বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এ আহ্বান জানান তিনি। জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নৌকায় ভোট দেওয়ার ওয়াদা চাইলে সমবেত জনতা হাত তুলে সম্মতি জানায়।
রাজশাহীবাসীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামনে সিটি করপোরেশন ও ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন। আমি আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাই। উন্নয়নের ধারা যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য আমি আপনাদের কাছে নৌকায় ভোট চাই। নৌকার প্রার্থীদের ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন, উন্নয়ন করার সুযোগ করে দিবেন। নৌকা উন্নয়নের মার্কা, নূহ (আ.) এর সময় থেকে নৌকা বিপদ-আপদে মানুষকে রক্ষা করে আসছে। আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই আপানারা নৌকা মার্কায় ভোট দিবেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, লিটন যখন মেয়র ছিলো তখন রাজশাহীর উন্নয়ন হয়েছে। গত নির্বাচনে বিএনপি থেকে মেয়র হয়। কিন্তু আমরা উন্নয়ন বন্ধ করিনি। আমরা প্রকল্প দিয়েছি, অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি। কিন্তু সেভাবে বাস্তবায়ন করতে পারেনি। তাদের মাথায় তো লুটপাট। নেতা যদি এতিমের টাকা মেরে খায়, তার দলের চ্যালা-চামুণ্ডারা কী করবে?
তিনি বলেন, আজ বিএনপির নেতারা আন্দোলন করছে। কীসের জন্য আন্দোলন? এতিমের টাকা চুরি করে তাদের নেত্রী জেলে গেছেন। এতিমের টাকা চুরি করা কুরআন শরীফে নিষেধ আছে। এতিমখানার ঠিকানা নেই, এতিমরা একটা টাকা পায়নি। খালেদা জিয়া গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি ৯১ সালে বিদেশ থেকে এতিমদের জন্য টাকা এনে লুট করেছেন। এই টাকা সুদে আসলে পেয়েছেন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের লোকজন। আমরা এতিমের টাকা মেরে খাইনি। পৈত্রিক সূত্রে যে সম্পত্তি পেয়েছিলাম তাও ট্রাস্ট করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৪টায় জনসভাস্থলে এসে পৌছালে হাজারো জনতা স্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানায়। এ সময় মাদ্রাসা ময়দান ছাড়িয়ে সমবেত জনতার স্রোত আশপাশের প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। প্রধান প্রধান সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ এ জনসভার আয়োজন করে।
জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে রাজশাহীতে বাংলা ভাইয়ের উত্থানসহ সারাদেশের হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসাত্মক চিত্র তুলে ধরে বলেন, তাদের সময় এই রাজশাহীকে সন্ত্রাসের নগরী সৃষ্টি করেছিল বাংলা ভাই। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধরে নিয়ে পিটিয়ে মেরেছে, গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। এই অবস্থা তৈরি করেছিল সারা দেশেই। ২০১৩, ১৪, ১৫ সালেও তারা তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের এই তাণ্ডবে ৪/৫শ’ মানুষ জীবন দিয়েছে। মানুষকে তারা পুড়িয়ে মেরেছে। আমরা দেশে উন্নয়ন করে যাচ্ছি মানুষের শান্তি দিতে, মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে কাজ করে যাচ্ছি। আর বিএনপি দেয় শুধু লাশ!
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা বলে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী, যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের পুরস্কৃত করেছেন। যুদ্ধাপরাধী, রাজাকারদের বিচার বন্ধ করে দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। তাদের মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন। রাতে থাকতো কারফিউ; এটাই কি জিয়ার বহুদলীয় গণতন্ত্র?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্যই হচ্ছে মানুষের কল্যাণ, মানুষের উন্নতি। আমরা দেশের উন্নয়ন করি আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে লুটেপুটে খায়। আমরা মানুষের ভাগ্য উন্নয়ন করতে এসেছি। আমি মা-বাবা, ভাই হারিয়েছি। আমার চাওয়া পাওয়ার কিছু নেই। আমি এদেশের প্রতিটি প্রান্তে ঘুরে বেড়িয়েছি। প্রতিটি মানুষের দুর্দশা দেখেছি। এ দেশের মা বোনের ভাগ্য, তরুণ প্রজম্মের ভাগ্যের উন্নয়নে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এদেশ হবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ- এটাই আমাদের লক্ষ্য।
বাংলাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ