ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

এভিয়াট্যুর

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যের ১০০০ দিন

এভিয়াট্যুর ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৭
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যের ১০০০ দিন ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স পরিবার

ঢাকা: ধারাবাহিক সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে ১০০০ দিন পার করলো দেশের বেসরকারি উড়োজাহাজ পরিবহন খাতের অন্যতম আস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

১৭ জুলাই ২০১৪ সালে যাত্রা শুরু করে ইউএস-বাংলা একের পর এক অনন্য নজির স্থাপন করছে, অর্জন করেছে সাফল্যের মাইলফলক। মাত্র আড়াই বছরের কিছু বেশি সময়ে আকাশের উড়ালযাত্রায় যোগ করেছে নতুন সব সুবিধা।

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটি স্পর্শ করেও ধরে রেখেছে সে ধারা।

বাংলাদেশ তথা সারাবিশ্বের প্রতিযোগিতামূলক এভিয়েশন ব্যবসায় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল আজ থেকে ঠিক ১০০০তম দিন আগে। ৭৬ আসন বিশিষ্ট দু’টি কানাডার বোম্বারডিয়ার তৈরি ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ সিরিজের এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে। এরপর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আরও একটি ৭৮ আসনের ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট বহরে যোগ করে ইউএস-বাংলা।

শুরু থেকেই নিজস্ব ক্যাটারিং, নিজস্ব টেইলারিংসহ ইনহাউজ ট্রেনিং সুবিধা, আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ইন-ফ্লাইট সার্ভিসে যাত্রী সাধারণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে প্রতিষ্ঠানটিকে।

এক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সব চালু বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ফ্লাইট পরিচালনা করে সারা দেশের জনগণকে স্বল্পতম সময়ে আকাশপথের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা করেছে সুদৃঢ়। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, বরিশাল, রাজশাহী রুটে প্রতিদিন ফ্লাইট পরিচালনা করছে। অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনার সাফল্যের কথা বিবেচনা করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয়। যার ফলশ্রুতিতে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরুর দু’বছরের মধ্যে (১৫ মে ২০১৬) ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যাত্রা শুরু করে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি প্লেন/বাংলানিউজ ফাইল ফটোবর্তমানে কাঠমান্ডু ছাড়াও কলকাতা, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর রুটে নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করছে। আগামী ১৩ এপ্রিল চট্টগ্রাম থেকে কলকাতা এবং ৩ মে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ব্যাংকক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করতে যাচ্ছে।

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বহরে ১৬৪ আসনের তিনটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট যুক্ত করেছে। যাতে রয়েছে আরামদায়ক ৮টি বিজনেস ক্লাস ও ১৫৬টি ইকোনমি ক্লাসের আসন ব্যবস্থা। রয়েছে নিজস্ব ইন-ফ্লাইট ম্যাগাজিন ‘ব্লু স্কাই’। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সব এয়ারক্রাফট সম্পূর্ণরূপে ধূমপানমুক্ত। বর্তমানে সপ্তাহে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে ২০০টির বেশি ফ্লাইট পরিচালিত হয়।

১০০০ দিনে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স প্রায় ২৪ হাজার ফ্লাইট পরিচালনা করে বাংলাদেশে উড়োজাহাজ পরিবহনে এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স যাত্রা শুরুর পর আবহাওয়াজনিত কারণ ছাড়া কোনো ধরনের ফ্লাইট বাতিল করার কোনো নজির নেই। এখন পর্যন্ত ৯৮.৭ শতাংশ অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের। অভ্যন্তরীণ রুটে মোট যাত্রী সংখ্যার ৫০ শতাংশের বেশি যাত্রী বহন করছে ইউএস-বাংলা।

যাত্রীসেবার অনন্য নজির স্থাপন করায় স্বীকৃতিস্বরূপ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স অভ্যন্তরীণ রুটে গত তিনবছর যাবত সেরা এয়ারলাইন্সের মুকুট অর্জন করতে পেরেছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ১২শ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সে। যা দেশের বেকার সমস্যা সমাধানে কাজ করে যাচ্ছে। নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রেখে চলেছে। সঙ্গে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে বাড়িয়েছে দেশের সুনাম। বৈদেশিক ম‍ুদ্রা অর্জন করে দেশের অর্থনীতিকে করছে আরও সূদৃঢ়।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ১০০০তম দিনের চলার পথে এ ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ট্রাভেল এজেন্টের ব্যবসাকেও করেছে সুসংহত। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় দু’হাজার ট্রাভেল এজেন্ট রয়েছে ইউএস-বাংলার। যা সময়ের হিসেবে সত্যিই অকল্পনীয়। সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশের স্বনামধন্য সব করপোরেট ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহ করার জন্য রয়েছে অন-লাইন বুকিং সুবিধা। হোম ডেলিভারি সুবিধাও রয়েছে। সারাদেশে রয়েছে নিজস্ব ৩০টি সেলস অফিস। এছাড়া কাঠমান্ডু, কলকাতা, মাস্কাট, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, দোহা, কানাডা, নিউইয়র্কেও রয়েছে নিজস্ব সেলস্ অফিস।
ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য রয়েছে স্কাইস্টার প্যাকেজ। যার মাধ্যমে শুধু টিকেটেই সুবিধা পাবে না, বরং যাত্রীরা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ সুবিধাও পান।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদের বেশ কয়েকটি সার্ভিস দিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা, যা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে অ্যাভিয়েশন শিল্পে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- আন্তর্জাতিক রুটের বিজনেস ক্লাসের যাত্রীদের জন্য রয়েছে পিক-ড্রপ সার্ভিস, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণের পর ১০ মিনিটে ল্যাগেজ ডেলিভারি, ওয়েজ আর্নার্সদের জন্য বিমানবন্দরে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক, সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ২০ শতাংশ মূল্যছাড়, সামরিকবাহিনীর কর্মকর্তা ও গলফারদের রয়েছে ১০ শতাংশ মূল্যছাড়সহ নানাবিধ যাত্রীসুবিধা।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না, বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স দেশের বিভিন্ন  শিক্ষা, সামাজক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন খেলাধূলার উন্নয়নে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন ১০০০তম দিন অতিক্রম করা উপলক্ষে এ সাফল্যে যুক্ত সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন করপোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকসহ সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৩০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১১, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।