ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আওয়ামী লীগ

আ'লীগের সম্মেলনে আলোর পথে যাত্রা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৬
আ'লীগের সম্মেলনে আলোর পথে যাত্রা ছবি- কাশেম হারুন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সম্মেলনস্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান থেকে: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা যখন সম্মেলনস্থলে পৌঁছালেন ততোক্ষণে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিপুল করতালির মধ্য দিয়ে শনিবার (২২ অক্টোবর) ঠিক দশটায় তার উপস্থিতি।


সুশৃঙ্খল আয়োজন। তাই সবকিছুই ঘড়ির কাটায় কাটায়। সরাসরি প্রধানমন্ত্রী দাঁড়িয়ে গেলেন মঞ্চের সামনে ডানদিকে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডের পাশে। কাছেই আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকার স্ট্যান্ড, সেটির পাশে দাঁড়িয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আগে থেকেই ৭৩টি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একেকটি স্ট্যান্ডের সঙ্গে দাঁড়িয়ে।


ঠিক মঞ্চের সামনে ততোক্ষণে স্থান করে নিয়েছেন লাল-সবুজে সজ্জিত নারী-পুরুষ শিল্পীরা। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি.... চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি’- মধুর বাঁশি বাজছে যখন শিল্পীদের কণ্ঠে, ততোক্ষণে সম্মেলনস্থলের হাজারো কণ্ঠে শুরু হয়ে যায় একই প্রাণের গান। আর ধীরে ধীরে আকাশের দিকে উঠতে থাকে জাতীয় পতাকা। আর ৭৪টি স্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা।


দেশের জন্ম যে দলের হাতে, তার পতাকার রঙও এক লাল-সবুজ। অল্পক্ষণেই মঞ্চের দুই ধার লাল-সবুজেই ছেয়ে গেলো। শিল্পীরা তখন গাইছেন.... ‘কি আচল বিছায়েছো বটের মূলে নদীর কূলে কূলে’।


গান শেষ হলে দলীয় সভাপতির হাতে এলো শান্তির পায়রা, সব নেতাদের হাতে হাতে পায়রা ও বেলুন। একযোগে সবাই উড়িয়ে দিলেন। আর তাতে সম্মেলনস্থলের আকাশ নিমেষেই রঙিন হয়ে উঠলো আর তার ফাঁকে ফাঁকে ডানা ঝাপটালো শান্তির সাদা পায়রা।


দ্রুত মঞ্চে আসন নিলেন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। জেলা কমিটির নেতারা বসলেন মঞ্চের সামনে নির্ধারিত আসনে। ঘোষণা হলো দু’দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধনের।

দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা ডায়াসে এগিয়ে গেলেন। বললেন, ‘সম্মেলনের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করছি’। ব্যাস এটুকুই। অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্ব দিলেন দলের প্রচার সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও উপ-প্রচার সম্পাদক অসীম কুমার উকিলকে। তারাই এগিয়ে নিয়ে যাবেন সম্মেলনের উদ্বোধনী আয়োজনকে।


ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানজুড়ে বিপুল সংখ্যক দলীয় নেতাকর্মীর উপস্থিতি। এসেছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। মনজুরুল আহসান খান, বদরুদ্দোজা চৌধুরী, আবদুল মান্নানদের দেখা গেলো অতিথি সারিতে। এসেছেন বিদেশি অতিথিরাও। বিশ্বের দশটি দেশের প্রায় ৬০ জন অতিথি এ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।


তাদের সামনে সাংস্কৃতিক উপস্থাপনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানে নিয়ে আসা হয় বিশেষ দ্যোতনা। এ অংশ পরিচালনায় এসে সংস্কৃতিমন্ত্রী ও দলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর বললেন, ‘এই আমাদের আলোর পথে যাত্রা। অনুষ্ঠানের এই আয়োজনের সঙ্গে জাতির পিতার পরম আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। যে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তিনি বাংলার মাটির মানুষদের বুকে জড়িয়ে ধরেছিলেন, সেই মাটিতেই আজ তার মেয়ে দলের এই ঐতিহাসিক সম্মেলনে নেতাকর্মীদের ডেকেছেন।


‘শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়ন যাত্রার এক ধ্রুবতারা’- বলেন আসাদুজ্জামান নূর।


শুরু হয় সাংস্কৃতিক উপস্থাপনা। প্রথমেই গান, ‘এখন সময় বাংলাদেশের...এখন সময় আমাদের’। এ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশনা। যা শেষ হয় জয় বাংলা স্লোগানে। এরপর একে একে বাজলো ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’, ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে রক্ত লাল’ আর ‘মোরা একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠ...’।


সত্যিই যেনো লাখো মুজিব সেখানে। আওয়ামী লীগের প্রতীক মুজিব কোট চেপে এসেছেন অনেকেই। তাদের অনেকের স্থান হয়েছে মঞ্চের সামনে। কিন্তু প্যান্ডেলের বাইরেও হাজারো নেতাকর্মী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এখানে-ওখানে গাছের ছায়ায় চেয়ার পেতে, নয়তো ঘাসের ওপর স্থান করে নিয়েছেন। মঞ্চে ততোক্ষণে বক্তৃতার পালা শুরু হয়ে গেছে।

শোক প্রস্তাব উপস্থাপন করলেন দলের দফতর সম্পাদক আব্দুল মান্নান খান। তিনি স্মরণ করলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রয়াত সকল নেতাকর্মীদের। ১৫ আগস্টে হারানো জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সকল সদস্য, জেল হত্যাকাণ্ডে হারানো চার জাতীয় নেতা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় হারানো দলীয় নেতাকর্মীদের কথা।


সম্মেলনের অভ্যর্থনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ নাসিম সকলের সামনে আয়োজনের নানা দিক তুলে ধরলেন। সবাইকে স্বাগত জানালেন দুই দিনের জাতীয় সম্মেলনে।


আর সাধারণ সম্পাদকের বক্তৃতায় জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বললেন, ‘আওয়ামী লীগ একটি অনুভূতির নাম’। মুহূর্মুহু করতালির মধ্যে তিনি বললেন, ‘আওয়ামী লীগ আজ যেকোনো সময়ের চেয়ে সংগঠিত। শেখ হাসিনার নির্দেশনা ও উপদেশ নিয়ে গত চার বছর দলীয় সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পালন করে দলকে সুসংগঠিত করেছেন। আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে নেতাকর্মীদের সহযোগিতা চাইলেন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

এরপর একে একে বক্তৃতা করেন বিদেশি অতিথিরা।

এভাবেই এগিয়ে চলে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনের প্রথম দিনের উদ্বোধনী আয়োজন। যার পরের দিকে সভাপতির বক্তব্যে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।


রোদ ঝলমল দিনে সম্মেলন চলবে গোটা দিন। রোববার (২৩ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিনে কাউন্সিল অধিবেশন শেষে ঘোষণা করা হবে দেশের সবচেয়ে প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দলটির ঘোষণা হবে নতুন কার্যনির্বাহী সংসদ।


বলা হচ্ছে, অনেক চমক রয়েছে এবারের কমিটিতে। সেই অপেক্ষায় থাকবেন দলের নেতাকর্মীরা।

** ‘আরও উন্নত হবে আমাদের বন্ধুত্ব’
** ‘বিশ্বশান্তিতে অবদান রাখছে বাংলাদেশ’
** বড় পর্দায় বাংলাদেশের উন্নয়ন
**দুই বাংলা হৃদয় থেকে কখনও আলাদা হতে পারিনি

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৬

এমএমকে/এএসআর  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

আওয়ামী লীগ এর সর্বশেষ