সম্মেলনস্থলসহ সিলেটের আনাচে-কানাচে বিশালাকারের ব্যানার-ফেস্টুন-পোস্টারে ছেয়ে গেছে সিলেট নগরী। নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক থেকে অলিগলি সবখানেই ব্যানার-ফেস্টুনে ঢেকে গেছে।
হাসপাতালের ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামন, সিসিকের ইজারা করা বিলবোর্ড ঢেকে দেওয়া হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুনে। এমনকি বিদ্যুতের তারজুড়ে দেওয়া হয়েছে ফেস্টুন।
হাজার, হাজার ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টারে শোভা পাচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সজিব ওয়াজেদ জয়, ওয়াবদুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের ছবি।
নগরীর রিকাবীবাজার, চৌহাট্টা পয়েন্টের চার পাশে বিশালাকারের বিল বোর্ড আর ফেস্টুনে হারিয়ে গেছে আশপাশের প্রকৃতিও। আর এসব বিশালাকারের ব্যানার-ফেস্টুন-পোস্টারে নেতাদের অন্তত কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন প্রেস মালিকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রেস মালিকদের কয়েকজন বাংলানিউজকে জানান, ডিজিটাল ব্যানার ১৪ থেকে ১৭ টাকা ফুট হিসেবে রাখা হয়। সে অনুপাতে কেউ যদি ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার বেশি তৈরি করেন তখন ফুট প্রতি মূল্য সর্বনিম্ন ১৪ টাকা পর্যন্ত রাখা যায়। সে অনুপাতে লাখ লাখ ফুট ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার তৈরি করা হয়েছে। বিভিন্ন সাইজের বিলবোর্ড করা হয়েছে। আর ছোট আকৃতির ফেস্টুনই করা হয়েছে কয়েক লাখ।
নেতাদের অনেকের পোস্টারে ছবিতে গ্রুপিংয়ের বিষয়টিও দৃশ্যমান হয়ে ওঠেছে। কেউ কেবল দলীয় প্রধান ও বঙ্গবন্ধুর ছবি দিয়ে, অনেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের ছবিজুড়ে দিয়ে ব্যানার, ফেস্টুন ও পোস্টার তৈরি করেছেন।
সিলেট আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনকে কেন্দ্র করে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। নগরীর বিভিন্ন মোড়, অলিগলি এমনকি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও চলছে প্রচারণা। নিজের পক্ষ থেকে তো সালাম-আদাব আছেই, কর্মীদের পক্ষ থেকেও আছে বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন আর কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে প্রত্যাশিত পদে দেখতে চাওয়ার বার্তা। সব মিলিয়ে সিলেট আওয়ামী লীগে এখন উৎসবের আমেজ বইছে।
সরেজমিনে নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্ট, রিকাবিবাজার পয়েন্ট, আম্বরখানা পয়েন্ট, সিটি পয়েন্ট, টিলাগড় পয়েন্ট, জিতু মিয়ার পয়েন্ট, সুরমা মার্কেট পয়েন্ট, জিন্দাবাজার পয়েন্টসহ নগরীর অধিকাংশ জায়গায় দেখা গেছে ব্যানার, পোস্টার আর ফেস্টুনের ছড়াছড়ি।
কোনো জাতীয় বা সিটি নির্বাচনের মতো প্রার্থীদের সমর্থকদের পক্ষ থেকে যেমন আছে ব্যানার-ফেস্টুন, তেমনই প্রার্থীদের পক্ষ থেকেও কম নয়। সব মিলিয়ে জনপ্রতিনিধি বাছাইয়ের নির্বাচন না হলেও রাজনৈতিক প্রতিনিধি বাছাইয়ের এ নির্বাচন নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
অতীতের সম্মেলনগুলোতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সক্রিয়তা খুব বেশি না থাকলেও এবার ফেসবুকেও চলছে সরব প্রচারণা। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মধ্যেও নতুন নেতৃত্ব নিয়ে আছে এক ধরণের কৌতুহল।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক তপন মিত্র বাংলানিউজকে বলেন, সম্মেলনে তিনি নিজেও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তবে তার ব্যানার দেখা না পাওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, আমার টাকা নেই, তাই ব্যানার, ফেস্টুনও ছাপাতে পারিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯
এনইউ/ওএইচ/