নির্বাচনী প্রচরণার শেষ দিন বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পথসভায় কেশবপুর উপজেলার উন্নয়নের রূপকার হিসেবে খ্যাতি অর্জনকারী সাবেক শিক্ষামন্ত্রী এ এস এইচ কে সাদেক পত্নী বর্তমান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক এসব কথা বলেন।
ইসমাত আরা সাদেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, শেখ হাসিনা পুনরায় সরকার গঠন করতে পারলে এবং নিজে জয়ী হলে কেশবপুরকে আধুনিকায়নের মধ্য দিয়ে একটি মডেলউপজেলায় রূপান্তিত করা হবে।
সবমিলিয়ে শেখ হাসিনার পরিকল্পনা অনুযায়ী গ্রামকে শহরে রূপান্তরের সার্বিক কাজ করবেন তিনি। এছাড়াও ইতোমধ্যে কেশবপুরে সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্মাণ, ফায়ার সার্ভিস স্টেশন নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলেছে। আর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণ, উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স, ক্রীড়া সংস্থা, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন,শতভাগ বিদ্যুৎ সরবরাহ, গ্রামের রাস্তায় সৌর বিদ্যুতের লাইট পোস্ট বসিয়ে আলোকিত করা, ভিক্ষুকদের পুনর্বাসনের কাজ চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসন থেকে প্রয়াত সাদেক পত্নী ইসমাত আরা সাদেক এমপি নির্বাচিত হয়ে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গত পাঁচ বছরে তিনি প্রায় ৬৫ কোটি টাকা ব্যায়ে ৭৪ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ, গ্রামীণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন, শতভাগ বিদ্যুৎ সংযোগ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অসংখ্য বহুতল ভবন নির্মাণ, অসংখ্য সেতু-কালভার্ট নির্মাণ, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, প্রায় ৩০ কোটি টাকার টিআর, কাবিখা, অতি দরিদ্রদের কাজের কর্মসূচি প্রকল্প ও শিক্ষার্থীদের বৃত্তি, সাঁগরদাড়ি মধুপল্লীতে মহাকবির বিদায় ঘাটে পর্যটকদের বসার স্থান ও সৌন্দর্যমন্ডিত করা হয়েছে, অসংখ্য মসজিদ-মন্দিও নির্মাণ হয়েছে, কপোতাক্ষ ও হরিহর নদী খননের মাধ্যমে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটিয়েছেন। সবমিলিয়ে সাদেক পরিবারের মাধ্যমেই উন্নয়নের রোল মডেল হতে চলেছে গোটা কেশবপুর উপজেলা।
সরেজমিনে নির্বাচনী এলাকা ঘুরে জানা যায়, নব্বইয়ের দশকে মৌলবাদী এলাকা হিসেবে পরিচিত কেশবপুর উপজেলা প্রতিবছরই বন্যার পানিতে প্লাবিত হতো, উপজেলায় যাতায়াতের ব্যবস্থা বলতে একটাই ছিলো পাঁকা রাস্তা, এলাকার ৯৫ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো না, উপজেলা শহর থেকে কোনো গ্রামে যেতে হলে হাটু কাঁদা মাড়িয়ে যেতে হতো। তবে ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এ এস এইচ কে সাদেক। ১৯৯৬ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ শাসনামলে এ এস এইচ কে সাদেক উপজেলার ১৪৪ টি গ্রামের প্রতিটিতেই উন্নয়ন করেন। এমনকি, শতাধিক বিদ্যালয় ভবন, অসংখ্য গ্রামীণ মাটির রাস্তা পাঁকাকরণ, কালভার্ট-ব্রিজ, নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ, অডিটোরিয়াম ভবন, নদী খনন, অসংখ্য মেধাবী ছেলে-মেয়েদের চাকরি, বেকারদের কর্মসংস্থান করে তিনি কয়েক বছরের ব্যবধানে দলমত নির্বিশেষে আপামর জনগণের দৃষ্টিতে কেশবপুরের উন্নয়নের রূপকার হিসেবে আখ্যায়িত হন।
সে সময় উপজেলা আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর মাঝেও গতি সঞ্চার ঘটেছিলো। পরবর্তীতে ২০০১ সালের অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যশোরের
৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে শুধুমাত্র যশোর-৬ (কেশবপুর) আসন থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে এ এস এইচ কে সাদেক নির্বাচিত হন। এরপর সেনা সমর্থীত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরী অবস্থা চলাকালে ২০০৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর এএসএইচকে সাদেক মৃত্যুবরণ করেন। সাদেক দম্পত্তির একমাত্র ছেলে তানভীর সাদেক কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার, তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ আমেরিকায় থাকেন। মেয়ে নওরীন সাদেক আর্কিটেক্ট ইঞ্জিনিয়ার, তিনিও স্বামী সন্তান নিয়ে আমেরিকায় বসবাস করেন।
কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বাংলানিউজকে বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বিজয়ী করতে আমরা ঐক্যবদ্ধ, ফলে সুষ্ঠ-সুন্দর ভোট গ্রহণের মাধ্যমেই ইসমাত আরা সাদেক বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে। বহু আগেই এই উপজেলার মানুষ সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত বিএনপি-জামায়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছে, এখন তারা অকারণেই গুজব-মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। ইসমাত আরার বিজয়ের মধ্য দিয়ে জনগণ আধুনিক মডেল উপজেলা হিসেবে কেশবপুরকে উপহার পাবে, এ ব্যাপারে সকলেই একমত।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩০ ঘণ্টা, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৮
এমএমএস