উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়েই ভোটারা আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিজয়ী করেছে বলেও তারা মনে করেন।
শনিবার (০১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীরা দ্বিগুণ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা জানান, গত ১১ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার ঢাকাসহ সারা দেশে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। ঢাকার উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে সরকার। এই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করতেই ঢাকার দুই সিটির মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বেছে নিয়েছেন। পাশাপাশি যোগ্য প্রার্থীর বিষয়টিও নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। এটাও আওয়ামী লীগৈর প্রার্থীদের জন্য ইতিবাচক হয়েছে। সিটি করপোরেশন স্থানীয় সরকারের একটি অংশ। স্থানীয় সরকারের বিরোধী দলের প্রার্থীরা নির্বাচিত হলে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গতি হারায়। এ বিষয়টিও ঢাকা সিটির ভোটাররা বিবেচনায় নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগেনর ওই নেতারা আরও জানান, দল হিসেবে বিএনপির অতীত কর্মকাণ্ড এই নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এটা স্থানীয় নির্বাবচন হলেও অতীতে বিএনপির আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে জ্বলাও-পোড়াও, নাশকতা, পেট্রোল বোমার যে ঘটনা সেটাও নির্বাচনে প্রভাব ফেলেছে। এই নির্বাচনেও বিএনপি ভোটারদের কাছে যায়নি। ভোটাদেরকে কাছে টানার চেষ্টা না করে নির্বাচনকে বিতর্কিত করা, সরকারকে দোষারোপ আর অভিযোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিলো তাদের কর্মকাণ্ড। নির্বাচনী প্রচারে মাঠে না নেমে বিএনপির নেতারা ঘরে বসে বক্তৃতা, বিবৃতি আর অভিযোগের মধ্যেই ব্যস্ত ছিলো যেটা ভোটারা ভালোভাবে নেয়নি। নির্বাচনের দিন বিএনপি মাঠে থাকেনি, কেন্দ্রে, বুথে যায়নি। এতে বিএনপির সমর্থক ভোটারাও হতাশ হয়েছে। এই সার্বিক বিষয়গুলোও আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হতে সহায়তা করেছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, বিগত বছরগুলোতে সরকারের যে উন্নয়ন তার ওপরই মানুষ আস্থা রেখেছে। এই উন্নয়নকে আরও এগিয়ে নিতেই মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ওপর আস্থা রেখেছে। শুধু মেয়রের ক্ষেত্রেই নয়, কাউন্সিলরদেও ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়েছে। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে বিএনপির যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে তারা কখনও জনগণের পাশে ছিলো না। উত্তর সিটি করপোরেশনে বিএনপি প্রার্থী তাবিথ আউয়াল গতবারও নির্বাচন করেছেন। কিন্তু গত ৫ বছর তাকে মানুষের পাশে দেখা যায়নি। দক্ষিণের প্রার্থী ইশরাক হোসেনের ক্ষেত্রে একই ঘটনা। বিএনপির প্রার্থীর অপরিপক্কতাও আওয়ামী লীগৈর প্রার্থীর বিপুল ভোটে বিজয়ে ভূমিকা রেখেছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বাংলানিউজকে বলেন, জনগণের আস্থা, বিশ্বাস যেখানে রয়েছে সেখানেই ভোট দিয়েছে। বিগত সময়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের যে উন্নয়ন তার ওপর আস্থা রেখেই মানুষ আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিপুল ভোটে বিজয়ী করেছে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিরোধী দলের প্রার্থী নির্বাচিত হলে তার কিছু করার থাকে না। কারণ তারা যে প্রতিশ্রুতি দেয় সেটা বাস্তবায়নে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। এ বিষয়গুলোও ভোটারদের মধ্যে কাজ করেছে। দল হিসেবে বিএনপির অতীত কর্মকাণ্ড, নির্বাচনের সময় মাঠে জনগণের কাছে না গিয়ে তাদের নেতারা ঘরে বসে বক্তৃতা বিবৃতি নিয়েই ব্যস্ত ছিলো- এ বিষয়গুলো জনগণ ভালোভাবে নেয়নি। এই সার্বিক কারণেই বিপুল ভোটে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০২০
এসকে/এজে