তিনি বলেন, ‘৩০ ডিসেম্বর আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি যেনোতেনোভাবে নির্বাচিত হতে চাই না।
আওয়ামী লীগে যোগদানের একদিন পর শুক্রবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেট নগরের ধোপাদিঘীর পাড় মহাজোট প্রার্থী ড. একে আব্দুল মোমেনকে নিয়ে সাংবাদিক ও পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোটের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচিত করা সিলেটবাসীর দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। সেই আশা পূরণে আমরা তাকে সহায়তা করবো। সিলেট-১ আসনে ড. মোমেনকে জয়যুক্ত করার মানে হবে আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করা; বঙ্গবন্ধুর দর্শন, মুক্তিযুদ্ধ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নকে জয়যুক্ত করা।
ইনাম আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণী বিষয়ে সিলেটবাসীর যথেষ্ট ভূমিকা আছে। অথচ আমি যে দলে ছিলাম, সে দলে সিলেটের স্বীকৃতি কখনো দেখিনি। আমার কাছে এটা অবাক লেগেছে। খুবই খারাপ লেগেছে। এটা কেন করা হচ্ছে? এতে একটি বিশেষ হাত রয়েছে।
আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া তার জীবনের সঠিক সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে একটি মন্তব্য করে ইনাম আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যক্তিগত কোন লাভের আশায় নয়, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বুকে লালন করে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রার পক্ষে থাকতেই আমার আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া।
অনেক চিন্তা ভাবনার পর যখন বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার বিষয়টি জানালেন, তখন শেখ হাসিনা খুশি হয়ে গণভবনে ডেকে নিলেন। নির্বাচনী ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি আমাকে দেড় ঘণ্টার মতো সময় দিয়েছেন। সিলেটসহ সারাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন নিয়ে কথা বলেছেন।
ইনাম আহমদ বলেন, ‘বুধবার গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফুল দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদানের সময় প্রধানমন্ত্রীর ছোটবোন শেখ রেহানা জানতে চান, ‘একটু দেরি করে এলেন ইনাম ভাই’। জবাবে তিনি বলেন, দেরি কোথায়? দূরে থাকলেও ধ্রুব তারার মতো বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সংকেত দিয়েছি সব সময়’।
তিনি আরও বলেন, অনেকেই জানতে চান কেনো আমি আওয়ামী লীগে এলাম। আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি সেটা একটা বড় প্রশ্ন। বিএনপির মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন বিবেচনাবোধ মুখ্য হয়ে পড়েছিলো, সেটা আপনারা খুঁজে বের করুন। দেখবেন তাতে দেশপ্রেমের কোনো নিদর্শন ছিলো না।
ইনাম আহমেদ বলেন, কেবল মনোনয়ন না পেয়ে নয়, আমার বিবেচনাবোধের মৃত্যু আমি সহ্য করতে পারিনি। সেখানে আদর্শগত বিরোধও রয়েছে। এছাড়া মানবিক গুণাবলীর বিরাট অভাব রয়েছে বিএনপিতে। আমার এই মত পরিবর্তন বিশেষ চিন্তাপ্রসূত। আমার সিদ্ধান্ত যে ভুল হয়নি, তা ৩০ ডিসেম্বর নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে প্রমাণ করার আহ্বান জানান তিনি।
সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ড. এ কে মোমেন তার বক্তব্যে বলেন, আমি ওনাকে দেখে বলেছিলাম, ইনাম ভাই আপনি ভাল লোক, কিন্তু আপনার দল বিএনপি ভাল না। যে দল গুণীর সম্মান দিতে জানে না, তাদের ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসায় ধন্যবাদ জানান তিনি। মূলত তিনি বঙ্গবন্ধুকে মানেন, ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন করেন না, বাংলাদেশের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন চান। এ কারণে তাকে মনোনয়নবঞ্চিত করা হয়েছে। আর দলীয় প্রার্থী হওয়ার পর তিনি দোয়া নিতে অর্থমন্ত্রীর কাছে আসেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও মহানগর সভাপতি সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ।
পেশাজীবীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আজিজ আহমদ সেলিম, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল কুদ্দুছ, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ সিলেটের সাধারণ সম্পাদক ডা. এস এ আজিজ, কর আইনজীবী সমিতির সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১২৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২১, ২০১৮
এনইউ/জেডএস