একই সঙ্গে ওই মিছিল থেকে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ করতেও বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ দলের ধানমন্ডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ নির্দেশনার তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা পর্যদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ৫ জানুয়ারিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ অ্যাখ্যায়িত করে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ ও সারা দেশে কালো পতাকা মিছিলের ডাক দিয়েছেন। সমাবেশের অনুমতি না পাওয়া সত্ত্বেও কর্মসূচি ঘোষণার মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টির ছক এঁকেছে। তাই নেতাকর্মীদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি এবং তার জোট দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির পরিকল্পনা করছে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের সময় যেমন ৫শ স্কুল পুড়িয়েছিল, প্রিজাইডিং-পোলিং অফিসার ও পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিল, সেই অবস্থা সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। তাদের নেত্রী ৯৩ দিন অবরোধ ডেকেছিল। পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে পুড়িয়ে মেরেছিল শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং ইজতেমাগামী মুসল্লিদের। তাদের হাত থেকে কেউ বাদ যায়নি।
হাছান মাহমুদ বলেন, এটি নির্বাচনী বছর। এক বছরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই বিএনপি ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের মতো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির ছক এঁকেছে।
তিনি বলেন, রিজভী আজকে একটি কর্মসূচি দিয়েছে, সারা দেশে পতাকা মিছিল করার। তিনি বলেছেন, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস। আসলে তারা ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা করেত চেয়েছিল। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করেছি। কালো পতাকা মিছিল করে জনগণকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
মির্জা ফখরুলকে উদ্যেশ্য করে এ আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কালো পতাকা মিছিল করে জনগণের মধ্যে ভীতি সৃষ্টি করে লাভ নেই। আসলে বিএনপি জনগণকে ভয় দেখাতে চায়। অনুমতি না পাওয়ার পরও তারা জনগণকে ভয় দেখানো জন্য এ কর্মসূচি দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, পেট্রোল বোমা হামলা করে ক্ষমতায় যাওয়া যায় না। আওয়ামী লীগের সব নেতাকর্মীদের আমরা সতর্ক দৃষ্টি রাখতে বলেছি। মিছিল থেকে যদি কোনো বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়, তাহলে তারা তা প্রতিরোধ করবে।
আওয়ামী লীগ কি তাহলে বিএনপির কালো পতাকা মিছিল প্রতিরোধ করবে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি তো প্রতিরোধ করার কথা বলিনি। কেউ যদি বিশৃঙ্খল পরিবশে সৃষ্টি করে তাহলে তারা সতর্ক দৃষ্টি রেখে প্রতিরোধ করবে।
‘আমরা আমাদের সাধারণ রাজনৈতিক কর্মসূচি দিয়েছি। ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ মিছিল করবে এবং সেখানে দলের সিনিয়র নেতারা উপস্থিত থাকবে। আমরা কোনো বিশৃঙ্খলা চাই না। কেউ চেষ্টা করলে প্রতিরোধ করতে হবে।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হয়েছে। সেখানে বিএনপি একটিতে জিতেছে, জাতীয় পার্টি একটিতে জিতেছে। বিএনপির দাবি হচ্ছে তাদের জয়ের নিশ্চয়তা দিতে হবে, কিন্তু সংবিধান কি কোনো দলকে এমন সুবিধা দিতে পারে। কোনো দলের সুবিধার্থে তো সংবিধান সংশোধন হতে পারে না।
অন্য এক প্রশ্নে জবাবে গ্রিন বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তো সব সময় মাঠে থাকে। এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে।
সভায় ৫ জানুয়ারি উপলক্ষে এক দিনের এবং আওয়ামী লীগ সরকারের ৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে দুই দিনের কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্তও হয়।
৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র রক্ষা দিবস উপলক্ষে ৬ জানুয়ারি বিকেল ৩টায় শিল্পকলায় বিএনপি জামায়াতের অগ্নি সন্ত্রাসের খণ্ডচিত্র প্রকাশ এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমামের উপস্থিতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের ৪ বছর পূর্তি ১২ জানুয়ারি উন্নয়নের খন্ডচিত্র প্রকাশ ও ১৪ জানুয়ারি সরকারের ৯ বছরের উন্নয়নের ডকুমেন্টারি প্রকাশ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০২, ২০১৮/আপডেটেড ২১২১ ঘণ্টা
ইইউডি/এসএইচ