলেতে বড় ধকল পোহাতে হয়েছিলো। এরপর প্লেনে উঠে মনে হয়েছিলো যেন মাছের বাজারে ঢুকলাম। ওই তিক্ত অভিজ্ঞতার পর আমার আর কখনোই ইচ্ছা হয়নি ওই এয়ারলাইন্সে ট্রাভেল করি।

বিষয়গুলো শেয়ার করছিলাম অনেক প্রিয় একজন মানুষের সঙ্গে। জানালেন তারও রয়েছে রিজেন্টের সার্ভিসে মুগ্ধতা। রিজেন্ট এয়ারওয়েজের ওপর আস্থার কথাও বললেন তিনি। একাধিকবার ভ্রমণসঙ্গী কয়েকজন সহকর্মীও রিজেন্টের ব্যাপারে আমার সঙ্গে একমত পোষণ করেন।

সব মিলিয়ে রিজেন্ট সেরা। আর দেশীয় এয়ার লাইন্স হিসেবে রিজেন্টকেই আমার পছন্দ।

আমি মনে করি আমার এই লেখাটা যদি রিজেন্ট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষের নজরে আসে তাহলে তারা তাদের সেবার মান অক্ষুণ্ন রাখতেই আগ্রহী থাকবে। গ্রাহকদের দেবে বা আরো নতুন নতুন সেবা।
 
আর যার যা প্রাপ্য তা দিতে আমরা কার্পন্নই করবো কেনো।

আর একটা কথা বলি রিজেন্টের স্লোগানটাও আমার অনেক পছন্দ। ‘রিজেন্ট এয়ারওয়েজ: এভরি লিটল থিং কাউন্টস’। সত্যিই ছোটখাটো সব বিষয়েই ওদের সতর্কতা দেখেছি সবগুলো ভ্রমণে।

কেবলই ঘুরে এলাম মালয়শিয়া আর সিঙ্গাপুর থেকে। এরই মধ্যে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছি পরিবার নিয়ে আবার কোথায় যাওয়া যায়! ব্যাঙ্কক মন্দ নয়। শিডিউল একটু দূরের হলেও প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মনে মনে রিজেন্টকেই নির্ধারণ করে নিয়েছি ওই যাত্রার বাহন হিসেবে। কারণ রিজেন্টই সেরা।

বাংলাদেশ সময় ১৯৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
এমএমকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।