রোববার (০৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
মোহাম্মদ নাসিম বলেন, দেশকে নিয়ে আবারও নতুন করে চক্রান্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি তথ্য-উপাত্তসহ বলতে পারি বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল চক্রান্তকারী ছিলেন ‘জিয়াউর রহমান’। তাই কমিশন গঠন করে তার মরণোত্তর বিচার করতে হবে।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার রায়, কারাগারে বন্দি থাকা এবং তার মুক্তির প্রসঙ্গে নাসিম বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছিল ১/১১'র সময়। দুর্নীতি মামলাতেই তার সাজা হয়েছে। এখন জামিন দেওয়া না দেওয়ার বিষয়টি আদালতের হাতেই ন্যস্ত। এখানে সরকারের কোনো হাত নেই। আদালতের মাধ্যমেই খালেদা জিয়ার সাজা হয়েছে। তাই আদালতের মাধ্যমেই তাকে মুক্ত হতে হবে।
পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে সকালে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা।
পরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উদ্বোধন ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য নাসিম।
রাজশাহী বিভাগীয় মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্সে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক এ সম্মেলন চলে দুপুর পর্যন্ত। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন। বিকেলে রাজশাহী শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন (কাউন্সিল) শুরু হয়।
অধিবেশনে রাজশাহী জেলা কমিটির নতুন সভাপতি হিসেবে রাজশাহী-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) মেরাজ উদ্দিন মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক পদে রাজশাহী-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওয়াদুদ দারার নাম ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে আরও দু’টি নাম ঘোষণা করা হয়। তারা হলেন- অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাবু ও রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আয়েন উদ্দিন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সদ্য বিলুপ্ত রাজশাহী জেলা কমিটির সভাপতি রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক। সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা মেরিনা জাহান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগ সম্পাদকমণ্ডলীর উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আব্দুল খালেক, প্রফেসর ড. সাইদুর রহমান খান।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন ও রাজশাহীর সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য আনজুম আদিবা মিতা।
এর আগে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিল ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রোববার রাজশাহীর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
টানটান উত্তেজনা থাকায় গত সম্মেলনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেই চলে যান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। এবার তৃণমূলের নেতারা সরাসরি ভোটে কাউন্সিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু ভোট না দিয়েই শেষ পর্যন্ত এবারও ঘোষণা করা হলো জেলা কমিটি। এবারের সম্মেলনে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ৩৬০ জন কাউন্সিলর নির্ধারণ করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ সময়: ২০১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০১৯
এসএস/আরআইএস/