ঢাকা: সমস্যা হোক কেন্দ্রে বা জেলায় অথবা তৃণমূলে। হোক সেটা ছোট।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এই কথাটাই জানালেন ওবায়দুল কাদের। সোমবার (২৪ অক্টোবর) ধানমণ্ডিতে দলের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় সংলগ্ন প্রিয়াংকা কমিউনিটি সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং করছিলেন তিনি।
শেখ হাসিনার পর এখন তিনিই উপমহাদেশের প্রাচীন ও অন্যতম বৃহৎ দলটির সর্বোচ্চ পদে আসীন। সেজন্য ওবায়দুল কাদের বলছেন, এখন সমাধান হবে ‘অন স্পট’ মোবাইলে সঙ্গে সঙ্গে কথা বলে।
মন্ত্রিত্ব আর সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দু’টোই একসঙ্গে করার সুবিধা উল্লেখ করেন তিনি। জানান, যখন কোথাও সড়কে বা সেতুতে যাবেন, ফাঁকে দলের কাজও সেরে আসবেন।
ওবায়দুল কাদেরের এ ব্রিফিংয়ের সময় তার পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা। তাদের নিয়ে পরে ‘রুদ্ধদ্বার’ বৈঠকও করেন নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক।
বৈঠকটিতে অংশ নেওয়া একটি জেলার আওয়ামী লীগ নেতা বাংলানিউজকে বলেন, “কাদের ভাই দলটাকে বদলে দিতে পারেন। সেই কর্মতৎপরতার মানুষ তিনি। তিনি তো দলের কর্মী পর্যায় থেকে উঠে আসা রাজপথের নেতা। এখন সর্বোচ্চ পদে গেছেন। বুঝবেন এবং সমাধান দিতেও পারবেন একাই। যেটা অতীতে বড় দরকার ছিলো। ”
সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদের প্রথম দিন যখন দলের কার্যালয়ে এলেন, তখন নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হচ্ছিলো তারা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ওবায়দুল কাদেরকেই চাইছিলেন। প্রত্যাশার সঙ্গে মিলে যাওয়ায় তাদের ফুলেল অভিনন্দনে একের পর সিক্ত হচ্ছিলেন তিনি।
জানা যায়, দলের জেলা পর্যায়ের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা পেয়ে গেছেন। অবশ্য কাদেরও কিছু ইঙ্গিত দিয়েছেন গণমাধ্যমকে, “এবার লক্ষ্য তৃণমূলে গণসংযোগ করে পরবর্তী নিবাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়া”।
ব্রিফিংয়ে ওবায়দুল কাদের বোঝালেন, তিনি মনোযোগ দিচ্ছেন দলের শৃঙ্খলা ও আচরণগত উন্নতির দিকে। ক্ষমতাসীন দলের নতুন সাধারণ সম্পাদক মনে করেন, “সরকারের ১০টি উন্নয়ন কাজ দলের দু’টি শৃঙ্খলার ভঙ্গের কারণে ধূলিস্যাৎ হয়ে যেতে পারে। ”
সেজন্য এ বিষয়ে জেলা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ওবায়দুল কাদের কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
ধানমণ্ডির কার্যালয়ে আসা তৃণমূলের অনেক নেতাই প্রত্যাশা করছেন, “একটি বড় পরিবর্তন আসবে দলে। ”
প্রথম দিনে বিএনপির উদ্দেশ্যেও কিছু বক্তব্য রেখেছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি ব্রিফিংয়ে বলেন, “সম্মেলনে বিএনপি এলে কেউ বলতো না, ‘ডাল মে কুচ কালা হে’। ”
তিনি বলেন, “বিএনপি বলে গণতন্ত্র রক্ষা করবে, কিন্তু তাদের নিজেদের দলে গণতন্ত্র কোথায়? আমরা বিএনপির জাম্বু-জেড সাইজের কোনো কমিটি করছি না। আমাদের মাত্র ৮ জন বেড়েছে। পদ বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ তার কমিটির ডিগনিটি নষ্ট করবে না। কমিটি গঠনে আওয়ামী লীগ চার মাস সময় নেবে না। কারও কারও চার মাস সাড়ে মাস হয়ে গেছে, তারপরও কিছু কিছু বাকি রয়ে গেছে। ”
ব্রিফিংয়ের শেষ দিকে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আজকালের মধ্যে সম্পাদকমণ্ডলীর পদ ঘোষণা হয়ে যাবে। আর সদস্য ৩-৪ দিনের মধ্যে ঘোষণা হবে। কোনো পদের ঘোষণাই এক সপ্তাহের বেশি অতিক্রম করবে না। ”
বাংলাদেশ সময়: ২৩৪৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১৬
এসএ/এইচএ/
** ‘অভিযোগের সমাধান ও সিদ্ধান্ত স্পটেই দেবো’
** ‘নিজেকে মন্ত্রী নয়, কর্মী মনে করি’
** ‘সরকারি কর্মসূচি আগের মতোই থাকবে’
** ওবায়দুল কাদেরের প্রথম বৈঠক জেলা সভাপতি-সম্পাদকদের সঙ্গে