ঢাকা: ছাত্রলীগ আইন-কানুনের ঊর্ধ্বে নয়। যে ছাত্রলীগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনা নষ্ট করবে, সেই ছাত্রলীগের দরকার নেই বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘গতকাল (বুধবার) হঠাৎ করে দেখলাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কারণ, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে মারামারি করেছে। এর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিতে হয়েছে। এর জন্য কি আইন নেই, ছাত্রলীগ কি আইন-কানুনের ঊর্ধ্বে? যে ছাত্রলীগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট করে, সেই ছাত্রলীগের আমাদের দরকার নেই’।
বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র সুবর্ণ জয়ন্তী উদ্যাপনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষকদের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ার সমালোচনা করার সময় কথা প্রসঙ্গে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গ টানেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ছাত্রলীগের দুই গ্রুপ মারামারি করেছে। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, অর্থাৎ মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলতে হবে, আমি এর বিপক্ষে। এর জন্য তো আইন আছে। আইন অনুসারে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে’।
‘আমি সঙ্গে সঙ্গে সেখানে কথা বলেছি। ছাত্রলীগকে বলেছি, যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বহিষ্কার করতে। আর প্রশাসনকে বলেছি, জড়িতদের গ্রেফতার করতে’।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘সেখানে ক্যাম্পাসে পুলিশকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে পুলিশ জানায়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমি বলেছি, পুলিশ যেতে দিলেন না, সতীত্ব, শুচিতা নষ্ট হবে বলে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দিয়ে তাতে কি শুচিতা থাকলো?’
‘আমি সেখানে ক্লাস খোলার ব্যবস্থা করেছি। আমি বলেছি, যারা দোষী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, ক্লাস বন্ধ করা যাবে না। শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করলাম। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ও যেনো এটি অনুসরণ করে’।
তিনি শিক্ষকদের রাজনীতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকরা এতো বেশি রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন, যেটির প্রয়োজন নেই। আর এটা তারা করেন পদোন্নতি ও নিজস্ব বলয় তৈরির জন্য। আমি বলছি না যে, শিক্ষকদের রাজনীতি করা অভিপ্রেত নয়। রাজনীতির প্রতি তাদের সমর্থন অবশ্যই থাকবে’।
ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখন কোয়ালিটি শিক্ষার অভাব। কারণ, এখন তারা কোনোভাবে পরীক্ষা দিয়ে বৈতরণি পার হতে চায়। তারা জীবন গড়ার জন্য শিক্ষা চায় না, জীবিকার জন্য শিক্ষা চায়। আমরা এ শিক্ষা চাই না। দরকার কোয়ালিটি শিক্ষার’।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য নাসরীন আহমাদ, আইবিএ’র পরিচালক ড. অধ্যাপক একেএম সাইফুল মজিদ, আইবিএ’র অ্যালমনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রমুখ।
** আগামী জাতীয় নির্বাচনও নিরপেক্ষ হবে: ওবায়দুল কাদের
বাংলাদেশ সময়: ২০০৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১৬
এসকে/এএসআর