তিনি বলেছেন, নির্বাচনে নিশ্চিত পরাজয় জেনে বিএনপি-জামায়াত সংঘাত, সংঘর্ষ ও সহিংসতায় লিপ্ত হয়েছে। বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তারেক রহমানের ভিডিও বার্তায় নাশকতার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে জাহাঙ্গীর কবির নানক এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা শেষ হয়েছে। এই প্রচার-প্রচারণায় সর্বস্তরের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে অংশ নিয়েছে। নৌকার পক্ষে গণজোয়ার তৈরি হয়েছে। এই গণজোয়ার সৃষ্টি হওয়ায় নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে সহিংসতা ও নাশকতায় লিপ্ত হয়েছে বিএনপি-জামায়াত। আওয়ামী লীগের কর্মীদের ওপর ও নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা করছে তারা। আজ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগের ছয় কর্মীকে হত্যা করেছে এবং তাদের হামলায় ৪৪৫ জন আহত হয়েছে। ৮৮টি যানবাহনে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছে তারা। ১৭৮টি আওয়ামী লীগ অফিস ও নির্বাচনী কেন্দ্র ভাঙচুর করা হয়েছে। ৫৮টি বোমা হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে ৫৪টি জেলার ১৭০টি আসনে বিএনপি-জামায়াত এ ধরনের সহিংসতা ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে।
‘তাদের সন্ত্রাসী বাহিনীর হামলায় গতকাল (বৃহস্পতিবার, ২৭ ডিসেম্বর) সিলেটে কাওসার আহমেদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। চারজনকে আহত করা হয়েছে। আটটি আওয়ামী লীগ অফিসে ও গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। চারটি স্থানে বোমা হামলা করা হয়েছে। গতকাল দিনাজপুরে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা দিনাজপুর এম আবদুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহবুবুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে। তার হাতের দু’টো আঙুল কেটে ফেলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতায় আজ আহত ডাক্তার মাহবুবুল ইসলামকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ’
নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনকে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান আওয়ামী লীগের এ নেতা।
এক প্রশ্নের উত্তরে নানক বলেন, বিএনপি-জামায়াত শুধু ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টাই করছে না, তারা আওয়ামী লীগের ব্যাজ পরে, নৌকার ব্যাজ পরে, আওয়ামী লীগ ও নৌকার ছবি সম্বলিত শীতকালীন মাফলার ও টি-শার্ট পরে বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আওয়ামী লীগের ওপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। আশা করি নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
বিএনপি-জামায়াতের মদদপুষ্ট বিভিন্ন সংস্থাকে নির্বাচনে পর্যবেক্ষক করে দলীয় ক্যাডার নামানোর প্রস্তুতি চলছে অভিযোগ করে নানক বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সাড়ে ৬ হাজার ক্যাডারকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নামিয়ে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা হতে পারে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খানের সংস্থা ‘খান ফাউন্ডেশন’, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা শফিক রেহমানের স্ত্রী তালেয়া রেহমানের ‘ডেমোক্রেসি ওয়াচ’, তারেক রহমানের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত বগুড়াভিত্তিক ‘লাইটহাউস’, বিতর্কিত আইনজীবী আদিলুর রহমান খানের ‘অধিকার’ এবং বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্টের কোটি টাকা খরচে বিদেশি লবিস্ট ফার্ম অ্যানফ্রেল নামের একটি সংস্থাকে পর্যবেক্ষণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরা পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করলে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার অপকৌশল চালাবে। বিএনপি-জামায়াত-ঐক্যফ্রন্ট অন্ধকারের শক্তি। এরা ক্ষমতায় এলে দেশ আইয়ামে জাহিলিয়াতে নিপতিত হবে। তাই দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই, আসুন দেশবিরোধী সব ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে নানক বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে এসব বিষয়ে জানিয়েছি। নির্বাচন কমিশন কথা দিয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এগুলো আমাদের প্রতিরোধ বা প্রতিহত করার বিষয় না, আমরা সবাইকে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে বলছি।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৮, ২০১৮
এসকে/এইচএ/