মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে শুরু করে প্রায় সব আয়োজনই নগরের সোহেল চত্বরস্থ দলীয় কার্যালয় ঘিরে করা হতো। কিন্তু এবারের আয়োজন হচ্ছে ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।
আওয়ামী লীগের সম্মেলন ঘিরে এরই মধ্যে ব্যানার-ফেস্টুনে ছেঁয়ে গেছে গোটা বরিশাল নগর। দলীয় নেতাকর্মীরা এসব ব্যানার-ফেস্টুন টানানোর পাশাপাশি সড়কের বিভিন্ন স্থানে বানিয়েছেন সুবিশাল তোরণ। শুধু তাই নয়, বরিশাল বিমানবন্দর থেকে নগরের সার্কিট হাউস পর্যন্ত সড়কের দুইপ্রান্ত জুড়েও অসংখ্য ব্যানার-ফেস্টুন-তোরণ বসানো হয়েছে, সেখানে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন সংগঠন ও দলীয় নেতাকর্মীদের নাম আর ছবি। এগুলো নির্মাণের কাজে গত কয়েকটি দিন-রাত নেতাকর্মীরা বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গেই রাজপথে রয়েছেন। সম্মেলনের পুরো আয়োজন মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ দেখভাল করছেন বলে জানা গেছে।
নেতাকর্মীরা জানান, বিগত সময়ের চেয়ে সম্মেলন ঘিরে এবার যেন একটু বাড়তি উন্মাদনাই লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাছাড়া নতুন কমিটিতে যারা স্থান পেতে পারেন তাদের মধ্যে ‘উড়ে এসে জুড়ে বসা’ কিংবা হঠাৎ নেতাদের সম্ভাবনা কম। কমিটির শীর্ষ পদ পেতে মাঠে রয়েছেন বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা। সে কারণে সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের মধ্যেও আগ্রহের শেষ নেই। তবে সবচেয়ে বড় কৌতুহল, কে বসতে যাচ্ছেন সভাপতি-সম্পাদকের শীর্ষ দুই পদে।
সভাপতি পদে প্রকাশ্যে কেউ প্রার্থিতা দাবি না করলেও এ পদে আলোচনায় রয়েছেন শীর্ষ পাঁচ নেতা। এর মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছেন পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও সদর আসনের সংসদ সদস্য কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ (হিরনপত্নী), বর্তমান কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম, সভাপতি গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর। আর সাধারণ সম্পাদক পদে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নাম এখন পর্যন্ত বেশ জোরেশোরে শোনা যাচ্ছে।
তবে সেরনিয়াবাত পরিবারের সন্তান খোকন সেরনিয়াবাতসহ নগর আওয়ামী লীগের সাবেক এক নেতার নাম শোনা গেলেও তারা কমিটির কোন পদে আসতে পারেন তা এখনো নিশ্চিত নয়।
জানা গেছে, ২৫ হাজারেরও বেশি কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও নেতাকর্মীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবারের সম্মেলন। রোববার (৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলন দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম অংশে বর্ষীয়ান নেতা আমির হোসেন আমু উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। প্রধানবক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখবেন পার্বত্য শান্তি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী) ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ। দ্বিতীয় অংশে হবে কাউন্সিল। যদি ভোটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচন হয় তাহলে ৩৭১ জন ভোটার ভোট দেবেন। তবে ‘সিলেকশন নাকি ইলেকশন’ হবে তা এখনো চূড়ান্তভাবে জানা যায়নি।
মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট গোলাম আব্বাস চৌধুরী দুলাল বাংলানিউজকে বলেন, কাউন্সিলের সব আয়োজন শেষের পথে। ওয়ার্ড কমিটির সম্মেলনের মতো মহানগর সম্মেলনও উৎসবমুখর পরিবেশে হবে। আর নতুন কমিটিতে যারাই আসবে তারা আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী, বাইরে থেকে কারও আসার সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সবশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১২ সালের ২৭ ডিসেম্বর। এর চার বছর পর ২০১৬ সালের ২০ ডিসেম্বর ৭১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৯
এমএস/একে