তাদের মতে, উপজেলা নির্বাচন স্থানীয় সরকার নির্বাচন। যেহেতু এবারের উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
গত ১০ মার্চ থেকে শুরু হওয়া ৪৮৫ উপজেলায় ৫ ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০ মার্চ প্রথম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আগামী ১৮ মার্চ দ্বিতীয়, ২৪ মার্চ তৃতীয়, ৩১ মার্চ চতুর্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোটের বাইরে প্রতিপক্ষ বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দলই উপজেলা নির্বাচন বর্জন করেছে। জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মহাজোটগতভাবে অংশ নিলেও উপজেলায় নির্বাচনে দলগতভাবেই অংশ নিচ্ছে জোটের শরিক দলগুলো। এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ছাড়া মহাজোটের শরিক দলগুলোর মধ্যেও তেমন কোনো আগ্রহ নেই। অধিকাংশ উপজেলায়ই শরিক দলগুলোও প্রার্থী দিতে পারেনি। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি, ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ অল্প কিছু উপজেলায় প্রার্থী দিতে পারলেও জোটের অধিকাংশ দলই কোনো উপজেলায় প্রার্থী দেয়নি।
জাতীয় পার্টি মহাজোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম দল। নির্বাচনে অংশ নিলেও দলটির তেমন কোনো তৎপরতা নেই। যার ফলে উপজেলা নির্বাচন এক ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বীহীন, নিরুত্তাপ নির্বাচনে পরিণত হয়ে পড়েছে। ৫ ধাপের এই নির্বাচনের প্রথম ধাপ ইতোমধ্যে অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তিন ধাপের প্রার্থী বাছাই চূড়ান্ত হওয়ার পর দেখা গেছে ৪ ধাপের মোট ১১০টি উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। আর যেসব উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে তার অধিকাংশই আওয়ামী লীগেরই বিদ্রোহী প্রার্থী বা স্বতন্ত্র প্রার্থী। আগামী জুনে পঞ্চম ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
দলীয় প্রতীকে স্থানীয় সরকার নির্বাচন পদ্ধতি চালুর পর এবারই প্রথমবারের মতো উপজেলা নির্বাচন দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ বা অনেক উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় এবারের উপজেলা নির্বাচনে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে নির্বাচনী প্রভাব তেমন একটা পড়েনি। এর ফলে নির্বাচনের প্রতি মানুষের অনাগ্রহ তৈরি বা নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে বিষয়টিকে সেভাবে দেখছেন না আওয়ামী লীগের নেতারা।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিচ্ছে না, জাতীয় পার্টিও নির্বাচনে তেমন একটা নেই; যার ফলে কিছু কিছু জায়গায় বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী নির্বাচিত হচ্ছে। ভোটার উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হচ্ছে। এখন সব দল যদি নির্বাচনে অংশ না নেয় তাহলে কোথাও কোথাও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হতে পারে, কিছু তো করার নেই। এতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে মনে করি না। আমরা তো চেয়েছি সব দল নির্বাচনে অংশ নিক। কিন্তু তারা অংশ নেয়নি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচনে আসেনি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনও দলীয় প্রতীকে হওয়ার কারণে সব রাজনৈতিক দল অংশ নিলে প্রার্থী ও ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ বাড়তো। সব দল অংশ না নেওয়ায় শক্ত প্রতিযোগিতা নেই। শক্ত প্রতিযোগিতা থাকলে প্রার্থীরাই ভোটার টানার চেষ্টা করেন। শক্ত প্রতিযোগিতা না থাকায় প্রার্থীদের মধ্যে এই তৎপরতা ঢিলেঢালা। এর ফলে ভোটার উপস্থিতির হার কিছুটা কম। তারপরও ৫৫ ভাগ ভোটার উপস্থিতি কম না। নির্বাচনের প্রতি মানুষের আগ্রহ নেই সেটা বলা যাবে না, আগ্রহ আছে। তবে সব দল অংশ নিলে আগ্রটা আরো বাড়তো।
বাংলাদেশ সময়: ০৯০৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৫, ২০১৯
এসকে/এমজেএফ