রোববার (২৫ নভেম্বর) বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন পত্রের চিঠি দেওয়া হয়। সকাল ১০টা থেকে মনোনয়ন পত্রের চিঠি দেওয়া শুরু হয় এবং বিরতিহীনভাবে এ কার্যক্রম রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলে।
সকালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দু’টি আসনের চিঠি সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু হয়। চিঠি নিতে আসা প্রত্যেক প্রার্থীর সঙ্গে শত শত কর্মী সমর্থক মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আসেন। দিনভর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘিরে উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত হাজার হাজার নেতাকর্মী সমর্থকের পদচারণায় গোটা বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান এলাকা মুখরিত থাকে।
জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৩০টি আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্রের চিঠি দেওয়া হয়। বাকী আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী দেওয়া হয়নি। এ আসনগুলো জোটের শরিক দলগুলোর জন্য রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বেশ কিছু আসনে পরিবর্তন আনা হয়েছে। মনোনয়নে পুরোনোদের মধ্য থেকে ৪০ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ সব আসনে নতুনদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৬ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানান।
রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আজ অনানুষ্ঠানিকভাবে ২৩০ আসনে প্রার্থীদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। জোট শরিকদের সঙ্গে আমাদের অঙ্গিকার আছে এক সঙ্গে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা দেওয়ার। জোট শরিকদের আগামীকাল জানিয়ে দেওয়া হবে তাদের কতটি আসন ছাড়া হবে। সেই সঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে।
তবে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত প্রার্থী তালিকায় পরিবর্তন আসতে পারে। ১৪ দল ও মহাজোটের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনও দরকষাকষি চলছে। এটা চূড়ান্ত হতেও সময় লাগতে পারে। আওয়ামী লীগের যাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে তাদের মধ্য থেকেও কেউ কেউ বাদ পড়তে পারেন। আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী তালিকায় শেষ মুহূর্তেও পরিবর্তন আসতে পারে। এ কারণে অনেক আসনে দুই জন করে প্রার্থীর চিঠি দেওয়া হয়েছে। এদের একজনকে চূড়ান্ত পর্যায়ে গিয়ে বসিয়ে দেওয়া হবে। মনোনয়ন পত্রের চিঠি দেওয়ার সময় প্রত্যেক প্রার্থীর কাছ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার পত্র নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া মনোনয়ন পত্র আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রত্যাহারের শেষ দিন। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের এ শেষ দিন পর্যন্ত নানা হিসাব-নিকাশ করা হবে। শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কারা থাকবেন এবং জোট-মহাজোটের কতটি ছেড়ে দেওয়া হবে, সেটা চূড়ান্ত হতে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
দলের প্রার্থী তালিকা পরিবর্তনের এ বিষয়টি ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনের বক্তব্যেও ইঙ্গিত রয়েছে।
যাদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে এর মধ্য থেকে কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে ওবায়দুল কাদের বলেন, সময় ও পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনে হতে পারে। কৌশলগত কারণে আমরা কিছু আসনে ডাবল প্রার্থী দিয়েছি।
আওয়ামী লীগের জোট ও মহাজোটের শরিকদের কতটি আসন ছেড়ে দেওয়া হবে সেটাও সোমবার তাদের জানানোর কথা রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র জানায়, বিষয়টিও চূড়ান্ত হতে আরও দুই একদিন সময় লেগে যেতে পারে। মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় পর্যন্ত জোটের সঙ্গে দরকষাকষি চলতে পারে। বিশেষ করে জাতীয় পার্টির সঙ্গে চূড়ান্ত হতে সময় লাগতে পারে।
বাংলাদেশ সময়: ০১০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৮
এসকে/এসএম/এমএএম/এসএইচ