এয়ারলাইন্স ও বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এতথ্য জানা গেছে।
এরইমধ্যে চীনের সঙ্গে বিশ্বের ১৮টি দেশ ফ্লাইট বাতিল করলেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি বাংলাদেশ সরকার।
বাংলাদেশ থেকে চীনে প্রতিদিন সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, চায়না সাউদার্ন ও চায়না ওয়েস্টার্ন এয়ারলাইন্স। এছাড়া ড্রাগন এয়ারলাইন্স সপ্তাহে চার দিন হংকংয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এর বাইরে চীন থেকে অন্য দেশ হয়ে বাংলাদেশে আসছে আরো ৫টি এয়ারলাইন্স।
দেশীয় এয়ারলাইন্স ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা ভাইরাসের আগে চীনে যাওয়া যাত্রীর হার ছিলো ৭৫-৮০ শতাংশ। এখন সেই হার ২০-৩০ শতাংশে নেমে এসেছে। তবে চীনে যাওয়ার হার কমলেও আসার হার বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটা ৭০ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। সরকারি কোনো নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত ফ্লাইট বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই বলেও জানায় সংস্থাটি। একইভাবে চায়না সাউদার্ন ও চায়না ওয়েস্টার্ন এয়ারলাইন্সেও যাত্রী যাওয়ার হার কমেছে। তবে ফিরতি ফ্লাইটে কোনো আসন ফাঁকা থাকছে না এসব এয়ারলাইন্সের নির্ধারিত ফ্লাইটের।
চীনে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসে ক্রমশ বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। এই প্রেক্ষাপটে সংক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, সুইডেন, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের ১৮টির মতো এয়ারলাইন্স চীনে ফ্লাইট বাতিল করেছে। অনেক এয়ারলাইন্স কমিয়ে দিয়েছে ফ্লাইট আপারেশন সংখ্যা। তবে এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেনি বাংলাদেশ। বাংলাদেশ সরকার বিষয়টি পুরোপুরি এয়ালাইন্সগুলোর ওপর চাপিয়ে দিয়েছে।
সোমবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, যাত্রী কম থাকায় এয়ারলাইন্সগুলো নিজেরাই ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, আমি শিডিউল দেখলাম ১০ থেকে ১২ জন যাত্রী আছেন। মনে হচ্ছে ওরাই বন্ধ করে দেবে।
তবে আপাতত ফ্লাইট বন্ধের কোনো পরিকল্পনা নেই জানিয়ে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে গুয়াংজু ফ্লাইট বন্ধের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। তবে সরকার বললে আমরা যেকোনো সময় বন্ধ করে দেবো। তিনি বলেন, চীনে যাওয়া যাত্রীর এখন হার ২০-৩০ শতাংশ হবে। তবে ফিরতি প্রত্যেকটি ফ্লাইটে আসার হার শতভাগ। কেবিন ক্রু ও পাইলটরা সব সতর্কতা মেনেই ফ্লাইট পরিচালনা করছেন বলেও জানান তিনি।
দেহে সুপ্ত অবস্থায় করোনা ভাইরাস থাকলে সেটা থার্মাল স্ক্যানারে শনাক্ত হয় না। তাই যাত্রী আসা বন্ধ না করলে শুধু স্ক্রিনিং করে ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানো কঠিন বলে মনে করছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ উল আহসান বলেন, ওই উপসর্গ ছাড়া যে যাত্রীরা আসছেন তাদের আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। তারা যে ভাইরাস বহন করছে না তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তাই এটা অবশ্যই আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে সরাসরি ফ্লাইটের যাত্রীদের বিমানবন্দরের থার্মাল স্ক্যানারে নিবিড়ভাবে স্ক্রিনিং করা হলেও ট্রানজিট ফ্লাইটের যাত্রীদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে না। গত ১৪ দিনে চীন থেকে সরাসরি ফ্লাইটে দেশে এসেছেন প্রায় পাঁচ হাজার যাত্রী।
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে চীনে সর্বশেষ ৪৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর বাইরে ফিলিপাইন ও হংকংয়ে আরো দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। আর বিশ্বের ২৫টির বেশি দেশে এখন পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর তথ্য নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ সময়: ১০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০২০
টিএম/জেডএস