সরকারের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগও রাজনৈতিকভাবে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেকোনো পরিস্থিতিতে মাঠ দখলে রাখতে আগে থেকেই দলের নেতাকর্মীরা প্রস্তুত থাকবে।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিচারাধীন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুনীতি মামলার রায় ঘোষণা হবে। এ রায়ে খালেদা জিয়ার সাজা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রায়ে সাজা হলে তিনি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। রায় খালেদা জিয়ার বিপক্ষে গেলে দেশ অচল করে দেওয়া এবং সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর হুমকি দিচ্ছে বিএনপি।
আওয়ামী লীগ ও সরকারের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার রায়ের পর দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করবে বিএনপি ও তাদের জোট শরিকরা। এ রায়কে কেন্দ্র করে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরের যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিলো সে ধরনের পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।
তবে অস্থিতিশীল কোনো পরিস্থিতি যাতে তৈরি হতে না পারে সেজন্য সরকার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। রায়কে কেন্দ্র করে আগে এবং পরে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঠে নামতে দেবে না সরকার। বিএনপি ও তাদের জোটের নেতাকর্মীদের গতিবিধি সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রয়েছে। নজরদারিতে রাখা হয়েছে নেতাদের। নেতাকর্মীরা মাঠে নামার চেষ্টা করলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী কঠোর অবস্থানে যাবে।
এ ব্যাপারে প্রশাসন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে আগে থেকেই সতর্ক রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিএনপি ও এ জোটের যেসব নেতার নামে বিভিন্ন সময়ের যে মামলাগুলো রয়েছে প্রয়োজনে সেগুলোও সক্রিয় করা হবে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে তারা গ্রেফতারও হতে পারেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজনীতির মাঠ দখলে রাখতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদেরও রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত রয়েছে। খালেদা জিয়ার রায়ের দিন এবং এরপর বিএনপি ও দলটির নেতৃত্বাধীন জোটের নেতাকর্মীরা মাঠে নেমে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারে সে জন্য সারা দেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ওই দিন সকাল থেকেই রাজপথে সতর্ক অবস্থান নেবে। এ ব্যাপারে ইতোমধ্যেই দলের সকল পর্যায়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং ড. আব্দুর রাজ্জাক বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপির নেতারা যেভাবে হুমকি দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবেন সেটা করলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আছে।
‘তারা জানে কীভাবে বিশৃঙ্খলা মোকাবিলা করতে হয়। অতীতে তার প্রমাণ তারা রেখেছে। তারা আগের চেয়েও এখন অনেক বেশি শক্তিশালী। যে কোনো পরিস্থিতি কঠোভাবে দমন করা হবে। আমাদের দলের নেতাকর্মীদেরও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য সাবেক আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু বাংলানিউজকে বলেন, রায়ে আইন অনুযায়ী যেটা হওয়ার সেটা হবে। রায় বিপক্ষে গেলে তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। কিন্তু এই রায়কে কেন্দ্র করে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করলে সেটা হবে আইন অবমাননা। এ জন্য সরকার ও প্রশাসন আছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩১, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ