জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারের রায়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার ৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। ওই দিন থেকেই তিনি কারা বন্দি।
এরই মধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবির পাশাপাশি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসার দাবিও তুলেছে বিএনপি।
তবে বিএনপির দিক থেকে এ দাবি তোলা হলেও ব্যক্তিগত চিকিৎসকদের দিয়ে চিকিৎসার ব্যাপারে ইতিবাচক নয় সরকার। চিকিৎসার ক্ষেত্রে কারাবিধি অনুসরণ করেই ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে মতামত দিয়েছেন সরকারের সংশ্লিষ্টরা।
সম্প্রতি খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর বিষয়টি আলোচনায় উঠে এসেছে। চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর মত দিলে সে ব্যাপারেও সরকার চিন্তা-ভাবনা করে ব্যবস্থা নিতে পারে বলে আলোচনা আছে। তবে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে হলে বিষয়টির ক্ষেত্রে সরকার কারাবিধির বাইরে যাবে না।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বাংলানিউজকে বলেন, ‘খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাবেন কেন? তিনি অসুস্থ হলে দেশেই তো প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। কারাবিধি অনুযায়ি তিনি চিকিৎসা পাবেন। আমাদের দেশের চিকিৎসকরা যেভাবে বলবেন কারাবিধি অনুযায়ী সেভাবে চিকিৎসা দেওয়া হবে। ’
সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে সরকার। এ ক্ষেত্রে সরকারের কোনো নেতিবাচক দৃষ্টি ভঙ্গি নেই। তবে সে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কারা আইন অনুসরণ করে। কারা আইনে যে সব বিধান আছে সে অনুযায়ী তিনি সব সুবিধা পাবেন।
তারা বলছেন, প্যারোলে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য খালেদাকে বিদেশে পাঠাতে হলেও সে ক্ষেত্রে কারা বিধি অনুসরণ করা হবে। তবে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে কি-না এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
সম্প্রতি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘খালেদা জিয়া জেলে আছেন বলে তার প্রতি সরকার অমানবিক আচরণ করবে না। ’
‘আমরা এই ধরনের সরকার না। অবশ্যই আমাদের দেশে সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। সু-চিকিৎসা করার জন্য যা যা দরকার তা করা হবে। সু-চিকিৎসা যদি দেশে হয় তাহলে দেশে, আর বিদেশে নেওয়ার দরকার হলে তাই করা হবে। দেশের চিকিৎসকরা বোর্ড বসে যদি বলে বিদেশে পাঠাতে হবে, পাঠাবো। ’
তবে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, এ বিষয়গুলো নিয়ে সরকার এখনও ভাবছে না। যদি এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করা হয় সেটাও কারাবিধি অনুসরণ করেই হতে হবে।
প্যারোলে মুক্তির শর্ত অনুযায়ী এটা পাওয়ার পর কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকবে না বা কোনো রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া যাবে না। বিদেশে চিকিৎসায় পাঠানোর সিদ্ধান্তের আগে এসব বিষয় আগে নিশ্চিত হতে হবে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার নানা কথা পত্র-পত্রিকায় দেখছি। আসলে খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বিদেশে চিকিৎসার অনুমতির জন্য কী কোনো আবেদন করা হয়েছে, আমি জানতে চাই। ’
‘আবেদনই হয় নাই অথচ সেটা নিয়েই আলোচনা। তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ হলে অবশ্যই কারা কর্তৃপক্ষ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করবে। কারা বিধি অনুযায়ী নিশ্চয়ই সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬ , ২০১৮
এসকে/এমএ