ঢাকা: দলে নতুন নেতৃত্ব তৈরির বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি (কার্যনির্বাহী সংসদ) পুনর্গঠন করা হবে। সেক্ষেত্রে বর্তমান কমিটির একটা বড় অংশ বাদ পড়তে পারেন।
বিদায়ী কার্যনির্বাহী সংসদ থেকে বাদ পড়া নেতাদের জায়গা পূরণ করা হবে নতুন মুখ দিয়ে। সেই সঙ্গে কমিটির আকারও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিতব্য সম্মেলন নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দলের আগামী দিনের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব তৈরির বিষয়টি চিন্তায় রেখেই আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ ধরনের পরিবর্তনের কথা চিন্তা করছেন।
এই পরিবর্তনের ফলে দলের বর্তমান ৭৩ সদস্যের কার্যনির্বাহী সংসদের অন্তত ৩০ থেকে ৪০ ভাগ বাদ পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এ নিয়ে কেউ প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের এক নেতা বাংলানিউজকে বলেন, কমিটি মনোনীত করবেন নেত্রী (শেখ হাসিনা)। তাই কারা বাদ পড়বেন, নতুন কারা আসবেন সেটা বলা কঠিন।
নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতারা জানান, ২০০৯ সালের সম্মেলনের পর আওয়ামী লীগে বেশ কিছু নেতৃত্ব তৈরি হয়েছে। ওই সম্মেলনে আকস্মিকভাবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিরাট পরির্তন আনা হয়। তখন পুরোনো অনেক নেতাকে বাদ দিয়ে নতুনদের অন্তর্ভূক্ত করা হয়। গত দুই মেয়াদে তারা দায়িত্ব পালন করে নেতৃত্বের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন।
একইভাবে এবারের সম্মেলনেও পরিবর্তন আসতে পারে। ফলে বর্তমান নেতৃত্ব থেকে একটি অংশকে বাদ দিয়ে সেখানে নতুন নেতৃত্ব আনা হবে।
এই পরিবর্তন কার্যনির্বাহী সংসদের সভাপতিমণ্ডলী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলী এবং কার্যনির্বাহী সদস্য পর্যন্ত হতে পারে।
এদিকে, আওয়ামী লীগের বর্তমান ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট কার্যনির্বাহী সংসদের আকার বাড়ানোরও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
গত ৬ সেপ্টেম্বর দলের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় এই সংখ্যা বাড়িয়ে ৮১ সদস্য করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে সভাপতিমণ্ডলীর ৪টি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ২টি, সাংগঠনিক সম্পাদক ১টি।
এদিকে, সম্প্রতি দেশে নতুন একটি প্রশাসনিক বিভাগ হওয়ায় সাংগঠনিক সম্পাদকের সংখ্যা ১টি বাড়বে। এছাড়া প্রশিক্ষণ সম্পাদক সৃষ্টি করা হবে, এতে সম্পাদকমণ্ডীর সসদ্য ১ জন বাড়বে।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ১৫ জন। এই সংখ্যা বেড়ে ১৯ করা হতে পারে। আর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ৩ জন বেড়ে হবে ৫ জন।
প্রশাসনিক বিভাগ অনুযায়ী সাংগঠনিক সম্পাদক ৭ জন। এখন তা বেড়ে হবে ৮ জন। সে অনুযায়ী গঠনতন্ত্রে সংশোধনীর জন্য খসড়া তৈরি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডরীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যা বেড়েছে, সে অনুযায়ী কমিটির আকার বাড়বে। তবে পরিণিতি ও পরিক্কতা বিবেচনা করা হবে। নেত্রী বলেছেন বাড়াতে হবে, কিন্তু সেটা বিশাল আকারের নয়। সভাপতিমণ্ডলী, সম্পাদকমণ্ডলী সব জায়গাতেই সংখ্যা বাড়বে। ’
মতিয়া চৌধুরী বলেন, ‘বাদ পড়বে কিনা জানি না, তবে কমিটিতে নতুন নেতৃত্ব তো আসবেই। নতুন যারা তৈরি হয়েছে তাদের তো আনতে হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক ‘সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নতুন মুখ তো আসবেই। তবে সংখ্যায় কত সেটা বলা কঠিন। নবীন-প্রবীণের সমন্বয়েই নতুন কমিটি হবে।
দলীয় পদসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে সম্মেলন প্রস্তুতির জন্য গঠিত গঠনতন্ত্র উপ কমিটির আহ্বায়ক ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, পদ বাড়বে তবে সেটা বেশি না। কতটি বাড়বে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে তিনি জানান।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৬
এসকে/এসআর