শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপিকে ব্যর্থ দল হিসেবে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এত ব্যর্থ অপজিশন, এত ব্যর্থ বিরোধী দল আর আসেনি।
নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবি এবং আন্দোলনের হুমকির জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা কি নির্বাচন চায়, নাকি সরকার হঠাতে চায়?
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমদ, মোশাররফ হোসেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে মাইক দিয়ে কয়েকজনকে নিয়ে আওয়াজ দিলেই কি সরকার হটে যাবে? এই সরকারের গণভিত্তি খুবই শক্তিশালী, এই সরকারের গণভিত্তি বাংলাদেশের মাটির অনেক গভীরে প্রথিত। আমাদের শেকড় অনেক গভীরে। আমরা হঠাৎ করে এসে জনসমর্থনহীনভাবে সরকারে আসিনি। এটা যেন তারা ভুলে না যায়।
দাবি আদায়ে বিএনপির আন্দোলনের হুমকি প্রসঙ্গে কাদের বলেন, সরকারের দশ বছর হয়ে গেলো, এই দশ বছরে বারবার আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, সবই সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক ছোটখাটো আন্দোলনের ডাক নয়। খালেদা জিয়াও সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, এর সঙ্গে বাস্তবতা কতটুকু, এটা আপনারা জানেন। দশ বছরে একটি দিনও সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার মতো কোন আন্দোলন বিএনপি নামক বিরোধী দল করতে পারেনি।
২০১৩-১৪ সালের মতো বিএনপি আবার আন্দোলনে গেলে সরকারের ভূমিকা কী হবে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, বারে বারে ঘুঘু তুমি খেয়ে যাবে, সেই দিন চলে গেছে। ২০০১, ২০১৪ রঙিন খোয়াবে থাকতে পারে, বাস্তবে আর ফিরে আসবে না।
খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়ার এখতিয়ার কি সরকারের না আদালতের। আমাদের হাতে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার কোনো সুযোগ নেই। এটা আদালতের বিষয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বিএনপি যে বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করছে, এর মধ্যে প্রথম বিষয়টি সংবিধানসম্মত নয় আর দ্বিতীয় বিষয়টি আইনি বিষয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা যদি মামলা মোকাবিলা করে আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে পারে, ওয়েলকাম। সরকার যদি বাধা দিতো, সরকার যদি বিচার বিভাগকে প্রভাবিত করতে চাইতো, তাহলে খালেদা জিয়া এত মামলা থেকে জামিন পেতেন না। প্রায় ৩০টি মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন, সরকার যদি হস্তক্ষেপ করতো তাহলে কিভাবে এসব মামলা থেকে জামিন পেলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সেই মামলার জন্যও আপনারা আইনি প্রক্রিয়ায় যান, গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না।
ইভিএম’র বিরোধিতা করায় ওবায়দুল কাদের বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ইভিএম নিয়ে বিএনপির কেন ভয়, সেটা আমরা বুঝে ফেলেছি। বিএনপির ভয় হচ্ছে ইভিএমে ভোট হলে বিএনপি আর কেন্দ্র দখলের পুরনো অভিযোগ আনতে পারবে না, ভোট জালিয়াতির কথা বলতে পারবে না। ভোট কারচুপির কথা বলতে পারবে না। বিএনপি আর পোলিং এজেন্টদের বের করে দেওয়ার পুরনো অভিযোগ আনতে পারবে না, এ কারণেই বিএনপি ইভিএম চায় না।
আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে জানিয়ে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি আমরা নিতে শুরু করেছি। এ মাসেই আমাদের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করবো। জোট নিয়েও আমরা পরোক্ষভাবে আলাপ আলোচনা করেছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, এনামুল হক শামীম, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, ত্রাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।
বাংলাদেশ সময়: ২২৩০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৮
এমইউএম/এমজেএফ