ঢাকা, বুধবার, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ০৩ জুলাই ২০২৪, ২৫ জিলহজ ১৪৪৫

আওয়ামী লীগ

আ’লীগের সম্মেলন-বিদ্রোহীদের শোকজ নিয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩১, ২০১৯
আ’লীগের সম্মেলন-বিদ্রোহীদের শোকজ নিয়ে শিগগির সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের লোগো

ঢাকা: উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেওয়া আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের শোকজ এবং নির্ধারিত সময়ে দলের জাতীয় সম্মেলনের বিষয়ে কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সিদ্ধান্ত হবে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

উপজেলা নির্বাচনে দলটির বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত রয়েছে। জুলাইয়ে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ঘোষণা দেওয়া হলেও বন্যা এবং পরে শোকের মাস আগস্ট শুরু হওয়ায় এই কার্যক্রম ঝুলে আছে।

আবার দলের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্ধারিত সময়ে জাতীয় সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত রয়েছে। এমনকি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্মেলন করতে হলে অল্প সময়ের মধ্যে প্রস্তুতি নিতে হবে।

গত ৫ এপ্রিল আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে প্রতি তিন বছর পর পর জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে অনুযায়ী চলতি বছরের ২৩ অক্টোবর বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হবে।

জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে প্রস্তুতির জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের আটটি সাংগঠনিক টিম গঠন করে দেওয়া হয়েছে। টিমগুলোকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সম্মেলন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। টিমগুলো কাজও শুরু করেছিল। কিন্তু পরে বন্যা এবং আগস্ট মাসে শোকের কর্মসূচির কারণে এই কাজ বর্তমানে স্থগিত।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত এখনও ঠিক আছে। সেপ্টেম্বর থেকে প্রস্তুতি কাজ পুনরায় শুরু করা হবে। তবে প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনে কিছুদিন পিছিয়ে নভেম্বরেও সম্মেলন করা যেতে পারে। এ বিষয়ে কার্যনির্বাহী কমিটিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শোকের মাস শেষ হচ্ছে। সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এই সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ওই নেতারা জানান।

চলতি বছরে অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনে দলের প্রার্থীর বিরোধিতা করে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন যারা এবং এই বিদ্রোহী প্রার্থীদের যারা সমর্থন দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী ছিলেন, তাদের মধ্যে ১২৬ জন উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়া দলের স্থানীয় গুরুত্বপূর্ণ নেতা এবং দলীয় এমপিরা এই বিদ্রোহী প্রার্থীদের সমর্থন দিয়েছিলেন। এদের সংখ্যা ৭০ জনের উপরে। সবমিলে দুই শতাধিকের বিরুদ্ধে দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গের অভিযোগ রয়েছে। গত ২৮ জুলাই থেকে তাদের শোকজ করার কথা বলে আসছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কিন্তু অভিযোগ আরও ভালোভাবে যাচাই-বাছাই এবং শোকের মাস শুরু হওয়ার কারণে তখন বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়।

আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এও জানা যায়, প্রথমে এদের কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং পরে অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কবে থেকে এদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সে বিষয়ে কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী সভায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আছে যথা সময়েই সম্মেলন। তবে কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সময়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দলের বিদ্রোহীদের সব তথ্য-উপাত্ত ইতোমধ্যেই সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের শোকজের বিষয়েও এই সভায় সিদ্ধান্ত হবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বাংলানিউজকে বলেন, জাতীয় সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ এবং বিদ্রোহীদের শোকজ- এসব বিষয়ে দলের কার্যনির্বাহী সংসদের আগামী সভায় সিদ্ধান্ত হবে। সভার তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। তবে শোকের মাস শেষে শিগগির এই সভা আহ্বান করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৬ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৯
এসকে/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।