চলতি বছর ডিসেম্বরের শেষদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যেই নির্বাচনী জোট এবং আসন সমঝোতার বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গনে জোর আলোচনা চলছে।
বিগত দুটি নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি আসন ভাগাভাগির ভিত্তিতে অংশ নিয়েছে। আগামী নির্বাচনেও জাতীয় পার্টির সঙ্গে আসন ভাগাভাগির ভিত্তিতে অংশ নেবে আওয়ামী লীগ। তবে আসন ভাগাভাগির প্রক্রিয়া হবে দুই ধরনের। সেভাবেই প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোটগতভাবে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করবে। সে অনুযায়ীই আওয়ামী লীগ প্রস্তুতি নিচ্ছে। আওয়ামী লীগের ওই নেতারা জানান, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে বলেই দল মনে করছে।
আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, বিএনপির নেতারা মুখে মুখে নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বললেও বিএনপি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। শুধু তাই নয় ভেতরে ভেতরে দলটি প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছে। যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না বিএনপি। পাশাপাশি পুরোনো দাবি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না বলছে।
তবে বিএনপির এসব দাবি রাজনৈতিক বক্তব্য বলেই আওয়ামী লীগ নেতারা মনে করছেন। এ অবস্থানের মধ্য দিয়েই দলটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আওয়ামী লীগ নেতারা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্ল্যাহ বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোটগতভাবেই নির্বাচনের সিদ্ধান্তে আছি। কারণ, আমরা মনে করছি আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে। বিএনপি ইতোমধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। প্রার্থী মনোনয়ন প্রক্রিয়াও দলটি শুরু করেছে। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে মহাজোটগতভাবে আসন ভাগাভাগি করে আমরা নির্বাচন করবো। আর যদি বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাহলে জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে। তবে আমরা ১৪ দলগতভাবে নির্বাচনে অংশ নেবো।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল এবং জাতীয় পার্টি মহাজোট করে নির্বাচনে অংশ নেয়। মহাজোটের শরিক দলগুলোর মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ বিজয়ের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় মহাজোটগতভাবে নির্বাচন না করে জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে নির্বাচন করে। তবে ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪ দলগতভাবে অংশ নেয় এবং জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগি করে। শুধু ১৪ দলের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নয়, জাতীয় পার্টির সঙ্গেও আসন সমঝোতা হয়। যেসব আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ছিলো সেগুলোতে আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী দেয়নি।
আগামী নির্বাচনেও শেষ মুহূর্তে যদি বিএনপি অংশ না নেয় তবে গত নির্বাচনের মতোই জাতীয় পার্টি আলাদাভাবে এবং আওয়ামী লীগ ১৪ দলগতভাবে অংশ নেবে। পাশাপাশি জাতীয় পার্টির সঙ্গে গত নির্বাচনের মতোই আসন সমঝোতা হবে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের জোট আছে, জোট থাকবে। জাতীয় পার্টির সঙ্গে কোনো প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী সমঝোতা হবে সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে জোটে এমন কিছু হয়নি যে জোট থাকবে না।
বাংলাদেশ সময়: ০০১৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৮
এসকে/এমজেএফ