আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের মধ্যে যারা গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি এবং মন্ত্রিসভায় ঠাঁই হয়নি, তাদের সমর্থকদের মুখে ঘুরে ফিরে এই আলোচনা শোনা যাচ্ছে।
গত নির্বাচনে মনোনয়নবঞ্চিত অনেক নেতা আশা করেছিলেন, তারা টেকনোক্র্যাট কোটায় মন্ত্রিসভায় স্থান পাবেন।
মনোনয়নবঞ্চিত এমন এক নেতাকে বলতে শোনা গেছে, এবার কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে যাবে ’নন এমপি, নন মিনিস্টার (মন্ত্রী)। ’ ওই নেতা সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের একজন।
আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা এক মন্ত্রীকে হাসতে হাসতে বলেছেন, মন্ত্রী থাকবেন, না দলের পদে থাকবেন? সঙ্গে সঙ্গে ওই নেতা মন্ত্রী থাকার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।
আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন অনুষ্ঠিত হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই কাউন্সিল অধিবেশনেই পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচিত হবেন। তবে সাধারণত দেখা যায়, আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের পর কাউন্সিলররা পুরো নির্বাচনের দায়িত্ব দেন দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। এবারও এর ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, মন্ত্রিসভায় থাকা নেতাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখতে চান না আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এতে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। আগের সম্মেলনগুলোতেও এটা হয়েছে। ধারাবাহিকতা অনুসরণ করা হলে বর্তমানে মন্ত্রিসভায় আছেন এমন অনেকেই দলের নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে বাদ পড়বেন। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তের ওপর। তিনি এ বিষয়ে সরাসরি কিছু না বললেও ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সংগঠনকে শক্তিশালী করতে যুক্তফ্রন্টের মন্ত্রিসভা ছেড়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিয়েছিলেন, এ বিষয়টিও তিনি প্রায়ই উল্লেখ করেন।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের ৮৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা ১২ জন মন্ত্রিসভায় আছেন। দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সভাপতিমণ্ডলী থেকে বর্তমান ৪৮ সদস্যের মন্ত্রিসভায় আছেন মাত্র দুই জন। তারা হলেন- কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের (সাধারণ সম্পাদক-পদাধিকার বলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য)।
সম্পাদকমণ্ডলী থেকে মন্ত্রিসভায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, একেএম এনামুল হক শামীম, ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, অর্থ সম্পাদক টিপু মুনশি, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছা ইন্দ্রির, কাযনির্বাহী সদস্য নুরুল মজিদ হুমায়ুন ও মন্নুজান সুফিয়ান।
এর আগের মেয়াদে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে থাকা মন্ত্রীর সংখ্যা ছিলো ১৯ জন। দলীয় পদে থেকে ২০১৪ থেকে ২০১৮ মেয়াদের মন্ত্রিসভায় ছিলেন কিন্তু বর্তমান মন্ত্রিসভায় অনেকেই আসতে পারেননি। এরা হলেন- উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আবুল মাল আব্দুল মুহিত, আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, কাযনির্বাহী সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মির্জা আজম।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৬, ২০১৯
এসকে/এজে