ঢাকা: যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসির পর পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়ার নিন্দা জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, একাত্তরে আমরা পাকিস্তানকে বিদায় দিয়েছি। এখন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর চেষ্টা করলে প্রয়োজনে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে।
শনিবার (১৪ মে) মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের তেমন কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। পাকিস্তানের এ দেশে কী? ’৭১ সালেই আমরা পাকিস্তানকে কবর দিয়েছি। বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে পাকিস্তানের নাক গলানোর কোনো অধিকার নেই। পাকিস্তানের বাড়াবাড়ির শেষ পর্যায়ে চলে গেছে। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত এখানে বসে ষড়যন্ত্র করবে এটা হতে দেওয়া হবে না। দরকার হলে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে।
পাকিস্তান সিমলা চুক্তি করে ১৯৫ জন সেনা অফিসার যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল তাদের বিচারের কথা বলেছিল। কিন্তু পাকিস্তান সেটা করেনি। চুক্তি ভঙ্গ করেছে। দরকার হলে আমরা জাতিসংঘের সহযোগিতা নিয়ে ওই হত্যার বিচার করবো।
শেখ সেলিম আরও বলেন, পাকিস্তান বিরোধিতা করে কিছু করতে পারবে না। যারা অপরাধ করেছে তাদের বিচার হয়েছে। যাদের বিচার এখনও হয়নি তাদের বিচারও হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক জায়গা থেকে যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিরোধিতা করা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি যেন না হয় সেজন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে বলা হয়েছিল। তারা তো বলবেই। ১৯৭১ সালে এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের দোসর ছিল।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে উৎখাত করা, হত্যা করার ষড়যন্ত্র এখনও চলছে। ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিএনপি ইহুদিদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। আওয়ামী লীগ থাকতে, শেখ হাসিনা থাকতে এ ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
যৌথ সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, পাকিস্তান যে বর্বর রাষ্ট্র তা যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে প্রমাণ করেছে। তাদের এই জঙ্গি মনোভাব বরদাস্ত করা হবে না। আমাদের নতুন করে ভাবতে হবে পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক রাখা হবে কি না। এ দেশে যারা জামায়াত করে তারা মনে প্রাণে পাকিস্তানের সৈনিক। আর খালেদা জিয়া তাদের দোসর।
হানিফ বলেন, সরকার উৎখাতের বহু চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এখন ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে আঁতাত করছে। ইসরায়েলের সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কূটনৈতিক, ব্যবসায়িক সম্পর্ক নেই। সেই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে বিএনপির নেতাদের কিসের বৈঠক। তারা সরকার উৎখাত করার নীল নকশা ও গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। তারা মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। তারা আবার রাজপথে নামলে শক্ত জবাব দিতে হবে। বিএনপির রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই।
আগামী ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ যৌথসভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ড. আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, আমিনুল ইসলাম আমিন, আবুল হাসনাত, শাহে আলম মুরাদ ও মেয়র সাঈদ খোকন প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৬ আপডেট: ১৫৩২ ঘণ্টা
এসকে/এএটি/এমজেএফ/