ভোটারদের কাছে টানতে গত ১০ বছরের বিভিন্ন উন্নয়ন বেশি বেশি প্রচার করবে আওয়ামী লীগ।
মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠানোসহ বাস্তবায়ন হওয়া বিভিন্ন মেগা প্রজেক্টসহ বাস্তবায়নাধীন পদ্মা সেতু, রাজধানীতে মেট্রোরেল, পাবনার রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ, কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, এলএনজি টার্মিনাল, বিভিন্ন রুটে রাজধানীর সঙ্গে যুক্ত হওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, পায়রা বন্দরসহ বিভিন্ন মেগাপ্রজেক্টের কথা তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।
ভবিষ্যতে রাজধানীর সঙ্গে বুলেট ট্রেন সংযোগ, দেশের দক্ষিণাঞ্চলে রেল সংযোগ স্থাপন, দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, দ্বিতীয় যমুনা সেতু, দ্বিতীয় স্যাটেলাইট, দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনসহ বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট। এগুলো নির্বাচনী ইশতেহারেও থাকবে।
বিদ্যুতের উন্নয়ন, প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া, আগামীতে শতভাগ বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করা, দুর্গম এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ সুবিধা দিতে চলমান কার্যক্রম, ইন্টারনেট সুবিধা, ডিজিটাল সেন্টার, গ্রামে-গঞ্জেও ব্রডব্র্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা নিয়ে যাওয়া, আগামীতে এ কাজ আরও সম্প্রসারণ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাস রুম, শিক্ষার প্রসার, শিক্ষার হার বৃদ্ধি, মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকারের সফলতা, আর্থসামাজিক উন্নয়ন, কৃষি, চিকিৎসা খাতের উন্নয়নের কথা প্রচারেও গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের সুনাম বৃদ্ধি, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুখ্যাতি ও প্রভাব, রোহিঙ্গা ইস্যু, সমুদ্রসীমা, সীমান্ত সমস্যা সমাধানসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কূটনৈতিক সফলতাও তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।
উন্নয়ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গত নির্বাচনের ইশতেহারের দেওয়া প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে সেগুলোর বাস্তবায়নের কথা তুলে ধরা হবে।
আগামী দিনে আরও বেশি দক্ষ জনসম্পদ গড়ে তুলতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান, চাকরির বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনায় রাখার প্রতিশ্রুতি থাকবে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায়।
২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ, ২০৪১ সালের উন্নত দেশ গড়ার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি ২১০০ সালের বাংলাদেশ কেমন তা নিয়ে শত বছর মেয়াদী ডেল্টা প্ল্যানের কথাও ইশতেহারে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জঙ্গি-সন্ত্রাস দমনের সরকারের সফলতা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চলমান রাখা, সন্ত্রাস জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি নির্মূল করার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি বিগত সময়ে এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের সফলতার কথা তুলে ধরা হবে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার যুদ্ধে।
আওয়ামী লীগ সরকার আমলের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরার পাশাপাশি বিএনপি আমলের তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরবে মহাজোট। বিএনপি আমলের দুর্নীতি, হাওয়া ভবন, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, সংখ্যালঘু নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ। এসবের সঙ্গে প্রাধান্য পাবে বিগত সময়ে বিএনপি-জামায়াতের বিভিন্ন আন্দোলনের সময়কার সহিংসতার কথা, বিশেষ করে ২০১৩ সালে বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন ঠেকানোর আন্দোলন এবং ২০১৪ সালে সরকার উৎখাতের ৯২ দিনের টানা আন্দোলনের সময়কার সহিংসতা, অগ্নিসন্ত্রাসের কথাও তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট।
প্রচার কৌশল
বুধবার (১২ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি জেয়ারতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচনী প্রচারযুদ্ধ শুরু করবেন। বেশ কয়েকটি পথসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
ধারাবাহিকভাবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নির্বাচনী জনসভা ও পথসভা করবেন শেখ হাসিনা।
নির্বাচনী কাজে গণভবন ব্যবহার করবেন না শেখ হাসিনা। ধানমন্ডি ৫ নম্বরের বাড়ি ‘সুধাসদন’ থেকে তিনি নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবেন তিনি।
এখানে তিনি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি বৈঠকের পাশাপাশি বিভিন্ন অঞ্চলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে মতবিনিময় করবেন।
এর বাইরে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালাতে আট বিভাগে আটটি টিম করেছে আওয়ামী লীগ। তারা তৃণমূলের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রচার-প্রচারণা চালাবে।
নির্বাচনী প্রচারে কাজ করবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার উইং, সিআরআইসহ সহযোগী সংস্থাগুলো। বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের পক্ষে প্রচার প্রচারণায় নেমেছেন।
প্রচলিত মাধ্যমগুলোতে প্রচার প্রচারণার পাশাপাশি ইউটিউব, ফেসবুক, অনলাইন, সোশ্যাল মিডিয়াসহ নিউ মিডিয়াগুলোকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচলিত পদ্ধতিতে মানুষের কাছে তথ্য তুলে ধরার পাশাপাশি উঠান বৈঠক, ভিডিও প্রজেক্টরের মাধ্যমেও তথ্য-চিত্র দেখাবে নৌকার দল।
বাংলাদেশ সময়: ০০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৮
এসকে/এমইউএম/এসএইচ