আগামী ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন হবে।
এরই অংশ হিসেবে ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন হবে। সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোর সম্মেলনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনকে সামনে রেখে দলের কেন্দ্র থেকে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে বিতর্কিত, দুনীতি এবং অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত কেউ যাতে নতুন কমিটিতে আসতে না পারেন সে বিষয়ে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায় থেকে বারবার বলা হচ্ছে, বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির নেতাদের কমিটির দায়িত্বে আনা হবে। আর শুধু ঘোষণাই নয়, এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের একাধিক নেতা জানান, দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীকে অব্যাহতিসহ সংগঠনের কয়েকজন নেতাকে যুবলীগের আগামী সম্মেলনের প্রস্তুতি প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখা হয়েছে।
সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আরেক সহযোগী সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মোল্লা মোহাম্মদ আবু কাওসার ও সাধারণ সম্পদক পংকজ দেবনাথকেও।
নানা অভিযোগ থাকলেও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক এখনও স্বপদে রয়েছেন। তবে আগামী সম্মেলনে তাদের পুনরায় দায়িত্বে থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই জানিয়েছে একাধিক সূত্র।
বুধবার (০৬ নভেম্বর) কৃষক লীগের সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলনে বাদ পড়েছেন সংগঠনটির বিদায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক রেজা। তাদের জায়গায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সমীর চন্দ্র চন্দ ও উম্মে কুলসুম স্মৃতিকে।
ঢাকা মহানগেরও কৃষক লীগের মতোই অবস্থা হবে বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামী লীগ নেতা।
দলীয় সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বে থাকা কোনো নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও টাকার বিনিময়ে পদ বিক্রিসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। আগামীতে তারা আর মহানগরের কমিটিতে থাকতে পারবেন না। তাছাড়া দায়িত্ব পাওয়ার পর গত তিন বছরের সাংগঠনিক কার্যক্রমেও ব্যর্থতার অভিযোগ ও বিতর্ক রয়েছে।
বিশেষ করে থানা ওয়ার্ডের পর্যায়ে কমিটি গঠন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ আছে। সেখানে অর্থ লেনদেনের বিষয়টির সঙ্গেও অনেকের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে এসেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র বলছে, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদের বাদ পড়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কার্যক্রমে ব্যর্থতাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।
দক্ষিণের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত বার্ধক্যজনিত কারণে পুনরায় এই পদে আসার সম্ভাবনা নেই। উত্তরে সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানেরও এ পদে পুনরায় আসার সম্ভাবনা কম।
সূত্র জানায়, এই গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো ছাড়াও ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের বর্তমান কমিটির অনেক নেতাই বাদ পড়ার তালিকায় রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিতর্কিতদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া বা কমিটিতে না আনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। তাদের জায়গায় পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির ও তরুণ নেতাদের দায়িত্বে আনা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, কে থাকবে কে বাদ যাবে সেটা বলতে পারবো না। তবে পরিবর্তন তো আসবেই এটা বলতে পারি। পুরোনো লোক সরলে নতুন লোক আসবে। স্বচ্ছ ভাবমূর্তির, যোগ্য ও বিতর্কের ঊর্ধ্বে থেকে যারা নেতৃত্ব দিতে পারবে তাদেরই দায়িত্ব দেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৭, ২০১৯
এসকে/এমএ