ঢাকা: আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্যাপক প্রচারের প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নামবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর জানুয়ারি থেকে এই প্রচার কাজ শুরু হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারা অংশ নেবেন বলেও জানা গেছে। যেসব জেলা-উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাননি নির্বাচনকে সামনে রেখে সেসব জেলা-উপজেলাকে প্রধান্য দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রাথমিকভাবে সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচারের মাধ্যমে জনগণের সামনে তুলে ধরাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে জনসভা, সমাবেশের কর্মসূচি নেওয়া হবে। এসব জনসভা, সমাবেশে আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদে গত ৮ বছরের সফলতা ও উন্নয়নগুলো প্রচারে আনা হবে। সেই সঙ্গে সরকারের আগামী দিনের উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও জানগণের মাঝে তুলে ধরা হবে। দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা রক্ষার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে মানুষের প্রতি আহ্বান জানানো হবে।
আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বর্তমান সরকারের চলতি মেয়াদের প্রায় ৩ বছর এবং গত মেয়াদের ৫ বছর- এই ৮ বছরে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন কাজ হয়েছে। অতীতে কোনো সরকারের আমলে এত উন্নয়ন কাজ লক্ষ্য করা যায়নি। আওয়ামী লীগ যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিলো তার অধিকাংশই ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু সরকারের এই সফলতাগুলো তেমন একটা প্রচারে আসেনি। এ কারণেই নির্বাচনের দুই বছর আগে থেকেই প্রচার কার্যক্রম শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হবে। সংবিধান অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। আর সংবিধান অনুযায়িই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান। সব দলের অংশগ্রহণে এই নির্বাচন অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলেও তারা ধারণা করছেন।
এসব বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েই আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নির্বাচনী সমাবেশ ও জনসভা করবেন। যে সব উপজেলায় তিনি যাননি সেসব উপজেলাকে অগ্রাধিকার দিয়ে সেখানে যাওয়ার উদ্যোগ রয়েছে। সবগুলো উপজেলায় যেতে না পারলেও প্রতিটি জেলার অন্তত একটি করে উপজেলায় তিনি যাবেন বলেও আওয়ামী লীগ নেতারা জানান।
বুধবার (২৩ নভেম্বর) সিলেটে জনসভার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচিনী প্রচার শুরু করার কথা ছিলো। তবে জেলা পরিষদ নির্বাচনের কারণে এই জনসভা স্থগিত করা হয়। আগামী ২৮ ডিসেম্বর জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যেই এই নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। নির্বাচনী আচরণ বিধির অনুসরণ করেই এই জনসভা করা হয়নি। জেলা পরিষদ নির্বাচনের পর জানুয়ারি থেকেই প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী প্রচার কার্যক্রম শুরু হবে।
এসব বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, সামনে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এর পর জেলা পরিষদ নির্বাচন হবে। এই নির্বাচনগুলো নিয়ে দলের ব্যস্ততা রয়েছে। এ সব নির্বাচনে আমরা প্রচারে নামবো। এরপর জাতীয় নির্বাচনের প্রচারের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগৈর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, দ্রুতই আমরা জাতীয় নির্বাচনের প্রচারে নামবো। জেলা পরিষদের নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা প্রচার শুরু করবো কারণ জেলা পরিষদ নির্বাচনের কিছু বিধি নিষেধ আছে। জানুয়ারি থেকে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে প্রচারে নামা হবে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা-উপজেলা পর্যায়ে জনসভা সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেবেন বলেও জানান তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০১৬
এসকে/এমজেএফ